• বুধবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১  |   ৩৮ °সে
  • বেটা ভার্সন
sonargao

স্ত্রী-সন্তানকে পেতে অস্ট্রেলিয়ায় উইঘুর পিতার আর্তনাদ

  আন্তর্জাতিক ডেস্ক

১৭ জুলাই ২০১৯, ১৬:৩৫
উইঘুর
সাদাম আবুদ্দাসালামু, স্ত্রী নাদিলা ওয়ুমাইয়া এবং তাদের দুবছরের সন্তান লুৎফি। ছবি : সংগৃহীত

নিজের সন্তান ও সন্তানের মাকে দেশত্যাগের অনুমতি দিতে অস্ট্রেলিয়া সরকারের মাধ্যমে চীনকে অনুরোধ করেছে এক উইঘুর পিতা। চীনের বিরুদ্ধে জিনজিয়াং প্রদেশে সংখ্যালঘু মুসলিম উইঘুর সম্প্রদায়ের ১০ লক্ষাধিক মানুষকে আটক করে রাখার অভিযোগ রয়েছে। চীন এই অভিযোগ অস্বীকার করে একে 'কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্র' বলে দাবি করে আসছে।

অস্ট্রেলিয়ান উইঘুর আদিবাসী সাদাম আবুদ্দাসালামু তার স্ত্রী ও শিশুসন্তানকে দেশত্যাগের অনুমতি দিতে আহ্বান জানান। যে সন্তানকে তার পিতা স্বচক্ষে দেখেনি, তাদের ভ্রমণের নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করে সিডনি যাওয়ার অনুমতি চায় অস্ট্রেলিয়া। চীন এখনও অনুরোধের বিপরীতে কোনো মন্তব্য করেনি।

চলতি বছরে শুরুতে জনাব আবুদ্দাসালামু সফলভাবে তার দুই বছরের পুত্র লুৎফির জন্য অস্ট্রেলিয়ান নাগরিকত্ব অর্জন করেছিলেন। লুৎফির মা, নাদিলা ওয়ুমাইয়ার একজন চীনা নাগরিক।

২৯ বছর বয়সী এই দুর্ভাগা পিতা তার পরিবারকে একত্রিত করতে কয়েক মাস ধরে প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছেন, কিন্তু এই সপ্তাহের আগ পর্যন্ত তিনি তার পরিচয় জনসাধারণের কাছে প্রকাশ করেনি। সম্প্রতি তিনি সম্প্রচারকারী এবিসি-কে দেয়া এক সাক্ষাৎকার নিজের পরিচয় দেন।

তখন থেকে আবুদ্দুসালামু বলেন, তার স্ত্রী চীনের পশ্চিমাঞ্চলীয় জিনজিয়াং অঞ্চলে চীনা কর্তৃপক্ষের দ্বারা সংক্ষিপ্তভাবে আটক ছিল এবং পরে তাকে মুক্তি দেয়াও হয়েছিল। তবে, তারা দেশ ত্যাগের অনুমতি না পাওয়ায় পরিবারটি একত্র হতে পারেনি।

বুধবার (১৭ জুলাই) বেইজিংয়ের অস্ট্রেলিয়ান দূতাবাসের কর্মকর্তারা আনুষ্ঠানিকভাবে লুৎফি ও তার মাকে অস্ট্রেলিয়া যাওয়ার অনুমতি দেয়ার জন্য অনুরোধ করেছিলেন। আবুদ্দুসালামু বিবিসিকে বলেন, তিনি অস্ট্রেলিয়ার কূটনৈতিক প্রচেষ্টার ব্যাপারে ইতিবাচক, তবে 'একজন বাবা ও স্বামী হিসেবে এখনও আমার অনেক কিছু প্রয়োজন'।

অস্ট্রেলিয়ান ও চীনা মন্ত্রীরা সরাসরি কথা বলবে বলে তিনি আশা রাখেন। তিনি উরুমকি শহরে তার ছেলের কাছে অস্ট্রেলিয়ান কর্মকর্তাদের প্রবেশের অনুমতি দেয়া হবে বলেও আশা করছেন।

তার পরিচয় প্রকাশ করার আগে, আবুদ্দুসালামু ভীত থাকার কথা বলেন। তার ছেলে যদি চীনে থেকে যায় তাহলে অন্য কোনো পরিবার কর্তৃক তাকে দত্ত্বক দেয়া হতে পারে বলে ভয় পাচ্ছেন। নাদিলা ও আবুদ্দুসালামু শৈশবের প্রেম থেকে ২০১৬ সালে জিনজিয়াং-এ বিয়ে করেন। এরপর তিনি অস্ট্রেলিয়া আশ্রয় নিয়ে কয়েকবছর সেখানেই থেকে যান।

ছবি : সংগৃহীত

গত সপ্তাহে জাতিসংঘের কাছে মুসলিম সংখ্যালঘুদের প্রতি চীনের আচরণের সমালোচনা করে ২২টি দেশের স্বাক্ষর করা যৌথ চিঠি উপস্থাপন করে। অস্ট্রেলিয়াও স্বাক্ষর করেছে। এই চিঠিতে 'জিনজিয়াংয়ের উইঘুর এবং অন্যান্য সংখ্যালঘুদের লক্ষ্যবস্তু করে আটক রাখাসহ ব্যাপকভাবে নজরদারি ও বিধিনিষেধ' আরোপের কথা প্রতিবেদন উদ্ধৃত করা হয়।

চীন ধারাবাহিকভাবে এই ধরনের অভিযোগকে প্রত্যাখ্যান করে আসছে এবং এই অঞ্চলে চরমপন্থার বিরুদ্ধে লড়াই করার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে বলে দাবি করে। গত সপ্তাহে উত্তর কোরিয়া, রাশিয়া ও সৌদি আরবসহ ৩৭টি দেশের জাতিসংঘের রাষ্ট্রদূত জিনজিয়াংয়ের চীনের নীতিগুলো রক্ষায়ও একটি চিঠি উপস্থাপন করে।

অস্ট্রেলিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী মারিস পেইন বলেন, নাদিলার কাছে যাওয়ার জন্য তার রাষ্ট্রের অধিকার নাই, কারণ সে একজন চীনা নাগরিক।

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া

 

সম্পাদকীয় কার্যালয় 

১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।

যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702 

ই-মেইল: [email protected]

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড