আন্তর্জাতিক ডেস্ক
যুদ্ধবিধ্বস্ত তালিবান সন্ত্রাসীদের পৃথক আত্মঘাতী বোমা হামলায় শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত নারী ও শিশুসহ নিহতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে অন্তত ৪৮ জনে। এতে আরও কমপক্ষে অর্ধশতাধিক লোক আহত হন। যার মধ্যে সবচেয়ে ভয়াবহ হামলাটি হয় প্রেসিডেন্ট আশরাফ ঘানির নির্বাচনি সমাবেশ প্রাঙ্গণে, যদিও এ যাত্রায় তিনি প্রাণে বেঁচে গেছেন।
কর্তৃপক্ষের বরাতে ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা 'রয়টার্সে'র প্রতিবেদনে জানানো হন, দেশটির প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের মাত্র ১১ দিন আগে গত মঙ্গলবার (১৭ সেপ্টেম্বর) এই হামলা দুটি ঘটল। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে চলমান শান্তি আলোচনা ভেস্তে যাওয়ার পর সহিংসতার মাধ্যমে আসন্ন নির্বাচনকে বাধাগ্রস্ত করার পাঁয়তারা চালাচ্ছে তালিবান বলে দাবি সংশ্লিষ্টদের।
বিশ্লেষকদের মতে, প্রেসিডেন্ট ঘানি আগামী ২৮ সেপ্টেম্বরের নির্বাচনে পুনরায় জয়লাভের মাধ্যমে টানা দ্বিতীয় মেয়াদে দেশের ক্ষমতায় আসতে চাইছেন। এ দিন পারওয়ান প্রদেশের চারিকার শহরে আয়োজিত তার জনসমাবেশকে কেন্দ্র করে প্রথম আত্মঘাতী হামলাটি চালানো হয়।
দেশটির স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র নসরত রাহিমি 'রয়টার্স'কে বলেছেন, 'এই হামলায় প্রাথমিকভাবে ২৬ জন নিহত এবং আরও অন্তত ৪২ জন গুরুতর আহত হন। বর্তমানে হতাহত সকলকে পার্শ্ববর্তী হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য পাঠানো হয়েছে।'
এ দিকে প্রাদেশিক পুলিশের প্রধান মোহাম্মদ মাহফুজ ওয়ালিজাদা বলেছিলেন, 'এক বৃদ্ধ মোটরসাইকেলে চেপে ঘটনাস্থলে এসে এই আত্মঘাতী বিস্ফোরণটি ঘটিয়েছে। যদিও এতে হামলাকারী নিজেও প্রাণ হারিয়েছে।'
স্থানীয় হাসপাতালের প্রধান আবদুল কাশিম বলেন, 'উদ্ধারকারীরা বিস্ফোরণের খবর পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে ঘটনাস্থলে গিয়ে হতাহতদের উদ্ধারের চেষ্টা শুরু করেছেন। আহতদের মধ্যে বেশ কিছু নারী ও শিশু রয়েছে। বিশেষ করে বেসামরিকরাই সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। সেখানে এখনো অ্যাম্বুলেন্স সেবা অব্যাহত আছে। ঘটনায় নিহতের সংখ্যা আরও অনেক বাড়তে পারে।'
আফগান প্রেসিডেন্ট এক টুইট বার্তায় এরই মধ্যে মর্মান্তিক এ হামলার জন্য নিন্দা জানিয়েছেন। তিনি বলেন, 'তালিবান জঙ্গিরা নিরপরাধ বেসামরিকদের তাদের হামলার লক্ষ্যবস্তু বানিয়ে দেশের ঐক্য ভাঙার চেষ্টা করছে। তারা শান্তির নামে সন্ত্রাসবাদের পথ বেছে নিয়েছে; যা কখনোই সঠিক পথ নয়।'
অপর দিকে একই দিন বিকালে রাজধানী কাবুলের একটি নিয়োগ কেন্দ্রের প্রবেশপথে এক আত্মঘাতী বিস্ফোরক বহনকারী ব্যক্তি আচমকা নিজের শরীরে বিস্ফোরণ ঘটায়। এতে ঘটনাস্থলেই ২২ বেসামরিক নিহত এবং আরও কমপক্ষে ৩৮ জন গুরুতর আহত হন।
আরও পড়ুন :- চোরাই তেলসহ ফের ট্যাংকার আটক করল ইরান
আফগান স্বাস্থ্য কর্মকর্তাদের মতে, মর্মান্তিক এ হামলায় নিহতদের মধ্যে বেশির ভাগই নারী ও শিশু। যদিও এতে দেশের নিরাপত্তা বাহিনী অন্তত ছয় সদস্যও প্রাণ হারিয়েছেন। সশস্ত্র সংগঠন তালিবান এক বিবৃতিতে হামলাগুলোর দায় স্বীকার করে জানায়, প্রধানত নিরাপত্তা বাহিনীকে লক্ষ্য করেই এই হামলা দুটি চালানো হয়েছে। এতে নিহতদের মধ্যে অধিকাংশই সরকারি বাহিনীর সদস্য।
ওডি/কেএইচআর
নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া
সম্পাদকীয় কার্যালয়
১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।
যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702
ই-মেইল: [email protected]
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।
Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড