• বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১  |   ৩০ °সে
  • বেটা ভার্সন
sonargao

রাহুলের সভাপতি পদ থেকে ইস্তফা

ফের দুই নেতাকে বিকল্প খুঁজতে বললেন রাহুল গান্ধী

  আন্তর্জাতিক ডেস্ক

২৭ মে ২০১৯, ২০:১০
কংগ্রেসের সভাপতিত্ব থেকে রাহুলের ইস্তফা
ছবি : সংগৃহীত

ভারতের কংগ্রেস সভাপতি রাহুল গান্ধী কি পদত্যাগ করবেন? রাজনৈতিক মহলের কাছে সবচেয়ে বড় প্রশ্ন এখন এটাই। গত শনিবার (২৫ মে) কংগ্রেসের কার্যনির্বাহী কমিটির বৈঠকে ইস্তফার ইচ্ছা প্রকাশ করেন তিনি। কিন্তু, সর্বসম্মতিতে সেই প্রস্তাব খারিজ হয়ে যায়। এরপর দুটো দিন পেরিয়ে গিয়েছে। কিন্তু এখনও নিজের অবস্থানে কংগ্রেস সভাপতি অনড় রয়েছেন।

এ দিন কংগ্রেসের দু নেতা আহমেদ প্যাটেল এবং কে কে বেনুগোপালের সঙ্গে বৈঠক করেন রাহুল। সেখানে তিনি বলেন, আমার বিকল্প খুঁজে বের করুন। তাছাড়া, সোমবার (২৭ মে) দেশের প্রথম প্রধানমন্ত্রী জহরলাল নেহরুর মৃত্যু দিবসে শ্রদ্ধা জানাতে গিয়েও এ কথাই লেখেন রাহুল।

প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী থেকে শুরু করে গোটা দেশের রাজনৈতিক মহলের অনেকেই নিজেদের শ্রদ্ধা নিবেদন করছেন। কংগ্রেস সভাপতি রাহুল গান্ধীও সকালে সে পথে হেঁটেছেন। আর তার এই টুইট ঘিরে নতুন করে জল্পনা শুরু হয়েছে। তিনি লিখেছেন- ভারতের মতো একটি তরুণ গণতন্ত্রের ক্ষেত্রে স্বৈরাচারী ব্যবস্থা যত তাড়াতাড়ি মুক্ত হয় ততই ভালো।

রাহুল বলেন, নেহরুজির মৃত্যু দিবসে আমাদের তার কথা মনে করা উচিত। তিনি যেভাবে স্বাধীন ভারতের বিভিন্ন সংস্থাকে তৈরি করেছিলেন সেগুলো আমাদের দেশে গণতন্ত্রকে এই সত্তর বছর পর্যন্ত বেঁচে থাকতে সাহায্য করেছে।

নিজের টুইটারের বায়ো অবশ্য এখনও পরিবর্তন করেননি রাহুল। সেখানে লেখা রয়েছে, 'সভাপতি, ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেস'। এর আগে শনিবারই পদ ছেড়ে দেয়ার ইচ্ছা প্রকাশ করেন তিনি। কিন্তু কংগ্রেসের কার্যনির্বাহী কমিটি সর্বসম্মতিতে তা খারিজ করে দেয়। এরপর দুদিন ধরে কংগ্রেসের বিভিন্ন নেতা তাকে বোঝানোর চেষ্টা করেছেন পদ ছেড়ে দেয়ার কোনো মানে হয় না। তিনি যে পদে আছেন সেখান থেকেই তার কাজ করে যাওয়া উচিত। কিন্তু তাতেও রাহুলের নিজের চিন্তা ভাবনার তেমন কোনো পরিবর্তন হয়নি বলেই তার ঘনিষ্ঠ সূত্রের বরাত দিয়ে জানায় 'এনডিটিভি'।

রাহুলের ইস্তফার বিষয়ে সম্মতি দিয়েছেন মা সোনিয়া এবং বোন প্রিয়াঙ্কাও। প্রাথমিকভাবে দলের অন্য নেতাদের মতো তারাও বিরোধিতা করেছিলেন। কিন্তু, শেষমেশ নিজেদের মতো পরিবর্তন করেছেন সোনিয়া এবং প্রিয়াঙ্কা। শেষমেশ রাহুল কোনো সিদ্ধান্ত নেবেন কি না তা এখনও স্পষ্ট নয়।

কংগ্রেসের কার্যনির্বাহী কমিটির বৈঠকের পর দলের জাতীয় মুখপাত্র রণদীপ সুরজেওয়ালা সাংবাদিকদদের বলেন, সভাপতি ইস্তফা দিতে চেয়েছিলেন কিন্তু তা সর্বসম্মতিতে খারিজ হয়েছে। দলের নেতারা চান নিজের পদে থেকেই কাজ করে যান রাহুল।

ওই বৈঠকে হাজির ছিলেন দেশের প্রাক্তন অর্থমন্ত্রী পি চিদাম্বরম তিনি বলেন রাহুল যদি এমন কিছু করেন তাহলে দক্ষিণ ভারতের সাংসদরা চূড়ান্ত কিছু করে ফেলতে পারেন। এ কথা বলার সময় তাঁর গলা ধরে এসেছিল, তিনি কেঁদে ফেলেছিলেন। শুধু তাই নয় বৈঠকে রাহুল যখন নিজের পদত্যাগ নিয়ে অনড় তখন কেউ কেউ বোন প্রিয়াঙ্কা গান্ধীর কথা বলেছিলেন। কিন্তু রাহুল বলেন, কংগ্রেসের সভাপতি যে গান্ধী পরিবার থেকেই হতে হবে এমন কোনো মানে নেই।

বৈঠকে আরেকটি বিষয়ে সরব হন রাহুল। সেটি হলো দলের কিছু নেতার আচরণ। তিনি বলেন, নিজেদের ছেলেদের প্রার্থী করতে বা দলীয় সুবিধা পাইয়ে দিতে কিছু নেতা তৎপর ছিলেন। তাদের পরাজয়ের ফলে দলের ক্ষতি হয়েছে বলেও তিনি মনে করেন। এই ভোটে রাজস্থানের মুখ্যমন্ত্রী অশোক গেহলতের ছেলে বৈভব গেহলত, প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী যশোবন্ত সিংয়ের পুত্র মানবেন্দ্র সিং, মধ্যপ্রদেশের প্রাক্তন নেতা প্রয়াত মাধব রাও সিন্ধিয়ার পুত্র জ্যোতিরাদিত্য সিন্ধিয়া, প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী সন্তোষ মহোন দেবের মেয়ে সুস্মিতা দেব নির্বাচনে হেরেছেন।

এর আগে ফলাফল প্রকাশের দিনই হারের দায় নিয়েছিলেন রাহুল। তিনি বলেন, এই হারের জন্য আমি একশো শতাংশ দায়ী। এবার দেশে শোচনীয় ফল করেছে কংগ্রেস। ২০১৪ সালের পরে ২০১৯ সালেও বিপুল জয় পেয়েছে বিজেপি। দেশটির ১৭টি রাজ্যে ভোটই পায়নি কংগ্রেস। পাশাপাশি কেন্দ্র শাসিত অঞ্চলের ফল অত্যন্ত খারাপ হয়েছে কংগ্রেসের। কয়েক মাস আগে মধ্যপ্রদেশ রাজস্থান এবং ছত্তিশগড় বিধানসভা নির্বাচনে জিতে আসে কংগ্রেস। সেখানেও তাদের ফল খারাপ হয়েছে এই নির্বাচনে।

দীর্ঘদিন ধরে কংগ্রেসে নেহরু এবং গান্ধী পরিবারের প্রভাব যথেষ্ট বেশি। এমতাবস্থায় রাহুল ইস্তফা দিতে চান কিন্তু তা খারিজ হয়ে যায়। তবে, পরপর দুবার ফলাফল এত খারাপ হওয়ায় কংগ্রেসের অন্দরে গান্ধী-নেহরু পরিবারের নেতৃত্ব নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে বলে মনে করে দেশটির রাজনৈতিক মহল।

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া

 

সম্পাদকীয় কার্যালয় 

১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।

যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702 

ই-মেইল: [email protected]

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড