নেতানিয়াহু একঘরে, বাজতে চলেছে বিদায়ঘণ্টা

ইসরায়েলের ক্ষমতাসীন প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর আহ্বান প্রত্যাখ্যান করেছেন বিরোধী দল। ফলে এ কথা বলা যায় যে, বিদায়ঘণ্টা বাজতে চলেছে তার। নেতানিয়াহুর স্বপ্ন একেবারে ধূলিসাৎ করেন দেন বিরোধী দলের প্রধান বেনি গান্টজ। তাই টানা পাঁচবার সরকার গঠনের অনন্য ইতিহাস গড়া হচ্ছে বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর।

মঙ্গলবার (১৭ সেপ্টেম্বর) হয়ে যাওয়া ইসরায়েলের সাধারণ নির্বাচনের ফলাফলে দেখা যায়, আসন সংখ্যার দিক থেকে প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী বেনি গান্টজের নীল ও সাদা দলের থেকে পিছিয়ে পড়েছে বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর ডানপন্থি লিকুদ পার্টি। ফলে সরকার গঠনের দৌড়ে এখন এগিয়ে বেনি গান্টজ।

বেনি গান্টজের জোটের সর্বাধিক আসন রয়েছে এবং তার পরবর্তী সরকারকে নেতৃত্ব দেওয়া উচিত বলে বিবৃতি দিয়েছেন তিনি। দুবাই ভিত্তিক সংবাদ মাধ্যম ‘দ্য ন্যাশনাল’ এ তথ্য প্রকাশ করেছে।

ইসরায়েলের পার্লামেন্ট ‘নেসেট’-এ মোট আসন সংখ্যা ১২০টি। সংবিধান অনুসারে, সরকার গঠন করতে হলে যেকোনো দল বা জোটকে ৬১ আসন পেতে হবে। সাধারণ নির্বাচনের ফলাফলে দেখা যায়, ১২০ আসনের মধ্যে মধ্যপন্থি উদার রাজনৈতিক জোট নীল ও সাদা দল পেয়েছে মোট ৩৩ আসন। অপরদিকে, লিকুদ পার্টি পয়েছে মোট ৩১ আসন। এছাড়া অন্য দুটি দল পেয়েছে যথাক্রমে ২৪ ও ১১টি আসন। ফলে সরকার গঠনের স্বপ্নভঙ্গ হয়েছে লিকুদ পার্টির নেতৃত্বে বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর।

এদিকে মূল দুই দলের কেউই সংখ্যাগরিষ্ঠতার ভিত্তিতে সরকার গঠনের অবস্থায় না থাকায় এখন তাদের সমমনা দলগুলোকে খুঁজে বের করতে হবে। এ অবস্থায় প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী গান্টজের সঙ্গেই জোট সরকার গড়ার অনুনয় জানিয়েছেন নেতানিয়াহু।

জোট সরকার গঠনের বিষয়ে নেতানিয়াহু বলেন, নির্বাচনের যে ফল এসেছে তাতে আর কোনো পথ খোলা নেই। জনগণ আমাদের আলাদা সরকার গঠনের সুযোগ দেয়নি।

বৃহস্পতিবার (১৯ সেপ্টেম্বর) ক্ষমতাসীন দলের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ তুলে গান্টজ বলেন, দুর্নীতিগ্রস্ত দলের সাথে কোনো ব্লকই ঐক্য গঠন করবে না। আমরা সবার কথা শুনব, তবে আমাদের ওপর চাপানো আদেশ আমরা গ্রহণ করব না।

নেতানিয়াহুকে একঘরে করে রাখতে যেন উঠে পড়ে লেগেছেন বেনি গান্টজ। তিনি বলেন, নেতানিয়াহুর সঙ্গে কোনো জোট নয়। লিকুদ পার্টিকে বাইরে রেখেই নতুন সরকার গঠন করবেন তিনি। শুধু তাই নয়, এরই মাঝে গান্টজ জাতীয়তাবাদী ‘ইসরায়েল বেতিনু’ পার্টি ও বামপন্থি লেবার-গেসার ও ডেমোক্রেটিক ক্যাম্প পার্টির সঙ্গে নতুন সরকার গঠনের ব্যাপারে কথা বলবেন বলেও জানান।

এ কারণে মনে হচ্ছে দীর্ঘ নেতানিয়াহু যুগের অবসান ঘটতে চলেছে ইসরায়েলে।

উল্লেখ্য, এর আগে চলতি বছরের এপ্রিলে ইসরায়েলে সাধারণ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। সেবার কোনো দল বা জোট ৬১ আসন নিশ্চিত করতে না পারায়, সেপ্টেম্বরে পুননির্বাচনের আয়োজন করা হলো। ক্ষমতায় যেতে হলে ১২০ আসনের মধ্যে যেকোনো দলকে ৬১টি আসন পেতে হবে। ক্ষমতায় যাওয়ার জন্য ইসরায়েল নির্বাচনে কেউই একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা না পাওয়ায় দলগুলো জোট গঠন করে ক্ষমতায় যেতে পারে। এখন দেখা যাক, ইসরায়েলে কি ঘটতে চলেছে।

ওডি/টিএএফ