আন্তর্জাতিক ডেস্ক
বাংলাদেশ সীমান্ত সংলগ্ন ভারতের পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্য ত্রিপুরার এক গোশালায় অন্তত একশ ৫৯টি গরুর মৃত্যু হয়েছে। ভারতীয় গণমাধ্যমের দাবি, সীমান্ত দিয়ে অবৈধভাবে বাংলাদেশে পাচারের সময়ে গরুগুলোকে উদ্ধার করেছিল দেশটির সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিএসএফ।
পরবর্তীতে স্থানীয় একটি গোশালায় পশুগুলোকে রাখার পর সেখানে যথাযথ পরিকাঠামো ও পর্যাপ্ত গোখাদ্যের অভাবে গরুগুলো মারা যায় বলে জানা গেছে। দিল্লির এক দাতব্য সংস্থা গোশালাটির পরিচালনার দায়িত্বে আছে।
কর্তৃপক্ষের দাবি, বছর খানেক আগেও পাচারের সময়ে প্রায় আটশ ৫০টির বেশি গরু উদ্ধার করেছিল বিএসএফ। পরবর্তীতে গরুগুলোকে শ্রীনগর, ফটিকছেড়া, কুলুবাড়ি, হরিহরডৌলা, কামথানা, কাইয়াঢেপা এবং আরও বেশ কয়েকটি বর্ডার আউটপোস্টে রাখা হয়।
যদিও তখন ব্যাপক পরিকাঠামোর অভাবে বিএসএফের পক্ষ থেকে পুলিশের কাছে সাহায্য চাওয়া হয়। তবে পুলিশের কাছেও তেমন কোনো পরিকাঠামো না থাকায় তাৎক্ষণিক বিষয়টি সমাধানে এগিয়ে আসে দিল্লির ধ্যান ফাউন্ডেশন। তারা আগরতলা থেকে ২২ কিলোমিটার দূরে সিপাহীজলা জেলার দেবীপুর গ্রামে একটি বিরাট গোশালা নির্মাণ করে।
এ দিকে ভারতীয় সুপ্রিমকোর্টের আগের নির্দেশনা অনুযায়ী উদ্ধারকৃত গরুর সম্পূর্ণ রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্ব রাজ্য সরকারের। যে কারণে গবাদি পশু পাচার রোধে সীমান্ত সংলগ্ন রাজ্য সরকারগুলোকে যথাযথ ব্যবস্থা নিতে আদালত থেকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল।
ত্রিপুরা সরকার আদালতের এ নির্দেশ পালনে ব্যর্থ হওয়ায় দিল্লির সেই স্বেচ্ছাসেবী সংস্থাটি দেবীপুর গ্রামের প্রায় ৩৬০ একর বনভূমির মধ্যে মোট ৪ একর জায়গা নিয়ে গোশালাটির নির্মাণ করে। এ ব্যাপারে তাদের রাজ্য সরকারের সঙ্গেও একটি সমঝোতা হয়।
অপর দিকে ধ্যান ফাউন্ডেশনের গোশালার ভলান্টিয়ার ইনচার্জ জোশিন অ্যান্টনি গণমাধ্যম 'ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস'কে বলেন, 'আমাদের নির্মাণ করা গোশালাটিতে পর্যাপ্ত পরিমাণ গরু রাখার স্থান নেই। তাছাড়া বর্তমানে এখানে গরুর খাদ্যের ব্যাপক সঙ্কট দেখা দিয়েছে। পাশের সরকারি জমিতে গরুগুলোকে রাখার জন্য নিয়ে যাওয়া হলে কর্তৃপক্ষ সেখানে একটি ব্যারিকেড নির্মাণ করে দেয়।'
গোশালাটির ভলান্টিয়ার ইনচার্জ আরও বলেন, 'সরকার আমাদের কাছে পর্যাপ্ত ওষুধ বা পশু-চিকিৎসার জন্য এখনো কোনো ধরনের সাহায্য করেনি। তাই এক রকম অযত্ন ও অবহেলায় পশুগুলোর মৃত্যু হচ্ছে।'
ধ্যান ফাউন্ডেশনের এ কর্মকর্তা বলেন, 'গোশালায় এক সঙ্গে মোট ৩০০টি গরু রাখার ব্যবস্থা থাকলেও সেখানে এখন মোট সাতশর বেশি গরু রাখা হচ্ছে। যে কারণে অধিকাংশ গরুকেই এখন খোলা আকাশের নিচে থাকতে হচ্ছে। ফলে চলতি মাসের প্রথম দুই সপ্তাহে ক্রমাগত বৃষ্টিতে ভিজে হাইপারথেমিয়ায় মোট ৪৫টি গরুর মৃত্যু হয়েছে। তাছাড়া অপুষ্টি এবং ভগ্ন স্বাস্থ্যের কারণে ১০৪টি গরু মারা গেছে।'
আরও পড়ুন :- দাবানলে পুড়ছে পর্তুগালের বনাঞ্চল
অভুক্ত এসব গরুগুলোর তাদের খিদে নষ্ট করার জন্য পশুগুলোকে ব্যাপক পরিমাণে কপার সালফেট এবং স্টেরয়েজ খাওয়ানো হচ্ছে। এসব ওষুধের পার্শ্ব প্রতিক্রিয়ায় অনেক গরুই ইতোমধ্যে অসুস্থ হয়ে পড়েছে বলে দাবি গোশালার ভলান্টিয়ার ইনচার্জের।
ওডি/কেএইচআর
নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া
সম্পাদকীয় কার্যালয়
১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।
যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702
ই-মেইল: [email protected]
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।
Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড