আন্তর্জাতিক ডেস্ক
কোনো পুরুষ অভিভাবকের অনুমতি ছাড়াই সৌদি নারীরা এখন বিদেশ ভ্রমণ করতে পারবেন বলে রাজকীয় আদেশে ঘোষণা করা হয়েছে। কোনো ধরনের পুরুষ অভিভাবকের কর্তৃত্ব ছাড়াই এখন থেকে ২১ বছরের বেশি বয়সী নারীরা পাসপোর্টের জন্য আবেদন করতে পারার নতুন নিয়মটি শুক্রবার (২ আগস্ট) ঘোষণা দেয়া হয়।
সৌদি আরবের সমস্ত প্রাপ্তবয়স্করা এখন থেকে পাসপোর্ট এবং ভ্রমণের জন্য নিজেরাই আবেদন করতে পারবেন এবং নারীদের পুরুষদের সমান মর্যাদা দিতে এই পদক্ষেপে যুগান্তকারী এক সিদ্ধান্ত মুসলিমদের তীর্থস্থানটিতে। নারীদের জন্ম, বিবাহ বা বিবাহবিচ্ছেদের নিবন্ধনের অধিকারও দেয়া হয় রাজকীয় আদেশটিতে।
এই আদেশে কর্মসংস্থান বিধিমালাও অন্তর্ভুক্ত, যা নারীদের জন্য কাজের সুযোগগুলো প্রসারিত করবে। সৌদির নতুন নিয়মের অধীনে, সব নাগরিক লিঙ্গ, প্রতিবন্ধী বা বয়সের ভিত্তিতে কোনো বৈষম্যের মুখোমুখি না হয়ে কাজ করার অধিকার প্রাপ্ত হবে।
এখনো অবধি সৌদি নারীদের পাসপোর্ট পেতে বা বিদেশ ভ্রমণ করার জন্য একজন পুরুষ অভিভাবকের কাছ থেকে অনুমতি নিতে হচ্ছে। এসব কাজের জন্য সৌদি নারীদের একজন স্বামী, পিতা বা অন্যান্য পুরুষ আত্মীয়ের প্রয়োজন হয়।
সৌদি শাসক মুকুট প্রিন্স মোহাম্মদ বিন সালমান দেশটিতে অনেক নিষেধাজ্ঞাগুলো কমিয়ে এনেছেন, যেমন সবার জন্য দেশকে উন্মুক্ত করার একটি বড় ধাপের অংশ হিসেবে সৌদি নারীদের গাড়ি চালানোর ওপর নিষেধাজ্ঞা তুলে নিয়েছেন।
এই পরিকল্পনা মোহাম্মদ বিন সালমানের দীর্ঘকালীন এক স্বপ্নের বাস্তবায়নের প্রারম্ভ। ২০৩০ সালের মধ্যে অর্থনীতিকে রূপান্তর করার একটি পরিকল্পনা উন্মোচন করেছিলেন ২০১৬ সালে, যার লক্ষ্য ছিল কর্মশক্তিতে নারীদের অংশগ্রহণ ২২ শতাংশ থেকে ৩০ শতাংশে উন্নিত করা। যদিও এখন পর্যন্ত লিঙ্গ নির্যাতনের দাবি উল্লেখ করে কানাডার মতো দেশগুলোতে আশ্রয় চেয়ে আবেদন করে আছে সৌদির বেশ কিছু হাই প্রোফাইল নারীরা।
২০১৯ সালের জানুয়ারিতে কানাডা রাহাফ মোহাম্মেদ নামের এক আঠারো বছরের নারীর আশ্রয় প্রার্থনাকে মঞ্জুর করেছে। সে সৌদি থেকে অস্ট্রেলিয়া পালিয়ে যেতে চেয়েছিল। থাইল্যান্ডের রাজধানী ব্যংককের আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের একটি আবাসিক কক্ষে বসে সে আন্তর্জাতিক সহায়তা দাবি করেছিল।
নারীদের দ্বিতীয় শ্রেণির নাগরিক হিসেবে বিবেচনা করা হয় বলে আন্তর্জাতিক অধিকার সংস্থাগুলো সৌদি আরবের বিরুদ্ধে প্রায়ই অভিযোগ আনে। সৌদিসহ মুসলিম প্রধান দেশগুলোতে নারী-পুরুষ বৈষম্য এক প্রধান সঙ্কট। একটা দেশের উন্নতির জন্য এই বৈষম্য হ্রাস অপরিহার্য যা অনেক দেরিতে হলে সৌদি যুবরাজ সে বিষয়টি উপলব্ধি করতে পেরেছেন। সৌদি অর্থনীতিতে বিশাল পরিবর্তন আনার পরিকল্পনার অংশ হিসেবে তাই দেশটির বহুকালের কুক্ষিগত নীতিমালার পরিবর্তন আনা হচ্ছে।
নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া
সম্পাদকীয় কার্যালয়
১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।
যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702
ই-মেইল: [email protected]
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।
Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড