• বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১  |   ৩৩ °সে
  • বেটা ভার্সন
sonargao

শ্রীলঙ্কায় দাঙ্গা নিয়ন্ত্রণে কারফিউ বহাল, গ্রেফতার ৬০

  আন্তর্জাতিক ডেস্ক

১৫ মে ২০১৯, ১০:১০
শ্রীলঙ্কায় দাঙ্গা
শ্রীলঙ্কায় দাঙ্গার শিকার মুসলমানদের ব্যবসা প্রতিষ্ঠান। (ছবিসূত্র : দ্য ডেইলি সেলার)

দ্বীপরাষ্ট্র শ্রীলঙ্কায় চলমান মুসলিম বিরোধী দাঙ্গা অব্যাহত থাকায় দেশব্যাপী দ্বিতীয় দিনের মতো রাত্রিকালীন কারফিউ জারি করা হয়েছে। এবার সহিংসতা শুরুর পর থেকে এখন পর্যন্ত অন্তত ৬০ জনের বেশি লোককে গ্রেফতার করেছে লঙ্কান পুলিশ। যাদের মধ্যে স্থানীয় চরম ডানপন্থী বৌদ্ধ গোষ্ঠীর এক জ্যেষ্ঠ নেতাও রয়েছেন।

এর আগে গত মাসে দেশটিতে ইস্টার সানডে উদযাপনের সময় কলম্বো ও এর আশপাশের বেশ কয়েকটি গির্জা ও অভিজাত হোটেলসহ অন্তত আট স্থানে একযোগে চালানো হয় সিরিজ বোমা হামলা।

ভয়াবহ সেই হামলায় অর্ধশতাধিক বিদেশিসহ প্রাণ হারিয়েছেন অন্তত ২৫৩ জন বেসামরিক। যদিও তাৎক্ষণিক এর দায় স্থানীয় সন্ত্রাসী গোষ্ঠীদের কাঁধে চাপালেও পরবর্তীতে এর সম্পূর্ণ দায় স্বীকার করে নেয় মধ্যপ্রাচ্যভিত্তিক জঙ্গি সংগঠন ইসলামিক স্টেট (আইএস)। একইসঙ্গে তারা হামলায় জড়িত কয়েকজনের ছবিও প্রকাশ করেছিল।

মূলত এর পর থেকেই দেশটিতে উত্তেজনা ক্রমশ বৃদ্ধি পায়। এরই মধ্যে গত রবিবার (১২ মে) কলম্বোর এক খ্রিস্টান ফেসবুক ব্যবহারকারী তার ব্যক্তিগত পোস্টে দেশব্যাপী আবারও হামলা হতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছিলেন। মূলত তখন তার সেই পোস্টকে কেন্দ্র করে দেশটিতে আবারও মুসলিম বিরোধী দাঙ্গা শুরু হয়।

যদিও পরবর্তীতে দাঙ্গায় উস্কানি দাতা হিসেবে ৩৮ বছর বয়সী সেই খ্রিস্টান নাগরিককে গ্রেফতার করা হয়। বর্তমানে তাকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য থানায় আটকে রাখা হয়েছে। দেশের বিভিন্ন স্থানে মুসলিমদের মসজিদ এবং তাদের ব্যবসা প্রতিষ্ঠানকে আক্রমণের লক্ষ্যবস্তু করা হয়েছে। এতে এখন পর্যন্ত একজন মারা গেছে বলেও নিশ্চিত করেছে স্থানীয় প্রশাসন।

কলম্বো পুলিশের মতে, রাজধানীর আশপাশের বিভিন্ন শহরে দাঙ্গাকারীদের ছত্রভঙ্গ করতে পুলিশ কাঁদানে গ্যাস ও ফাঁকা গুলি ছুড়েছে। যে কারণে মঙ্গলবার থেকে দেশটিতে অনির্দিষ্ট কালের জন্য রাত্রিকালীন কারফিউ জারি করা হয়েছে।

পুলিশের দাবি, উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলীয় প্রদেশের যেসব স্থানে সহিংসতা এরই মধ্যে ভয়াবহ রূপ ধারণ করেছে সেখানে কারফিউ আরও দীর্ঘ সময় ধরে জারি করা থাকতে পারে।

এদিকে এশিয়ার এই দ্বীপরাষ্ট্রটিতে এমন অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতিকে শান্ত রাখা এবং ঘৃণা প্রত্যাহারের জন্য লঙ্কানদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে জাতিসংঘ। তাছাড়া দেশের সকলকে শান্ত থেকে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখার জন্য আহ্বান জানিয়েছেন শ্রীলঙ্কার প্রধানমন্ত্রী রানিল বিক্রমাসিংহে।

কলম্বো পুলিশের এক মুখপাত্র বলেন, ‘সম্প্রতি রাজধানীর উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলে অবস্থিত কিনিয়ামা শহরের একটি মসজিদে তল্লাশি অভিযানের অংশ হিসেবে স্থানীয় জনতা সেখানে পুলিশি অভিযানের দাবি জানিয়েছিল। পরবর্তীতে তারা নিজেরাই সেখানে প্রবেশ করে মসজিদটির দরজা-জানালায় ভাঙচুর চালিয়েছে। তাছাড়া মুসলিমদের পবিত্র ধর্মগ্রন্থ আল-কোরআনের কয়েকটি কপিও মাটিতে পড়ে থাকতে দেখা গেছে।

আরও পড়ুন :- শ্রীলঙ্কায় মুসলিম বিরোধী দাঙ্গা অব্যাহত, নিহত ১

কিনিয়ামার এক মুসলিম ব্যবসায়ী ব্রিটিশ দৈনিক ‘বিবিসি নিউজকে’ বলেন, ‘কলম্বোর সেই হামলার পর থেকে শুরু হওয়া সংঘর্ষের কারণে মুসলিম সম্প্রদায়ের লোকজন এখন আতঙ্কের মধ্যে দিন কাটাচ্ছে। গত সোমবার কলম্বোর উত্তরাঞ্চলে অবস্থিত আমার একটি ফ্যাক্টরিতে দাঙ্গাকারীরা এসে আগুন ধরিয়ে দেয়। আমি তখন নিজের জীবন বাঁচানো ছাড়া আর কিছুই করতে পারিনি।’

সূত্র : বিবিসি নিউজ

ওডি/কেএইচআর

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া

 

সম্পাদকীয় কার্যালয় 

১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।

যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702 

ই-মেইল: [email protected]

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড