ইউনেস্কোর বিশ্ব ঐতিহ্য তালিকায় যুক্ত হওয়া নতুন সাত নাম

বিশ্বের প্রাকৃতিক নিদর্শন ও নানা ধরনের গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনাকে গুরুত্ব অনুযায়ী বিশেষ মর্যাদা দেওয়া হয় প্রতি বছর। এ বছর কোন কোন স্থাপনা এ তালিকায় স্থান পেয়েছে তার জন্য আজারবাইজানের বাকুতে ৪৩তম বৈঠকে বসেছিল ইউনেস্কোর বিশ্ব ঐতিহ্য কমিটি।

ইউনেস্কোর বিশ্ব ঐতিহ্য কমিটির নেওয়া সিদ্ধান্ত অনুযায়ী তালিকায় যুক্ত হওয়া নতুন কয়েকটি বিশ্ব ঐতিহ্যের নাম:

ভাখনাইওকুল ন্যাশনাল পার্ক, আইসল্যান্ড

আইসল্যান্ডের ভাখনাইওকুল ন্যাশনাল পার্কটি মোট সীমানার ১৪ শতাংশ জুড়েই রয়েছে। এই অঞ্চলটি পুরোটাই বরফে আচ্ছাদিত। এছাড়াও এখানে বিশাল এক অঞ্চল জুড়ে রয়েছে শুকিয়ে যাওয়া অগ্নুৎপাত। বরফ আর আগ্নেয়গিরির বৈশিষ্ট্য সম্বলিত এই পুরো অঞ্চলটি বেশ আকর্ষণীয় আর সাথে দৃষ্টিনন্দনও বটে। এই অসাধারণ বৈশিষ্ট্যের জন্যই এবার এই জায়গাটি স্থান করে নিয়েছে বিশ্ব ঐতিহ্যের তালিকায়।

ভাখনাইওকুল ন্যাশনাল পার্ক, আইসল্যান্ড (ছবি: গেটি ইমেজ)

অস্ট্রাল ভূমি ও সমুদ্র, ফ্রান্স

ফ্রান্সের এই অঞ্চলটিতে রয়েছে অনেকগুলো দ্বীপ। এখানে বাস করে বিশ্বের সবচাইতে বেশি পাখি এবং সামুদ্রিক স্তন্যপায়ী প্রাণি। এই এলাকায় আরও দেখা পাওয়া যায় বিরল কিং পেঙ্গুইন।

অস্ট্রাল ভূমি ও সমুদ্র, ফ্রান্স (ছবি: গেটি ইমেজ)

জয়পুর নগরী, ভারত

'পিংক সিটি' হিসেবে বিশ্বব্যাপী পরিচিত ভারতের জয়পুর শহর পর্যটকদের কাছে বেশ জনপ্রিয়। এ শহরের নাম 'পিংক সিটি' বা 'গোলাপি নগর' বলার কারণ হচ্ছে নগরীর ভবনগুলোকে দূর থেকে গোলাপি বর্ণের মনে হয়। শহরটির বেশ কয়েকটি পর্যটক প্রিয় স্থান হলো চিত্তর গড়, জন্তর মন্তর, আম্বার প্যালেস, সিটি প্যালেস ও হাওয়া মহল।

জয়পুর নগরী, ভারত (ছবি: ইন্ডিয়া টুডে)

শহরটির সংস্কৃতি, ইতিহাস ও মার্বেলের স্থাপত্যের জন্য এর খ্যাতি বিশ্বব্যাপী। এখানে রয়েছে বহু প্রাচীন ভবন। এমনকি শহরটি প্রথম যখন প্রতিষ্ঠা হয় সেই ১৭২৭ সালের সময়কার ভবনও রয়েছে। এসব ভবনের প্রতিটিই দারুণ কারুকার্য খচিত।

প্রাচীন সমাধি, জাপান

জাপানের ওসাকা শহরে এরকম মোট প্রাচীন সমাধির সংখ্যা ৪৯। নানা আকৃতির এই সমাধিগুলোর বেশিরভাগই তৈরি হয়েছে তৃতীয় থেকে ষষ্ঠ শতাব্দীতে।

প্রাচীন সমাধি, জাপান (ছবি: গেটি ইমেজ)

এই ছবিতে থাকা তালার ছিদ্র আকৃতির সমাধিটির নামকরণ করা হয়েছে ২৯০ খ্রিষ্টাব্দে জন্মানো সম্রাট নিনতোকুর নামে। এটি জাপানের সর্ববৃহৎ সমাধি।

ব্যাবিলন, ইরাক

ইরাকে অবস্থিত প্রাচীন মেসোপটেমিয়া নগরীকে ইউনেস্কোর বিশ্ব ঐতিহ্য তালিকায় অন্তর্ভুক্তির জন্য বেশ অনেকদিন ধরেই চেষ্টা করছিল ইরাক কর্তৃপক্ষ। অবশেষে সেই চেষ্টা সফলতার মুখ দেখল এবারের আসরে। ইরাকের ব্যাবিলন এখন বিশ্ব ঐতিহ্য তালিকায় অন্যান্য নামের সাথে যুক্ত আরেকটি নাম।

ইরাকের ব্যবিলন নগরী (ছবি: বিবিসি)

দেশটির যুদ্ধ ও সংঘাতময় রাজনীতির কারণে ব্যাবিলন নগরীকেও সইতে হয়েছে এর পরিণাম। বেশ ক্ষতি আর বিপর্যয়ের দশাতেই রয়েছে এই নগরীটি। তবে সম্প্রতি এর পুরনো ঐতিহ্য আর গৌরব সংরক্ষণে নানা ধরনের কাজ চলছে।

বাগান, মিয়ানমার

মিয়ানমারের প্রাচীন রাজধানীর নাম বাগান। এই শহরটি এবার জায়গা করে নিয়েছে বিশ্ব ঐতিহ্যের তালিকায়।

মিয়ানমারের প্রাচীন রাজধানী বাগান (ছবি: গেটি ইমেজ)

ছবিতে প্রদর্শিত চিত্রগুলো বাগানের বৌদ্ধমন্দির। সবুজ প্রকৃতিতে থাকা এমন মন্দিরগুলো বেশ আগে থেকেই পর্যটকদের কাছে জনপ্রিয়।

বয়াম সদৃশ প্রাচীন স্থাপনা, লাওস

বয়াম সদৃশ এই প্রাচীন স্থাপনাগুলো কেন তৈরি হয়েছিল সে বিষয়ে এখনো কিছুটা রহস্য রয়ে গেছে। অনেক প্রত্মতত্ত্ববিদ মনে করেন, এই স্থাপনাগুলো সম্ভবত ব্যবহার করা হত মরদেহ সৎকারে। অনেকের মতে, এগুলো তৈরি হয়েছিল লৌহ যুগে।

লাওসের বয়াম সদৃশ প্রাচীন স্থাপনা (ছবি: গেটি ইমেজ)

লাওসের ঝিংখাওয়াং অঞ্চলে পাথর দিয়ে তৈরি এরকম হাজার হাজার বয়াম সদৃশ বস্তু রয়েছে।

তথ্যসূত্র: বিবিসি বাংলা

ওডি/এএন