• শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১  |   ২৮ °সে
  • বেটা ভার্সন
sonargao

পার্লামেন্টের নিম্নকক্ষে সংখ্যাগরিষ্ঠতা হারালেন বরিস জনসন

  আন্তর্জাতিক ডেস্ক

০৪ সেপ্টেম্বর ২০১৯, ০৯:১৩
বরিস জনসন
ব্রিটেনের সদ্য নির্বাচিত প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন। (ছবিসূত্র : এবিসি নিউজ)

ব্রিটিশ পার্লামেন্টের নিম্নকক্ষে এবার সংখ্যাগরিষ্ঠতা হারিয়েছেন ব্রিটেনের সদ্য নির্বাচিত প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন। চলমান ব্রেক্সিট সঙ্কট নিয়ে সৃষ্ট বিতর্কের জেরে গত মঙ্গলবার (৩ সেপ্টেম্বর) সরকারি দলের একজন আইনপ্রণেতার আচমকা দল ত্যাগ করায় এমন পরিস্থিতির উদ্ভব হয়েছে।

ফিলিপ লি নামে সেই আইনপ্রণেতা বরিস জনসন নেতৃত্বাধীন ক্ষমতাসীন কনজারভেটিভ পার্টি ত্যাগ করে এবার বিরোধী লিবারেল ডেমোক্র্যাট পার্টির সঙ্গে যোগ দিয়েছেন। তিনি ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) কট্টর সমর্থক হিসেবে পরিচিত।

এর আগে সম্প্রতি কনজারভেটিভ পার্টির আরেক পার্লামেন্ট সদস্য সারাহ ওলাস্টোনও নিজ দল ছেড়ে লিবারেল ডেমোক্র্যাট পার্টিতে যোগ দেন। মূলত এর মাধ্যমে গত মঙ্গলবার তার দেখানো পথই অনুসরণ করেন ফিলিপ লি। বিশ্লেষকদের মতে, ১৯৯৬ সালের পর এবারই প্রথম যুক্তরাজ্যে একটি সংখ্যালঘু সরকারের কাঁধে এই রাষ্ট্র পরিচালনার দায়িত্ব পড়েছে।

সদ্য দল ত্যাগী আইনপ্রণেতা ফিলিপ লি নিজের পদত্যাগপত্রে প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসনের নীতিমালার ব্যাপক সমালোচনা করেন। ১৯৯২ সালে কনজারভেটিভ পার্টিতে যোগ দেওয়া এই রাজনীতিবিদ বলেন, 'বরিস জনসনের নেতৃত্বে এখন কনজারভেটিভ পার্টিতে পপুলিজম (লোকরঞ্জনবাদ) ও ইংলিশ জাতীয়তাবাদের সংক্রমণ বৃদ্ধি পাচ্ছে; যা কারই কাম্য নয়। তাই আমি এখন এই দলে না থাকাকেই উত্তম বলে মনে করি।'

প্রধানমন্ত্রী বরিসের বিরুদ্ধে আগ্রাসী উপায়ে এবং অনৈতিকভাবে একটি ভঙ্গুর ব্রেক্সিট বাস্তবায়ন চেষ্টার অভিযোগ তোলে ফিলিপ লি বলেছেন, 'তার (জনসন) অধীনে কনজারভেটিভ পার্টি পুরোপুরি লোকরঞ্জনবাদ ও ইংলিশ জাতীয়তাবাদের রোগে সংক্রমিত হয়ে পড়েছে। তাছাড়া আমাদের অর্থনীতি, গণতন্ত্র এমনকি রাষ্ট্রের অখণ্ডতাকে ক্রমশ বিপদের মুখে ঠেলে দেওয়া হচ্ছে।'

এ দিকে ব্রিটিশ বিরোধী দল লেবার পার্টির জ্যেষ্ঠ নেতা জেরেমি করবিন বলেছেন, 'কোনো চুক্তি ছাড়াই ব্রেক্সিট কার্যকরের চেষ্টা করছেন প্রধানমন্ত্রী বরিস। অথচ পার্লামেন্টে সংখ্যাগরিষ্ঠতা হারানোর মাধ্যমে এখন তার সরকারের পক্ষে আর কোনো গণ রায়ই রইলো না।'

চুক্তিহীন ব্রেক্সিটের জন্য বরিস নেতৃত্বাধীন সরকারের চাপ প্রয়োগকে গণতন্ত্রের ওপর একটি নজিরবিহীন হামলা হিসেবে আখ্যায়িত করেন লেবার পার্টির এই নেতা। জেরেমি করবিনের ভাষায়, 'ব্রেক্সিট নিয়ে সরকারের পদক্ষেপ সম্পূর্ণ গণতন্ত্রবিরোধী ও অসাংবিধানিক। বরিস জনসনের এখন আর কোনো ম্যান্ডেট, নৈতিকতা ও সংখ্যাগরিষ্ঠতা নেই।'

যদিও দেশটির 'নো-ডিল' ব্রেক্সিট প্রস্তুতি বিষয়ক মন্ত্রী মাইকেল গোভ এরই মধ্যে স্বীকার করেছেন যে, 'একটি চুক্তিহীন ব্রেক্সিট আগামীতে নানা ধরনের চ্যালেঞ্জ তৈরি করবে। তবে এসব চ্যালেঞ্জ আলোচনার মাধ্যমে কমিয়ে আনা সম্ভব।'

অপর দিকে জাতিসংঘের বাণিজ্য ও উন্নয়ন বিষয়ক সংস্থা (ইউএনসিটিএডি) পর্যন্ত একটি চুক্তিহীন ব্রেক্সিট নিয়ে ব্যাপক উদ্বেগ জানিয়েছে। সংস্থাটির এক প্রতিবেদনে জানানো হয়, ব্রিটেন যদি কোনো ধরনের চুক্তি ছাড়াই ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) ত্যাগ করে তাহলে যুক্তরাজ্যকে অবশ্যই অন্তত ১৬ বিলিয়ন ডলারের রপ্তানি বাণিজ্য হারাতে হবে। আর যার পরোক্ষ ক্ষতির পরিমাণ হবে আরও অনেক বেশি।

যদিও লেবার পার্টির নেতা জেরেমি করবিন মনে করেন, 'প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন কখনোই জনগণের ভোটে নির্বাচিত প্রধানমন্ত্রী নন। তিনি কেবলই নিজ দলের সদস্যের ভোটে নির্বাচিত; তাই তাকে কোনোদিন গণতন্ত্রের পক্ষের লোক বলে বিবেচনা করা যাবে না।'

করবিনের ভাষায়, তিনি (বরিস) রাজনীতিতে সবসময়ই মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে অনুসরণ করছেন। আর এ কারণেই ব্রিটিশ জনগণ বর্তমানে স্বাস্থ্য, শিক্ষা ও চাকরিতে দুর্ভোগ পোহাচ্ছে।'

এর আগে চলতি বছরের মে মাসে ব্রেক্সিট ইস্যুতে কোনো ধরনের সমঝোতায় পৌঁছাতে না পারায় আচমকা পদত্যাগের ঘোষণা দেন ব্রিটেনের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী থেরেসা মে। মূলত তার সরে দাঁড়ানোর পর দেশটির নতুন নেতা তথা ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী হিসেবে নির্বাচিত হন কট্টর ব্রেক্সিটপন্থি নেতা বরিস জনসন।

আরও পড়ুন :- ভারতকে টুকরো টুকরো করবে পাকিস্তান

যদিও নির্বাচিত হওয়ার পর থেকে আগামী ৩১ অক্টোবর নির্ধারিত সময়ের মধ্যে বিতর্কিত ব্রেক্সিট চুক্তি বাস্তবায়নের ঘোষণা দিয়েছিলেন তিনি। প্রয়োজনে একটি চুক্তিহীন ব্রেক্সিট বাস্তবায়নেরও ইঙ্গিত দিয়েছিলেন তিনি।

ওডি/কেএইচআর

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া

 

সম্পাদকীয় কার্যালয় 

১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।

যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702 

ই-মেইল: [email protected]

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড