হংকংয়ে বিক্ষোভ : ফের গণতন্ত্রকামীদের দখলে সড়ক

ইউরেশিয়ার দক্ষিণপূর্ব উপকূলের দেশ হংকংয়ে গণতন্ত্রকামীদের সরকার বিরোধী বিক্ষোভে ফের উত্তাল হয়ে উঠেছে রাজপথ। গত তিন মাসের বেশি সময় যাবত চীনপন্থি শাসক ক্যারি ল্যামের পদত্যাগের দাবিতে চলা আন্দোলন ক্রমশ সহিংসতার দিকে যাচ্ছে। যে কারণে চলতি বিক্ষোভ দমনে এরই মধ্যে টিয়ার গ্যাসের সঙ্গে রাবার বুলেট ব্যবহার করছে পুলিশ।

কর্তৃপক্ষের বরাতে ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা ‘রয়টার্স’ জানায়, গত রবিবার (২৯ সেপ্টেম্বর) বিক্ষোভে অংশ নেওয়া গণতন্ত্রকামীরা দেশের গুরুত্বপূর্ণ বিভিন্ন এলাকায় প্রতিবাদ কর্মসূচি পালন করেছে। এ দিন বে শপিং ডিসট্রিক্ট, ওয়ান চাই বার এলাকা এবং বিভিন্ন সরকারি অফিস প্রাঙ্গণে বিক্ষোভ অনুষ্ঠিত হয়। এই সময় সড়কে টায়ারসহ বিভিন্ন বস্তু আগুনে পুড়িয়ে প্রশাসনের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ করতে দেখা যায়।

এতে সড়ক গণতন্ত্রকামীদের দখলে থাকায় বিভিন্ন স্থানে ব্যাপক যানজটের সৃষ্টি হয়। এ সময় বিক্ষোভকারীরা পুলিশকে লক্ষ্য করে বেশ কয়েকটি পেট্রোল বোমাও নিক্ষেপ করে। তাছাড়া এদের অনেকে সরকারি ভবনের জানালার কাঁচেও ভাঙচুর করে।

যদিও তাৎক্ষণিক পাল্টা ব্যবস্থা হিসেবে পুলিশ টিয়ার গ্যাস ও রাবার বুলেট নিক্ষেপসহ রঙিন গরম পানিও ছোঁড়ে। এতে টিয়ার গ্যাস থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য বিক্ষোভকারীরা কালো ছাতা ব্যবহার করেছিলেন।

হংকংয়ের প্রধান নির্বাহী ক্যারি ল্যামের পদত্যাগসহ মোট পাঁচটি দাবিতে বিক্ষোভ অব্যাহত আছে। যদিও এর মধ্য থেকে কেবল আসামি প্রত্যর্পণ বিলের দাবি মেনে নিয়েছে চীনপন্থি এই সরকার।

হংকংয়ে বিক্ষোভরত গণতন্ত্রকামীকে সড়কে বেধে রেখেছে পুলিশ। (ছবিসূত্র : দ্য ফিনান্সিয়াল টাইমস)

প্রায় ১৫০ বছর ব্রিটিশ ঔপনিবেশিকদের অধীনে থাকার পর ১৯৯৭ সালের ১ জুলাই লিজ চুক্তির মেয়াদ শেষ হওয়ায় অঞ্চলটি শক্তিশালী চীনের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছিল। ঐতিহাসিক এই দিবসটির ২২ বছর পূর্তিতে সোমবার আন্দোলনে সড়ক অবরোধ করেন গণতন্ত্রকামী এসব লোকজন। প্রতি বছরের এই দিনে কর্মকর্তারা এক দিকে সরকারি ভবনগুলোতে উৎসব পালন করেন আর অপর দিকে গণতন্ত্রকামীরা অবস্থান নেন রাজপথে।

দীর্ঘদিন যাবত হংকং চীনের বিশেষ প্রশাসনিক অঞ্চল হিসেবে বিবেচিত হলেও ২০৪৭ সাল থেকে অঞ্চলটিকে স্বায়ত্তশাসনের নিশ্চয়তা দেয় দেশটি। এর আগে গত মাসেও চীনপন্থি এক বিল নিয়ে উত্তাল হয়ে উঠেছিল ইউরেশিয়ার দক্ষিণপূর্ব উপকূলের এই দেশ।

আরও পড়ুন :- প্রকাশিত হলো সৌদি সেনাবহরে হুথিদের রুদ্ধশ্বাস হামলার ভিডিও

মূলত চীন এবং তাইওয়ানে আসামি প্রত্যর্পণ সংক্রান্ত প্রস্তাবিত একটি বিলের বিপক্ষে তখন গোটা দেশে এই বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে। এতে আন্দোলনকারীদের মূল ক্ষোভ দাঁড়ায় চীনের সঙ্গে সমঝোতা নিয়ে। বেইজিংয়ের দুর্বল আইন ব্যবস্থা এবং মানবাধিকার লঙ্ঘনের রেকর্ডের কারণে হংকংয়ের সাধারণ মানুষ সেখানে কাউকে ফেরত পাঠাতে চাইছেন না। তাদের মতে, পার্লামেন্টে বিলটি পাস হলে তা অভ্যন্তরীণ রাজনীতির ক্ষেত্রে চীনা হস্তক্ষেপের সুযোগ অনেকাংশে বাড়িয়ে দেবে।

ওডি/কেএইচআর