• বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১  |   ৩৩ °সে
  • বেটা ভার্সন
sonargao

জিডিপি প্রবৃদ্ধি ৫.৮ শতাংশ

৭০ বছরের রেকর্ড আর্থিক সঙ্কটে মোদীর ভারত

  আন্তর্জাতিক ডেস্ক

২৩ আগস্ট ২০১৯, ১৭:১১
ভারত
ছবি : দা প্রিন্ট

জম্মু-কাশ্মীরের স্বায়ত্তশাসন রোধ, দেশব্যাপী হিন্দু জাগরণের উদ্যোগ, সামরিক খাতকে ঢেলে সাজানো এবং মহাকাশ জয়ের মতো পদক্ষেপ নেয়া নরেন্দ্র মোদী নেতৃত্বাধীন বিজেপি সরকার, পাঁচ হাজার কোটি মার্কিন ডলার অর্থনীতিরও স্বপ্ন দেখিয়েছিল। কিন্তু, সেই স্বপ্নপূরণ তো দূরের কথা, দেশটির বর্তমান জিডিপির হার ধরে রাখাই দুঃস্বপ্নের মতো হয়ে দাঁড়িয়েছে। তেমনই অশনি সঙ্কেত শোনালেন দেশটির নীতি আয়োগের ভাইস চেয়ারম্যান রাজীব কুমার। তার মতে, এই পরিস্থিতিতেও সরকার কার্যত ঘুমিয়ে রয়েছে।

ভারতের আর্থিক ক্ষেত্রে গত ৭০ বছরে এমন সঙ্কটজনক পরিস্থিতি আসেনি বলে জানান রাজীব কুমার। এই 'অভূতপূর্ব' পরিস্থিতির মোকাবিলায় অবিলম্বে চিরাচরিত প্রথার বাইরে বেরিয়ে কোনো পদক্ষেপ না করলে দেশটির অর্থনীতির মেরুদণ্ডই ভেঙে পড়বে, এমন শঙ্কার কথাও শোনা গিয়েছে ভাইস চেয়ারম্যানের মুখে। অর্থাৎ ৩৭০ ধারা রদ, চিদম্বরমের গ্রেফতারির মতো জ্বলন্ত ইস্যুর অন্তরালে ভারতের শিল্পক্ষেত্রে যে রক্তক্ষয়ের চোরাস্রোত বয়ে চলেছে, তেমনই অশনি সঙ্কেত দিয়েছেন নীতি আয়োগ কর্তা।

অটোমোবাইল সেক্টর ধুঁকছে, বহু কর্মী ছাঁটাই করে বা ছাঁটাইয়ের পরিকল্পনা করে ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টা করছে অধিকাংশ সংস্থা। উৎপাদন ক্ষেত্রে ভাটা, নতুন কোনো শিল্প বা বিনিয়োগের রাস্তা তৈরি করা যাচ্ছে না। কিন্তু আদতে তার চেয়েও বেশি সঙ্কট ফাইনান্সিয়াল সেক্টরে অর্থাৎ আর্থিক শিল্পক্ষেত্রে। নীতি আয়োগের চেয়ারম্যানের বিশ্লেষণ, 'সরকারের কাছে এটা এক অভূতপূর্ব পরিস্থিতি। গত ৭০ বছরে মূলধনের এই রকম পরিস্থিতি (সঙ্কটজনক) হয়নি, যেখানে গোটা আর্থিক ক্ষেত্র প্রচণ্ড চাপের মধ্যে পড়েছে।'

কিন্তু, এই ডুবন্ত পরিস্থিতির কারণ হিসেবে যা উল্লেখ করেছেন প্রাজ্ঞ অর্থনীতিবিদ রাজীব কুমার, সেটা মোদী সরকারকে অস্বস্তিতে ফেলার পক্ষে যথেষ্ট। তার মতে, 'গোটা খেলাটা পাল্টেছে গত চার বছরে। নোটবন্দি, জিএসটি এবং দেউলিয়া বিধি পরিবর্তন। তার আগে পর্যন্ত ১০, ২০, ৩০, ৩৫ শতাংশ নগদ বাজারে লেনদেন চলত। কিন্তু এখন সেই পরিমাণ অনকেটাই কমে গিয়েছে।'

ভারতের নীতি আয়োগের ভাইস চেয়ারম্যান রাজীব কুমার। ছবি : সংগৃহীত

বাজারে নগদ মূলধনী লেনদেন ও বিনিয়োগের অবস্থা ব্যাখ্যা করতে গিয়ে তিনি বলেন, 'কেউ কাউকে বিশ্বাস করতে পারছে না। এই পরিস্থিতি শুধু সরকার ও বেসরকারি ক্ষেত্রের মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়। বেসরকারি ক্ষেত্রেই একে অন্যের মধ্যে কেউ কাউকে ধার দিতে চাইছে না। সরকার নিশ্চয়ই বুঝতে পারছে যে সমস্যাটা আর্থিক ক্ষেত্রে। মূলধন ধীরে ধীরে দেউলিয়া হয়ে যাচ্ছে। সেটা থামানো দরকার।'

নীতি আয়োগের নম্বর টু সরকারকে সাবধান করে দিয়ে বলেছেন, পরিস্থিতি যেহেতু ভয়ঙ্কর, তাই তার মোকাবিলায় পদক্ষেপও করতে হবে অভূতপূর্ব। কোন উপায়ে ঘুরে দাঁড়ানো সম্ভব, তার নির্দিষ্ট পদ্ধতি না বললেও মোদ্দা কথায় দুটি নির্দিষ্ট পদক্ষেপের কথা বলেছেন। 'এক, এমন কোনো পদক্ষেপ যা চিরাচরিত বা প্রথাগত নয়। দ্বিতীয়ত, আমি মনে করি, বেসরকারি ক্ষেত্রের আস্থা ফেরাতে সরকারের যা কিছু করা সম্ভব, তেমন সব কিছু করতে হবে।'

ভয়াবহ এই সঙ্কটের ছাপ পড়েছে ভারতের গ্রস ডোমেস্টিক প্রোডাক্ট বা জিডিপি-তেও। ৩১ মার্চ শেষ হওয়া গত আর্থিক বছরে জিডিপি বৃদ্ধির হার ছিল ৬ দশমিক ৮ শতাংশ। তার মধ্যে জানুয়ারি থেকে মার্চ শেষ ত্রৈমাসিকে এই হার ছিল ৫ দশমিক ৮ শতাংশ।

মারাত্মক প্রভাব পড়েছে শেয়ার বাজারেও। আর্থিক সমীক্ষক সংস্থা নমুরা পূর্বাভাস দিয়েছে এপ্রিল-জুন এই ত্রৈমাসিকে জিডিপির এই হার আরও কমে নেমে যেতে পারে ৫ দশমিক ৭ শতাংশে। নমুনার রিপোর্টে এই নিম্নগতির কারণ হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে, ভোগ্যপণ্যের ক্রেতা কম, দুর্বল বিনিয়োগ, সার্ভিস সেক্টরের খারাপ পারফরম্যান্স।

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া

 

সম্পাদকীয় কার্যালয় 

১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।

যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702 

ই-মেইল: [email protected]

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড