আন্তর্জাতিক ডেস্ক
ভারতের আসাম রাজ্যে চলছে উচ্ছেদ অভিযান। তবে বর্তমান বিজেপি সরকার ‘অনুপ্রবেশকারী’ নয়, বরং খোদ ভারতীয় নাগরিকদেরই উচ্ছেদ করতে শুরু করেছে। পূর্বের ন্যায় এবারও অভিযানের মূল লক্ষ্য আসামে বসবাসকারী সংখ্যালঘু মুসলিমরা।
একেক সময় একেক স্থানে উচ্ছেদ অভিযান চলে। বর্তমানে অভিযান চলছে বরাক উপত্যকায়। এই উচ্ছেদ অভিযানের জন্য অবশ্য একটি যুক্তি দেখাচ্ছে আসাম সরকার। তারা বলছে- বনাঞ্চলের জমিতে এই নাগরিকরা ঘরবাড়ি তৈরি করে বসবাস করছে। বনাঞ্চলের খালি জমিতেও বসবাস অবৈধ।
পূর্বে ওড়িশা– উত্তরপ্রদেশ– মধ্যপ্রদেশ– গুজরাত প্রভৃতি এলাকার বনাঞ্চল থেকেও আইনগতভাবে ভূমিপুত্র আদিবাসী ও উপজাতিদের উচ্ছেদের ব্যবস্থা করা হয়েছিল। আসামে এই উচ্ছেদ অভিযানের কাজে ব্যবহার করা হয় প্রশিক্ষিত হাতি। কারণ, পথ দুর্গমতার কারণে সেখানে বুলডোজার ব্যবহার করা সম্ভব হয় না।
সম্প্রতি এই উচ্ছেদ অভিযানের সময়ই ঘটেছে এক অবাক করা ঘটনা। কাছাড় জেলার ধলাই-রজনীখালে চলছিল উচ্ছেদ। বনবিভাগের প্রশিক্ষিত হাতি, কর্মী আর পুলিশরা গত কয়েকদিন ধরেই ওই এলাকার প্রায় ১০০টি পরিবারের বাড়িঘর ভেঙে দেয়। এই অভিযানে ব্যবহার করা হয় ১০টি হাতি।
কিন্তু স্থানীয় একটি মসজিদ ভাঙার সময় ঘটে অদ্ভুত ঘটনা। দেখা যায় একটি হাতিও সেই মসজিদ ভাঙতে রাজি হচ্ছিল না। গত ৭ জুন বনবিভাগের নির্দেশ অনুযায়ী প্রশিক্ষিত এই হাতিগুলো ঘরবাড়ি উচ্ছেদ করে। কিন্তু ওই গ্রামের মসজিদের সামনে এসে দাঁড়িয়ে পড়ে তারা। এরপর বসেও যায়।
উচ্ছেদ অভিযানের পরিচালক জেলা বনবিভাগের আধিকারিক সানিদেও চৌধুরি এবং পুলিশ অধিকর্তারা বহু চেষ্টা করেও হাতিগুলোর দ্বারা মসজিদটিকে ভাঙতে সক্ষম হননি। হাতির মাহুতরাও তাদেরকে দিয়ে মসজিদের দেয়াল ও কাঠের পিলার ভাঙতে অসমর্থ হয়। আর এর কারণ হলো হাতিগুলো কোনোভাবেই মসজিদ ভাঙতে রাজি হয়নি। তাই সেখানেই শেষ করা হয় উচ্ছেদ অভিযান। উচ্ছেদ অভিযানে অংশগ্রহণকারী এক মাহুত সাংবাদিকদের বলেন, ‘হাতি হচ্ছে ভগবানের প্রতীক। তাই তারা ভগবানের ঘর ভাঙতে রাজি হয়নি। আর সে জন্য হাতিগুলি আমাদের নির্দেশও মানেনি।’
মসজিদ ভাঙতে হাতির রাজি না হওয়ার বিষয়টি আসামের ধর্মপ্রাণ হিন্দু-মুসলিমদের মধ্যে চাঞ্চল্যের সৃষ্টি করেছে।
ওডি/এনএম
নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া
সম্পাদকীয় কার্যালয়
১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।
যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702
ই-মেইল: [email protected]
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।
Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড