• শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১  |   ২৭ °সে
  • বেটা ভার্সন
sonargao

ভারতকে স্বৈরতন্ত্রের পথে নেওয়া হচ্ছে, মোদীকে রাহুলের কটাক্ষ

  আন্তর্জাতিক ডেস্ক

০৫ অক্টোবর ২০১৯, ০৮:৫১
মোদী ও রাহুল
ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ও কংগ্রেসের সাবেক সভাপতি রাহুল গান্ধী। (ছবিসূত্র : দ্য ইকোনমিক টাইমস)

ভারতীয় সংবিধান সংশোধনের মাধ্যমে ভূস্বর্গ খ্যাত জম্মু ও কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদা বাতিল করায় অঞ্চলটিতে ইতোমধ্যে এক থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছে। যা নিয়ে গোটা দেশে সৃষ্ট উত্তেজনাকর পরিস্থিতির মধ্যে এবার স্বৈরতন্ত্রের দিকে এগোচ্ছে ভারত বলে মন্তব্য করেছেন দেশটির প্রধান বিরোধী দল কংগ্রেসের সাবেক সভাপতি রাহুল গান্ধী।

তিনি বলেছেন, ‘প্রত্যেকেই জানেন বর্তমানে কাশ্মীরের পর গোটা দেশে ঠিক কী ঘটছে। এটা কারও কাছে গোপন নয়, সকল ভারতীয়ই আজ এটা জানে। পুরো দুনিয়া জানে, আমরা এখন স্বৈরতন্ত্রের দিকে এগিয়ে চলেছি, যা খুবই স্পষ্ট।’ গত শুক্রবার (৪ অক্টোবর) এক সংবাদ সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে কটাক্ষ করে আচমকা এমন মন্তব্য করেছেন বিরোধী দল কংগ্রেসের সাবেক এই প্রধান।

বিশ্লেষকদের মতে, চলমান কাশ্মীর উত্তেজনার মধ্যে দেশ ব্যাপী গণপিটুনির ঘটনা বৃদ্ধি পায়। সম্প্রতি যা নিয়ে চরম উদ্বেগ জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী মোদীকে একটি খোলা চিঠি লিখেছিলেন ৫০ ভারতীয় বিশিষ্ট ব্যক্তি। যদিও গত বৃহস্পতিবার (৩ অক্টোবর) এসবের প্রেক্ষিতে আদালতে এসব ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করে ক্ষমতাসীন বিজেপি। মূলত এ কারণেই নরেন্দ্র মোদীকে কটাক্ষ করে এসব মন্তব্য করলেন রাহুল।

সংবাদ সম্মেলনে কংগ্রেস নেতা রাহুল বলেন, ‘এখন প্রধানমন্ত্রীর বিরুদ্ধে কিছু বললে, সরকারের বিরুদ্ধে সোচ্চার হলে, তাৎক্ষণিক তাকে কারাগারে পাঠানো হচ্ছে। এমনকি গণমাধ্যমগুলোকেও গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। ভারতে ঠিক কী চলছে তা সবাই জানে। এসব জিনিস এখন আর কারও কাছে গোপন নেই।’

দেশ স্বৈরতন্ত্রের পথে এগোচ্ছে বলে রাহুল গান্ধী বলেন, ‘একদিকে ধারণা জন্মেছে যে, এখন থেকে এক ব্যক্তিই দেশ শাসন করবেন। গোটা ভারতে একটি মাত্র আদর্শই থাকবে। বাকিদের মুখে কুলুপ এঁটে থাকতে হবে। আর অপর দিকে বহু ভাষা, অসংখ্য সংস্কৃতি এবং বাক স্বাধীনতার জন্য লড়াই চালিয়ে যাচ্ছে কংগ্রেসসহ দেশের সবকয়টি বিরোধী দল। দেশে এখন কেবল এই যুদ্ধই চলছে।’

ক্ষমতাসীন মোদী সরকারের সমালোচনা করে কংগ্রেস নেতা আরও বলেন, ‘বিজেপি কেন ভারতের অর্থনীতিকে ধ্বংস করেছে সেজন্য প্রধানমন্ত্রীকে উত্তর দিতে হবে। কেননা আমাদের সবচেয়ে বড় শক্তি ছিল এর অর্থনীতি। যদিও আজ তাকে পুরোপুরি ধ্বংস করে দেওয়া হয়েছে। ফলে দেশে বেকারত্বের হার দিনে দিনে বৃদ্ধি পাচ্ছে।’

এবার কাশ্মীর ইস্যুতেও মন্তব্য করেছেন রাহুল। তিনি বলেন, 'বর্তমানে এটা স্পষ্ট যে, ফারুক আবদুল্লাহর মতো জাতীয়তাবাদী নেতাদের আটক করে সরকার যে রাজনৈতিক শূন্যস্থান তৈরি করতে চাইছে; খুব শিগগিরই যা পূরণে এগিয়ে আসবে অঞ্চলটির জঙ্গিরা। মূলত এরপর গোটা দেশে এক রাজনৈতিক মেরুকরণের হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহৃত হবে এই কাশ্মীর।'

এর আগে ভারতজুড়ে ক্রমবর্ধমান গণপিটুনির ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করে চলতি বছরের জুলাই মাসে প্রধানমন্ত্রী মোদীকে একটি খোলা চিঠি দিয়েছিলেন ইতিহাসবিদ রামচন্দ্র গুহ, চিত্র পরিচালক মণিরত্নম, শ্যাম বেনাগাল, অনুরাগ কাশ্যপ, অভিনেতা সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায় এবং অভিনেত্রী অপর্ণা সেনসহ মোট ৫০ জন বিশিষ্ট নাগরিক।

যেখানে বলা হয়, ‘মুসলিম, দলিত এবং সংখ্যালঘুদের এভাবে পিটিয়ে হত্যার ঘটনা অবিলম্বে বন্ধ করতে হবে। একটি গণতান্ত্রিক শাসন ব্যবস্থায় ভিন্নমত থাকাটাই স্বাভাবিক। বিরুদ্ধ মতপ্রকাশের অধিকার ও স্বাধীনতা ছাড়া কোনো গণতন্ত্রই বেশিদিন বেঁচে থাকতে পারে না।’

আরও পড়ুন :- কাশ্মীরে আদালতের অচলাবস্থা, বিচারহীনতায় বন্দিরা

পরবর্তীতে গত বৃহস্পতিবার এ নিয়ে বিহারের মুজফ্ফরপুর আদালতে সেই ৫০ বিশিষ্ট ভারতীয়র বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহের অভিযোগে ক্ষমতাসীন বিজেপির পক্ষ থেকে এফআইআর দায়ের করা হয়। মূলত এরপরই প্রধানমন্ত্রী মোদীর বিরুদ্ধে ভিন্নমতের কণ্ঠরোধ ও স্বৈরতন্ত্রের দিকে এগিয়ে যাওয়ার অভিযোগ তোলেন কংগ্রেস নেতা রাহুল।

সূত্র : ‘আনন্দবাজার’

ওডি/কেএইচআর

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া

 

সম্পাদকীয় কার্যালয় 

১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।

যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702 

ই-মেইল: [email protected]

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড