• শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১  |   ৩২ °সে
  • বেটা ভার্সন
sonargao

হংকংয়ে বিক্ষোভ : ক্ষমা চাইলেন চীনপন্থি শাসক

  আন্তর্জাতিক ডেস্ক

১৭ জুন ২০১৯, ১১:৩১
হংকং-এর শাসক
হংকংয়ের চীনপন্থি শাসক ক্যারি ল্যাম। (ছবিসূত্র : ওয়াল স্ট্রিট জার্নাল)

ব্যাপক বিক্ষোভের মুখে লাখো জনতার সামনে ক্ষমা চাইলেন হংকংয়ের চীনপন্থি শাসক ক্যারি ল্যাম। এর আগে তিনি আসামি প্রত্যর্পণ বা বহিসমর্পণ বিষয়ক বিতর্কিত বিলের কার্যক্রম সাময়িকভাবে স্থগিতের ঘোষণা দিয়েছিলেন। এত কিছুর পরও সাধারণ জনগণের এই আন্দোলন অব্যাহত থাকায় উদ্ভূত পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে শেষ পর্যন্ত ক্ষমা চাইলেন এই নেতা।

এ দিকে গত রবিবারের (১৬ জুন) বিক্ষোভে ক্যারি ল্যামের পদত্যাগের দাবি তোলেন আন্দোলনরত লোকজন। এ সময় তারা বিতর্কিত বিলটি স্থগিতের পরিবর্তে স্থায়ীভাবে বাতিলেরও দাবি জানান। পরে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে এক বিবৃতিতে হংকংয়ের সকল জনগণের কাছে ক্ষমা চান ক্যারি ল্যাম।

ব্রিটিশ গণমাধ্যম ‘দ্য গার্ডিয়ান’ এক প্রতিবেদনে জানায়, কথিত সেই অপরাধী প্রত্যর্পণ বিলে কোনো কাটছাঁট করা হবে না বলে অনেক আগেই জানিয়েছিলেন চীনা সমর্থিত শাসক ক্যারি ল্যাম। যদিও দীর্ঘ আন্দোলনের পর বিলটি স্থগিতসহ জনগণের কাছে ক্ষমা চাইতে বাধ্য হন তিনি।

সম্প্রতি সরকারের অপরাধী প্রত্যর্পণ সংক্রান্ত প্রস্তাবিত বিলটির বিপক্ষে হংকংয়ের বিভিন্ন শহরে শুরু হওয়া বিক্ষোভ ব্যাপক ধীরে ধীরে আকার বৃদ্ধি করে গোটা দেশে ছড়িয়ে পড়ে। এতে আন্দোলনরতদের মূল ক্ষোভ চীনের সঙ্গে সমঝোতা ইস্যুতে।

তাদের অভিযোগ, বেইজিংপন্থি এই শাসকের প্রস্তাবিত এই বিলে সন্দেহভাজন অপরাধীকে চীন এবং তাইওয়ানে ফেরত পাঠানোর পথ সুগম করা হচ্ছে। যার মাধ্যমে দেশের আইনকে দুর্বল এবং মানবাধিকার হরণ হবে। তারা মনে করছেন, বিলটি পাস হলে তা হংকংয়ের অভ্যন্তরীণ রাজনীতিতে চীনের হস্তক্ষেপ বৃদ্ধি পাবে। তাই দেশের স্বার্থে বিলটি পুরোপুরি বাতিল করাই সরকারের জন্য উত্তম।

হংকং বিক্ষোভ

হংকং’য়ে বিতর্কিত আইন বাতিলের দাবিতে ব্যাপক বিক্ষোভ। (ছবিসূত্র : ওয়াল স্ট্রিট জার্নাল)

এর প্রেক্ষিতে রবিবার সিভিল হিউম্যান রাইটস ফ্রন্টের প্রধান জিমি শাম সাংবাদিকদের বলেছিলেন, 'আমরা সরকারের কাছে এ তথ্যই পাঠাতে চাই যে, হংকংয়ের জনগণ এবারের আন্দোলনকে থামাতে চায় না। তাই এ আইন পুরোপুরি প্রত্যাহার না করা পর্যন্ত তারা সরকারের বিরুদ্ধে এই আন্দোলন চালিয়ে যাবে।'

বিক্ষোভে অংশ নেওয়া জনতার সামনে তিনি বলেন, 'আমাদের আগের পরিকল্পনা অনুযায়ী আজকের (রবিবার) সমাবেশ চলবে; এবং সেই একইভাবে আগামীতেও আমাদের এই আন্দোলন চালিয়ে যাওয়া হবে।'

অপর দিকে গত শনিবার (১৫ জুন) এক সংবাদ বিবৃতিতে ক্যারি ল্যাম বলেছিলেন, 'বিক্ষোভের পর বিগত দুই দিনের অভ্যন্তরীণ আলোচনায় প্রস্তাবিত আইন সংশোধনীর প্রচেষ্টা স্থগিত করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে হংকং সরকার। এই আইনের সিদ্ধান্ত গ্রহণের জন্য আরও সময় নেওয়ার পক্ষে বেইজিং থেকে সমর্থন পাওয়া গেছে।'

তিনি এও বলেছেন, 'এই বিলের কারণে সমাজে নানা বিভেদ দেখা দিয়েছে। তবে বিক্ষোভকারীদের দাবি অনুযায়ী আইনটি একেবারে বাদ দেওয়া যাবে না। কারণ অধিকাংশ আইন প্রণেতা এখন পর্যন্ত এই আইনের পক্ষেই নিজেদের মত দিয়েছেন।'

এর আগে গত শুক্রবার রাতে সরকারের উপদেষ্টাদের সঙ্গে এক জরুরি বৈঠক করেছিলেন ক্যারি ল্যাম। যেখানে তার দলের জ্যেষ্ঠ রাজনৈতিক নেত্রীবৃন্দ চলমান বিক্ষোভ প্রশমিত করতে বিলটি থেকে অবিলম্বে তাকে সরে আসার পরামর্শ দিয়েছিল।

আরও পড়ুন :- আইন স্থগিতের পরও হংকংয়ে বিক্ষোভ অব্যাহত

যদিও এতদিন ক্যারি ল্যাম দাবি করেছিলেন, দেশের স্বার্থে আইনটির প্রয়োজন রয়েছে। কেননা এতে মানবাধিকারের রক্ষাকবচগুলো যুক্ত করা হয়েছে। তার মতে, প্রস্তাবিত এই আইনটি কখনই বেইজিংয়ের পক্ষ থেকে তোলা হয়নি। মূলত বিবেকের তাড়নায় এবং হংকংয়ের প্রতি অঙ্গীকার থেকেই তিনি প্রস্তাবটি উত্থাপন করেছিলেন। যদিও শেষ পর্যন্ত দেশব্যাপী ব্যাপক বিক্ষোভের মুখে নিজের অনড় অবস্থান থেকে সরে আসতে বাধ্য হন চীন সমর্থিত এই শাসক।

ওডি/কেএইচআর

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া

 

সম্পাদকীয় কার্যালয় 

১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।

যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702 

ই-মেইল: [email protected]

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড