আন্তর্জাতিক ডেস্ক
মিয়ানমার সামরিক বাহিনীর সঙ্গে অর্থনৈতিকসহ সব ধরনের সম্পর্ক ছিন্নের জন্য সকল দেশের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে জাতিসংঘের ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং মিশন। একইসঙ্গে সংস্থাটির কর্মকর্তারা রোহিঙ্গাদের রাখাইন অঞ্চলে প্রবেশ এবং সেখানে তাদের স্থায়ীভাবে বসবাসের অধিকার প্রদানের জন্য মিয়ানমার সরকারের প্রতি অনুরোধ জানিয়েছেন।
সংস্থাটির ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং মিশনের প্রধান মারজুকি দারুসম্যান বলেন, ‘রোহিঙ্গা মুসলমানদের প্রত্যাবর্তন প্রক্রিয়া এখন পুরোপুরি থেমে গেছে। তাছাড়া রাখাইন থেকে এখনো বারংবার মানবাধিকার লঙ্ঘনের খবর পাওয়া যাচ্ছে।’
এ দিকে গত বছরের শেষ দিকে সরকারি বাহিনীর সঙ্গে রাখাইনের বিদ্রোহীদের মধ্যে একটি লড়াই অনুষ্ঠিত হয়। মূলত এর পরই সেখানে বসবাসরত প্রায় ৩৩ হাজারের বেশি লোককে কোনো ধরনের সুযোগ সুবিধা ছাড়া এক রকম কষ্টের মধ্যে জীবন-যাপন করতে বাধ্য করা হয় বলে দাবি পর্যবেক্ষকদের।
অঞ্চলটির মানবিক বিষয়গুলোর জন্য ইউএন সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল উরসুল মুয়লার বলেন, ‘সংঘর্ষ শেষের পর থেকে কর্তৃপক্ষ অঞ্চলটি পরিদর্শনের জন্য বেশিরভাগ সহায়তা গোষ্ঠীর অনুরোধ প্রত্যাখ্যান করেছিল। এমনকি তারা নিষিদ্ধ অঞ্চলে দ্বন্দ্বের কারণে বিতাড়িতদের সঙ্গেও সহায়কদের দেখা করার অনুমতি দিচ্ছে না।’
মঙ্গলবার (১৪ মে) স্থানীয় সময় রাতে তিনি বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে বলেছিলেন, ‘আমাদের অবিলম্বে প্রবেশাধিকার প্রয়োজন। কেননা এখনই সেখানে পৌঁছাতে হবে - জনসাধারণের কাছে পৌঁছাতে প্রত্যাশিত, স্থায়ী প্রবেশাধিকার প্রয়োজন।
জাতিসংঘের সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল উরসুল মুয়লার। (ছবিসূত্র : ইউএন ওয়েব)
দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় দীর্ঘ ছয় দিনের সফর শেষে তিনি আরও বলেন, ‘যদি আমরা দেখি মোবাইল ক্লিনিকসহ নানা সহায়তা জনগণের কাছে পৌঁছাতে পারছে না; তাহলে আমাদের এটাই বিবেচনা করতে হবে যে, সেখানে পরিষেবাগুলো নেই এবং তাদের চাহিদাগুলো পূরণ হচ্ছে না।’
এবার মুয়লার তার মিয়ানমার সফরে রাজধানীতে ন্যাপিটওয়ের সিনিয়র কর্মকর্তাদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন। দেশটির নেত্রী অং সান সু চির সঙ্গে বৈঠক শেষে জাতিসংঘের এই সহকারী সেক্রেটারি বলেছিলেন, ‘আমি রাখাইনের উন্নয়ন ও সামাজিক সমঝোতার দিকে কাজ করছি। আমি এবার শুধু মানবিক চাহিদাগুলোকেই তুলে ধরছি যা বিদ্যমান, এগুলো তাৎক্ষণিকভাবে পূরণ করা দরকার।’
অপর দিকে গত মঙ্গলবার (১৪ মে) অস্ট্রেলিয়ার মানবাধিকার বিষয়ক আইনজীবী এবং জাতিসংঘ মিশনের সদস্য ক্রিস্টোফার সিদোতি বলেছিলেন, ‘অতীতে মিয়ানমার সেনাবাহিনীর নৃশংসতা এবং এখনো তারা সেটি অব্যাহত রাখায় সেনাবাহিনীর সঙ্গে রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক সম্পর্ক বজায় রাখার বিষয়ে সকলের চিন্তা করতে হবে।’
এর আগে ২০১৭ সালে বিশ্বব্যাপী স্পট লাইটে আসে রাখাইন। তখন অঞ্চলটিতে মিয়ানমার সেনাবাহিনীর চালানো হত্যা, ধর্ষণ ও নির্যাতনের কারণে নিজেদের জীবন বাঁচাতে প্রায় সাত লাখ ৩০ হাজারের বেশি রোহিঙ্গা মুসলিম সীমান্ত অতিক্রম করে প্রতিবেশী দেশ বাংলাদেশে চলে আসে।
আরও পড়ুন :- শ্রীলঙ্কায় দাঙ্গা নিয়ন্ত্রণে কারফিউ বহাল, গ্রেফতার ৬০
সম্প্রতি জাতিসংঘের ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং মিশন রাখাইনের সেই কর্মকাণ্ডকে গণহত্যা উল্লেখ করেছে। সে সময় মিয়ানমার সেনাবাহিনীর চালানো হত্যা, গণধর্ষণ ও অগ্নিসংযোগের অভিযোগে ইউএন তদন্তকারীরা দেশটির জ্যেষ্ঠ সামরিক কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে আদালতে মামলা করার আহ্বান জানিয়েছে।
সূত্র : রয়টার্স
ওডি/কেএইচআর
নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া
সম্পাদকীয় কার্যালয়
১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।
যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702
ই-মেইল: [email protected]
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।
Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড