আন্তর্জাতিক ডেস্ক
মধ্যপ্রাচ্যের দেশ সৌদি আরবের রাষ্ট্রীয় অপরিশোধিত তেল শোধনাগার 'আরামকো কোম্পানি'র দুটি বৃহৎ স্থাপনায় ড্রোন হামলা চালিয়েছে ইয়েমেনের ইরান সমর্থিত সশস্ত্র হুথি বিদ্রোহীরা। মূলত এ ঘটনায় এরই মধ্যে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে রিয়াদ। ভয়াবহ ওই আক্রমণের পর সার্বিক পরিস্থিতি নিয়ে মিত্র দেশ যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে টেলিফোনে কথা বলেছেন সৌদি যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমান।
যেখানে তিনি প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পকে সাফ জানিয়ে দিয়েছেন, অবশ্যই হামলার যথাযথ জবাব দেওয়া হবে। এর জন্য রিয়াদ সর্বদাই প্রস্তুত। রবিবার (১৫ সেপ্টেম্বর) শীর্ষ এই দুই নেতার ফোনালাপের বরাতে করা প্রতিবেদনে সালমানের এই হুঁশিয়ারি উচ্চারণের বিষয়টি নিশ্চিত করেছে কাতারভিত্তিক গণমাধ্যম 'আল-জাজিরা'।
যুবরাজ সালমান বলেন, 'ইরান সমর্থিত সেনাদের চালানো এই হামলার পাল্টা জবাব দেওয়ার সক্ষমতা এবং প্রস্তুতি উভয়ই রিয়াদের আছে। এরপরও নিজেদের সকল নিরাপত্তা ইস্যুতে ওয়াশিংটনের সঙ্গে কাজ করতে আগ্রহী সৌদি আরব।'
এ দিকে সৌদি প্রেস এজেন্সির (এসপিএ) প্রতিবেদনে বলা হয়, শনিবার (১৪ সেপ্টেম্বর) আরামকোর পৃথক তেল স্থাপনায় হামলার বিষয়ে মার্কিন প্রেসিডেন্টের সঙ্গে এরই মধ্যে টেলিফোনে সৌদি যুবরাজের কথা হয়েছে। এ সময় এমবিএস খ্যাত যুবরাজ সালমান বলেন, 'সন্ত্রাসীদের হামালা মোকাবিলায় রিয়াদ পুরোপুরি সক্ষম। আমাদের সেনারা এর জন্য সর্বদাই প্রস্তুত।'
যদিও প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প তাৎক্ষণিক এমবিএসকে বলেছিলেন, 'ড্রোন হামলার পর সৌদি আরবের নিরাপত্তা নিশ্চিতে যুক্তরাষ্ট্র তাদের সহায়তা করতে প্রস্তুত। যেকোনো সময় সৌদি চাওয়া মাত্র মার্কিন প্রশাসন তাদের পাশে এসে দাঁড়াবে।'
এর আগে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাইক পম্পেও এক টুইট বার্তায় বলেন, 'সৌদির ইস্টার্ন প্রদেশে অবস্থিত তেল স্থাপনাগুলোতে ইয়েমেনের ড্রোন হামলার পেছনে তেহরানও প্রত্যক্ষভাবে জড়িত। যদিও মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী এসব অভিযোগ এরই মধ্যে প্রত্যাখ্যান করেছে শিয়াপন্থি সশস্ত্র সংগঠন হুথি বিদ্রোহীরা।
টুইট বার্তায় মাইক পম্পেও বলেছেন, 'হাসান রুহানি (ইরানের প্রেসিডেন্ট) ও জারিফ (দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী) সৌদির সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্কে জড়িত থাকার ভান করছেন। কেননা রিয়াদে এখন পর্যন্ত চালানো প্রায় শতাধিক হামলার পেছনে তেহরান জড়িত। তাছাড়া উত্তেজনা হ্রাসের সকল আহ্বান সত্ত্বেও ইরান এখনো বিশ্বের জ্বালানি সরবরাহে অভূতপূর্ব আক্রমণ করে যাচ্ছে।'
সৌদির সরকারি প্রেস এজেন্সির দাবি, শনিবার স্থানীয় সময় ভোর চারটায় আবকাইক ও খুরাইসে তেল স্থাপনায় ড্রোন হামলার কারণে সৃষ্ট আগুন এরই মধ্যে আরামকোর শিল্প নিরাপত্তা দল নিয়ন্ত্রণ করতে পেরেছে। যদিও এর জন্য দেশের সার্বিক তেল ও গ্যাস উৎপাদন অনেকটাই কমে গেছে।
অপর দিকে ভয়াবহ সেই হামলার পর ইয়েমেনি সশস্ত্র বাহিনীর মুখপাত্র ইয়াহিয়া সারি এক বিবৃতিতে বলেছিলেন, 'আমাদের ওপর গত পাঁচ বছরের আগ্রাসন ও অবরোধের যে জবাব দেওয়া হয়েছে তা সম্পূর্ণ বৈধ ও স্বাভাবিক। আগামীতে আরও হামলা হবে।'
সম্প্রতি সৌদি আরবের সীমান্তবর্তী বিভিন্ন প্রদেশে হামলার মাত্রা বাড়িয়ে দিয়েছে ইয়েমেনে সৌদি জোটের বিরুদ্ধে লড়াইরত হুথি বিদ্রোহীরা। যার অংশ হিসেবে চলতি বছরের মে মাসের শেষ দিকে পবিত্র নগরী মক্কা ও জেদ্দায় দুটি ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালানো হয়। যদিও তখন প্রায় একই সময় সৌদির নাজরান বিমানবন্দরে পরপর তিনবার হামলা চালানোর দাবি করেছিল বিদ্রোহী এই গোষ্ঠীটি।
আরও পড়ুন :- সৌদির তেল স্থাপনাতে হামলায় ইরানকে দায়ী করল যুক্তরাষ্ট্র
এর আগে ২০১৪ সালে রাজধানী সানা দখলের পর সৌদি সমর্থিত ইয়েমেনি প্রেসিডেন্ট আব্দ রাব্বু মনসুর আল হাদিকে ক্ষমতা থেকে অপসারণ করেছিল তারা। বর্তমানে তিনি দেশের বাইরে স্বেচ্ছায় নির্বাসিত জীবন কাটাচ্ছেন।
ওডি/কেএইচআর
নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া
সম্পাদকীয় কার্যালয়
১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।
যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702
ই-মেইল: [email protected]
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।
Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড