• বুধবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১  |   ৩৬ °সে
  • বেটা ভার্সন
sonargao

সাজা শেষ হলেও কারাগারেই থাকছেন উইকিলিকসের অ্যাসাঞ্জ

  আন্তর্জাতিক ডেস্ক

১৫ সেপ্টেম্বর ২০১৯, ০৯:২০
জুলিয়ান অ্যাসাঞ্জ
উইকিলিকসের সহ-প্রতিষ্ঠাতা জুলিয়ান অ্যাসাঞ্জ। (ছবিসূত্র : ইউএসএ টুডে)

সাজার মেয়াদ শেষ হলেও আগামী বছর পর্যন্ত কারাগারেই থাকতে হচ্ছে মার্কিন গোপন দলিল ফাঁসের আলোচিত বিকল্প ধারার সংবাদমাধ্যম উইকিলিকসের সহ-প্রতিষ্ঠাতা জুলিয়ান অ্যাসাঞ্জকে। কর্তৃপক্ষের দাবি, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে প্রত্যর্পণ সংক্রান্ত মামলার শুনানি শেষ না হওয়া পর্যন্ত ব্রিটিশ কারাগারেই বন্দি থাকতে হবে আলোচিত এই গণমাধ্যম ব্যক্তিত্বকে। যদিও জামিনের শর্ত ভঙ্গের দায়ে সাজা ভোগের পর আসছে ২২ সেপ্টেম্বর তার মুক্তির কথা ছিল।

এ দিকে মার্কিন প্রশাসনের সরকারি কম্পিউটার নেটওয়ার্ক হ্যাকের ষড়যন্ত্রসহ আরও মোট ১৮টি গুরুতর অভিযোগে অ্যাসাঞ্জকে বিচারের সম্মুখীন করতে যুক্তরাষ্ট্রে নিয়ে যেতে চায় ওয়াশিংটন। যে কারণে এই প্রত্যর্পণ মামলার শুনানি শেষ না হওয়া পর্যন্ত তাকে কারাগারে রাখার নির্দেশ দিয়েছেন ব্রিটেনের আদালত।

এর আগে ২০১২ সালের জুন থেকে লন্ডনের ইকুয়েডর দূতাবাসে রাজনৈতিক আশ্রয়ে ছিলেন উইকিলিকস প্রতিষ্ঠাতা জুলিয়ান অ্যাসাঞ্জ। পরে দীর্ঘ সাত বছর আশ্রিত থাকার পর অবশেষে গত ১১ এপ্রিল দূতাবাস থেকেই জুলিয়ান অ্যাসাঞ্জকে গ্রেফতার করা হয়। মূলত এর মাধ্যমেই সারা বিশ্বে আলোড়ন সৃষ্টিকারী এই ব্যক্তির কারাজীবন নাটকীয়ভাবে শুরু হয়।

ব্রিটেনের দাবি, যুক্তরাষ্ট্রে প্রত্যর্পণের দীর্ঘ অনুরোধ সাপেক্ষেই তাকে গ্রেফতার করা হয়েছে। পরবর্তীতে এপ্রিলে তাকে জামিনের শর্ত ভঙ্গের দায়েও দোষী সাব্যস্ত করে আদালত। মূলত তখন থেকে বেলমার্শ নামক 'যুক্তরাজ্যের গুয়ানতানামো বে' নামে পরিচিত কুখ্যাত কারাগারে আটক করে রাখা হয় তাকে। গত ১ মে অ্যাসাঞ্জের বিরুদ্ধে মোট ৫০ সপ্তাহের সাজা ঘোষণা করেন বিচারক। আর তার মাত্র একদিন পর (২ মে) যুক্তরাষ্ট্রে প্রত্যর্পণের ব্যাপারে তার বিরুদ্ধে শুনানি শুরু হয়; যা এখনো চলছে।

বিশ্লেষকদের মতে, আগামী ২২ সেপ্টেম্বর সেই ৫০ সপ্তাহের সাজার মেয়াদ শেষ হচ্ছে। যদিও তিনি এবার পালিয়ে যেতে পারেন এমন আশঙ্কা থেকেই গত শুক্রবার (১৩ সেপ্টেম্বর) ওয়েস্ট মিনিস্টারের বিচারক তাকে আগামী বছর প্রত্যর্পণের ওই মামলার শুনানি শেষ হওয়া পর্যন্ত কারাগারে রাখার নির্দেশ দেন।

আদালতে বিচারক ভ্যানিসা বারইটসার অ্যাসাঞ্জের উদ্দেশে বলেন, 'আজ আপনাকে হাজির করা হয়েছে কারণ খুব শিগগিরই আপনার সাজার মেয়াদ শেষ হতে চলেছে। এখন থেকে আপনার অবস্থানের পরিবর্তন হবে। কেননা এবার আপনি কয়েদি থেকেই প্রত্যর্পণ মামলায় মুখোমুখি হতে চলেছেন।'

জুলিয়ান অ্যাসাঞ্জ

লন্ডনের ইকুয়েডর দূতাবাস থেকে জুলিয়ান অ্যাসাঞ্জকে জোরপূর্বক বের করে নিয়ে যাচ্ছেন পুলিশ সদস্যরা। (ছবিসূত্র : সিএনবিসি)

বিচারক ভ্যানিসা এও বলেছেন, 'আপনার আইনজীবীরা আপনার জামিনের জন্য এরই মধ্যে আবেদন করতে অস্বীকৃতি জানিয়েছেন। আপনার পালিয়ে যাওয়ার পূর্ববর্তী নজির থাকায় সিদ্ধান্তটি নেওয়া হলো। আমার বিবেচনায় আদালতের বিশ্বাস করার মতো যথেষ্ট সুযোগ রয়েছে যে, আমি আপনাকে মুক্তি দিলে, আপনি আবারও পালিয়ে যেতে পারেন।'

অপর দিকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের দাবি, মার্কিন গোপন নথি ফাঁসের দায়ে জুলিয়ান অ্যাসাঞ্জের বিচার কাজ প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের অধীনেই করা হবে। গত বছর আদালতের কাছে অজানাভাবে ২০১০ সালে ইরাকের যুদ্ধ সম্পর্কিত সংবেদনশীল মার্কিন সরকারি দলিল প্রকাশ করা হয়েছিল। নথিটি তখন চেলসি ম্যানিং নামে একজন আর্মি গোয়েন্দা বিশ্লেষকের মাধ্যমে উইকিলিকস প্রকাশ করেছিল। যে কারণে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রর সার্বভৌমত্বে আঘাত করার দায়েও অ্যাসাঞ্জকে অভিযুক্ত করা হয়েছে।

এর আগে উইকিলিকস মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বেশ কিছু গোপন দলিল জনসম্মুখে এনেছিল। সেখানে বলা হয়, ২০১৬ সালে মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের সময় রাশিয়ার সহায়তায় তাদের হ্যাকারদের মাধ্যমে নির্বাচনকে প্রভাবিত করা হয়েছিল।

দীর্ঘদিন ধরেই নিজের পক্ষে যুক্তি দেখিয়েছিলেন যে, যুক্তরাষ্ট্র সম্পর্কে তিনি যে দলিল উত্থাপন করেছেন তার সম্পূর্ণটাই সত্য। একইসঙ্গে ব্রিটেন সরকার যেন তাকে কখনই গ্রেফতার না করে; সেই অনুরোধও বারংবার করা হয়েছিল।

২০১০ সালে মার্কিন কূটনৈতিকদের আড়াই লাখ ই-মেইল এবং প্রায় পাঁচ লাখের বেশি সামরিক গোপন নথি ফাঁস করে বিশ্বব্যাপী আলোড়ন সৃষ্টি করেছিল সুইডেনভিত্তিক আন্তর্জাতিক সংস্থা উইকিলিকস। যদিও এর বেশ কিছুদিন পর সুইডেনে প্রতিষ্ঠানটির সহ-প্রতিষ্ঠাতা জুলিয়ান অ্যাসাঞ্জের বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগে একটি মামলা দায়ের করা হয়।

আরও পড়ুন :- অ্যাসাঞ্জকে কি যুক্তরাষ্ট্রে হস্তান্তর করা হবে?

পরবর্তীতে সেই মামলায় বিচারের জন্য যুক্তরাজ্য সরকার তাকে সুইডেনের কাছে হস্তান্তর করার কার্যক্রম শুরু করে। এরপর গত বছরের ৬ ফেব্রুয়ারি যুক্তরাজ্যের একটি আদালত অ্যাসাঞ্জের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারির সিদ্ধান্ত নেয়। এবার এসবের প্রেক্ষিতে বর্তমানে তিনি কারাভোগ করছেন।

ওডি/কেএইচআর

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া

 

সম্পাদকীয় কার্যালয় 

১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।

যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702 

ই-মেইল: [email protected]

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড