• শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১  |   ২৯ °সে
  • বেটা ভার্সন
sonargao

দ্বিতীয় দিনেও চলছে বিক্ষোভ

নিরাপদ আশ্রয়ের সন্ধানে মিশরীয় স্বৈরশাসক সিসি

  আন্তর্জাতিক ডেস্ক

২২ সেপ্টেম্বর ২০১৯, ০৯:১৪
মিশরে বিক্ষোভ
মিশরীয় স্বৈরশাসক সিসির পতনের দাবিতে বিক্ষোভ। (ছবিসূত্র : ডি ডব্লিউ)

উত্তর আফ্রিকার দেশ মিশরের স্বৈরশাসক জেনারেল আবদেল ফাত্তাহ আল-সিসির আচমকা পদত্যাগের দাবিতে টানা দ্বিতীয় দিনের মতো সড়কে নেমেছে হাজারো বিক্ষোভকারী। শুক্রবার (২০ সেপ্টেম্বর) স্থানীয় সময় সকালে শুরু হওয়া এই কর্মসূচি পরদিন শনিবারেও অব্যাহত ছিল।

এ সময় বিভিন্ন শহরের রাজপথ দখলের অভিযোগে অন্তত পাঁচজন গণতন্ত্রপন্থিকে গ্রেফতার করেছে প্রশাসন। যদিও এরই মধ্যে জাতিসংঘের ৭৪তম সাধারণ অধিবেশনে অংশগ্রহণের নামে নিরাপদ আশ্রয়ের সন্ধানে দেশ ছেড়েছেন প্রেসিডেন্ট সিসি বলে দাবি করেছেন সড়কে বিক্ষোভরত জনতা।

বিশ্লেষকদের মতে, এমন এক সময় দেশটিতে বিক্ষোভটি অনুষ্ঠিত হচ্ছে, যখন জাতিসংঘের অধিবেশনে অংশ নিতে নিউ ইয়র্ক সফরে আছেন মিশরীয় প্রেসিডেন্ট জেনারেল আবদেল ফাত্তাহ আল-সিসি।

সূত্রের বরাতে গণমাধ্যমের দাবি, স্বৈরশাসক সিসি মূলত বাইরে থেকে সকল পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ ও নিরাপদ আশ্রয় অনুসন্ধান করতে গিয়েছেন। মিশরীয় জনগণ দীর্ঘদিনের ভয় ও বাধা থেকে বেরিয়ে তার পতনের দাবিতে সড়কে নেমে আসার বিষয়টি তিনি অনেক আগে থেকেই আঁচ করতে পেরেছিলেন।

এবারের আন্দোলনে লোকজন 'ভয় নয়, জেগে উঠো, সিসি হটাও, দেশ বাঁচাও' প্রভৃতি স্লোগানে রাজপথ কাঁপিয়ে তোলেন। শুক্রবারের ধারাবাহিকতায় পর দিন শনিবারও (২১ সেপ্টেম্বর) দিনভর রাজধানী কায়রোর তাহরির স্কয়ার ছাড়াও আলেকজান্দ্রিয়া, সুয়েজের মতো বৃহৎ বৃহৎ শহরগুলোতেও জনবিক্ষোভ অনুষ্ঠিত হয়।

মিশরীয় স্বৈরশাসক সিসি

মিশরীয় স্বৈরশাসক জেনারেল আবদেল ফাত্তাহ আল-সিসি। (ছবিসূত্র : ফ্রান্স ২৪)

কর্তৃপক্ষের বরাতে ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা 'রয়টার্স' জানায়, তাহরির স্কয়ার প্রাঙ্গণে উত্তেজিত জনতাকে নিবৃত্ত করার চেষ্টা চালায় সাদা পোশাকে থাকা নিরাপত্তা বাহিনীর কর্মীরা। এ সময় ব্যাপক ধরপাকড়ের পাশাপাশি আন্দোলনরতদের ওপর একের পর এক টিয়ার গ্যাস নিক্ষেপ করা হয়। বিক্ষোভের তীব্রতায় বন্ধ করে দেওয়া হয় আশপাশের সব দোকানপাট।

সম্প্রতি স্বেচ্ছায় নির্বাসিত জীবনে থাকা মিশরীয় ব্যবসায়ী ও অভিনয় শিল্পী মোহাম্মদ আলীর এক আহ্বানের পর ধীরে ধীরে সড়কে নেমে আসতে শুরু করে মিশরীয় জনগণ। যেখানে তিনি স্বৈরশাসক সিসির বিরুদ্ধে বেশ কয়েকটি দুর্নীতির অভিযোগ এনে জনগণকে রাজপথে নামার আহ্বান জানিয়েছিলেন।

গত মঙ্গলবার (১৭ সেপ্টেম্বর) সোশ্যাল মিডিয়াতে পাঠানো এক বিবৃতিতে মোহাম্মদ আলী বলেন, 'মিশরের সাধারণ মানুষজন যেখানে দারিদ্র্যের কষাঘাতে জর্জরিত সেখানেই সিসি ও তার কর্মকর্তারা বেসামরিকদের বিপুল অংকের অর্থ অপচয় করে দেখাচ্ছে। সিসি যদি বৃহস্পতিবারের মধ্যে পদত্যাগের ঘোষণা না দেন, তাহলে আগামী শুক্রবার মিশরের সর্বস্তরের জনগণ রাজপথে নেমে আসবে। যা আর কখনোই দমানো যাবে না।'

যদিও নিজের বিরুদ্ধে আনীত সকল দুর্নীতির অভিযোগকে এরই মধ্যে 'মিথ্যাচার' বলে আখ্যায়িত করেছেন জেনারেল সিসি। এক বিবৃতিতে তিনি বলেন, 'আমি সব সময় জনগণের স্বার্থের কথা বিবেচনা করে সকল সিদ্ধান্ত নিয়েছি। যদিও তা একটি প্রক্রিয়ার মাধ্যমে; এখন সময় এসেছে আমার সরকারের বিরুদ্ধে আনা সকল অভিযোগকে 'মিথ্যাচার' হিসেবে প্রমাণ করার।'

বিশ্লেষকদের মতে, ২০১৩ সালের সামরিক অভ্যুত্থানের পর জেনারেল সিসি সরকারের বিরুদ্ধে মিশরে এটাই সবচেয়ে বড় ধরনের বিক্ষোভ। যা ক্রমশ বেড়েই চলেছে।

এর আগে ২০১২ সালের ৩০ জুন মিশরের ইতিহাসের প্রথম নির্বাচিত গণতান্ত্রিক প্রেসিডেন্ট হিসেবে ক্ষমতা গ্রহণ করেন মুসলিম ব্রাদারহুড জ্যেষ্ঠ নেতা মোহাম্মদ মুরসি। যদিও এর প্রায় বছর খানেকের মাথায় ২০১৩ সালের ৩ জুলাই ব্যাপক সেনা অভ্যুত্থানের মাধ্যমে মুরসিকে অপসারণের মাধ্যমে দেশের ক্ষমতায় বসেন বিশ্বব্যাপী স্বৈরশাসক হিসেবে পরিচিত সেনাপ্রধান জেনারেল সিসি।

আরও পড়ুন :- আমরা খুব সহজেই ইরান দখল করতে পারি : ট্রাম্প

যেখানে সেই অভ্যুত্থানে পৃষ্ঠপোষকতা দেয় দখলদার রাষ্ট্র ইসরায়েল ও মুসলিম অধ্যুষিত সংযুক্ত আরব আমিরাতের মতো দেশগুলো। তবে এর প্রতিবাদে মুরসি সমর্থকরা সড়কে নামলে নিরাপত্তা বাহিনীর গুলিতে ব্রাদারহুডের প্রায় হাজার খানেকের অধিক নেতাকর্মীকে প্রাণ হারাতে হয়। তাছাড়া সরকারিভাবে বিবৃতি পাঠিয়ে মুরসি সমর্থকদের 'সন্ত্রাসী' হিসেবে আখ্যায়িত করে জেনারেল সিসিকে সমর্থন জানায় সৌদি আরব।

ওডি/কেএইচআর

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া

 

সম্পাদকীয় কার্যালয় 

১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।

যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702 

ই-মেইল: [email protected]

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড