• শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১  |   ২৮ °সে
  • বেটা ভার্সন
sonargao

পার্লামেন্টে বরিসের আগাম নির্বাচনের প্রস্তাবও নাকচ 

  আন্তর্জাতিক ডেস্ক

১০ সেপ্টেম্বর ২০১৯, ১০:৩৩
বরিস জনসন
পার্লামেন্টে ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন। (ছবিসূত্র : টুডে অনলাইন)

চুক্তিহীন ব্রেক্সিটের পর এবার দেশে আগাম নির্বাচন সংক্রান্ত একটি প্রস্তাবের ভোটাভুটিতেও হেরে গেলেন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন। পার্লামেন্টে তার এবারের প্রস্তাবে ২৯৩ আইন প্রণেতা সমর্থন জানায়। যা প্রয়োজনের তুলনায় অনেক কম বলে দাবি গণমাধ্যম 'বিবিসি নিউজে'র। যে কারণে সোমবার (৯ সেপ্টেম্বর) স্থানীয় সময় রাতে হওয়া অধিবেশনের মধ্য দিয়ে টানা পাঁচ সপ্তাহের জন্য বিরতিতে গেল ব্রিটিশ পার্লামেন্ট।

ক্ষমতাসীন কনজারভেটিভ সরকারের পূর্ব সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, মঙ্গলবার ১০ সেপ্টেম্বর থেকে পরবর্তী ১৪ অক্টোবর পর্যন্ত পার্লামেন্টের অধিবেশন স্থগিত রাখা হবে। তাছাড়া চলতি ব্রেক্সিট ইস্যুতে চূড়ান্ত সিদ্ধান্তের জন্য আগামী মাসের ১৭-১৮ তারিখ ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) সম্মেলন অনুষ্ঠিতের কথা রয়েছে।

বিশ্লেষকদের মতে, বরিস জনসনের আগাম নির্বাচন সংক্রান্ত প্রস্তাবটি যে নাকচ হবে তা অনেক আগেই আঁচ করা গেছে। কেন না বিরোধীরা আগে থেকেই জানিয়ে রেখেছেন যে, এ ধরনের প্রস্তাবে তারা কিছুতেই সমর্থন জানাবেন না। জোটটির দাবি, বরিস নেতৃত্বাধীন সরকারকে প্রথমে একটি চুক্তিবিহীন ব্রেক্সিট কার্যকর না করার বিষয়ে প্রতিশ্রুতি দিতে হবে; মূলত এরপর নির্বাচন ইস্যুটি আসবে।

এ দিকে, ইইউর সঙ্গে যুক্তরাজ্যের বিচ্ছেদ কার্যকর হওয়ার দিনক্ষণ অনেক আগে থেকেই নির্ধারিত হয়ে আছে। যে কারণে প্রধানমন্ত্রী বরিস চুক্তিহীন অথবা চুক্তিসহ যে কোনো মূল্যে নির্ধারিত সেই সময়সীমার মধ্যে ব্রেক্সিটটি কার্যকর করতে চান। যদিও তার সেই নীতির ঘোর বিরোধী পার্লামেন্টে বিরোধী দলগুলোর সকল আইনপ্রণেতাসহ খোদ নিজ সরকারি দলের বেশকিছু বিদ্রোহী সদস্য।

তাছাড়া চুক্তিহীন ব্রেক্সিট প্রতিহতে এরই মধ্যে এ সংক্রান্ত একটি বিল পার্লামেন্টের উভয় কক্ষে পাস করা হয়েছে। যার অংশ হিসেবে গত সোমবার পার্লামেন্ট চলতি অধিবেশনের শেষ কর্ম দিবসে বিলটিকে আইনে পরিণত করার কথা ছিল। যেখানে বলা হয়, আগামী ১৯ অক্টোবরের মধ্যে যেকোনো নতুন চুক্তি কিংবা চুক্তিবিহীন ব্রেক্সিট পার্লামেন্টে পাস করাতে হবে। তা না হলে বিচ্ছেদ ইস্যুটি নির্ধারিত সময় থেকে তিন মাস পেছানোর জন্য সরকারকে ইইউ বরাবর অনুরোধ জানাতে হবে।

অপর দিকে ব্রেক্সিট ইস্যুতে ব্রাসেলসের সঙ্গে কার্যকরী কোনো চুক্তি স্বাক্ষরে ব্যর্থ হলে সরকার ব্রেক্সিটকে পিছিয়ে দিতেও বাধ্য হবে। সম্প্রতি এমন একটি আইনে আনুষ্ঠানিকভাবে অনুমোদন দিয়েছেন ব্রিটেনের দ্বিতীয় রানি এলিজাবেথ। সোমবার পার্লামেন্টের উচ্চকক্ষ হাউস অব লর্ডসে এ তথ্য জানানো হয়। পার্লামেন্টে পাস হওয়া আইনটির বিষয়ে হাউস অব লর্ডস এক টুইটার পোস্টে জানায়, ইইউ উইদড্রলসিক্স বিল একটি রাজকীয় সম্মতি লাভ করেছে। যা একরকম ঐতিহাসিক।

সম্প্রতি প্রধানমন্ত্রী বরিস বলেছিলেন, '১৫ অক্টোবর আগাম নির্বাচন কিংবা ৩১ অক্টোবর প্রয়োজনে চুক্তিহীন ব্রেক্সিট বাস্তবায়ন করা না গেলে আমিও পদত্যাগ করতে পারি।' বর্তমানে মূলত এসব বিষয় নিয়েই এক রকম দ্বন্দ্বে রয়েছে বরিসের দল। যার অংশ হিসেবে ইতোমধ্যে মন্ত্রিত্ব ছেড়েছেন তার ছোট ভাই জো জনসন।

৩১ অক্টোবরের মধ্যে চুক্তি বিহীন ব্রেক্সিট প্রতিহতে ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসনের কাছে সময়সীমা বর্ধিত করার আহ্বান সম্বলিত একটি বিল পাঠানো হয়েছে। যা এখন রাজকীয় অনুমোদনের অপেক্ষায় আছে। ব্রেক্সিটের সময় বাড়ানো সংক্রান্ত আন্তঃদলীয় বিলটি গত শুক্রবার (৬ সেপ্টেম্বর) পার্লামেন্টে পাস করানো হয়। তবে প্রধানমন্ত্রী বরিসের মতে, 'ব্রেক্সিট বিলম্বিত করার জন্য ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) কাছে আবেদন করার চেয়ে আমি খাদে পড়ে মরে যাওয়াকে বেছে নিতে চাই।'

তাছাড়া ব্রিটেনের চাকরি ও অবসরভাতা বিষয়ক মন্ত্রী অ্যাম্বার রূপ বলেছেন, 'আমি মনে করি না যে ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) থেকে চুক্তি নিয়ে বের হয়ে যাওয়ার বিষয়টি সরকারের মূল উদ্দেশ্য ছিল। গত মঙ্গলবার পার্লামেন্টের মোট ২১ জন টরি এমপিকে বরখাস্ত করা বরিসের একটি গণতন্ত্র ও শিষ্টাচার বহির্ভূত কাজ। যা কখনোই মেনে নেওয়া যায় না।'

ব্রিটিশ লেবার পার্টি থেকেও বরিসের তীব্র সমালোচনা করা হয়। বিরোধী এই পার্টিটির নেতা জেরেমি করবিন মনে করেন, 'প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন কখনোই জনগণের ভোটে নির্বাচিত প্রধানমন্ত্রী নন। তিনি কেবলই নিজ দলের সদস্যের ভোটে নির্বাচিত; তাই তাকে কোনোদিন গণতন্ত্রের পক্ষের লোক বলে বিবেচনা করা যাবে না।'

আরও পড়ুন ;- ব্রেক্সিট ইস্যুতে আরেক ব্রিটিশ মন্ত্রীর পদত্যাগ

করবিনের ভাষায়, তিনি (বরিস) রাজনীতিতে সবসময়ই মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে অনুসরণ করছেন। আর এ কারণেই ব্রিটিশ জনগণ বর্তমানে স্বাস্থ্য, শিক্ষা ও চাকরিতে দুর্ভোগ পোহাচ্ছে।'

ওডি/কেএইচআর

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া

 

সম্পাদকীয় কার্যালয় 

১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।

যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702 

ই-মেইল: [email protected]

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড