আন্তর্জাতিক ডেস্ক
রাশিয়ার ভ্লাদিভস্তক শহরের নিকট রুস্কি দ্বীপে উত্তর কোরিয়ার নেতা কিম জং উনের সাথে বৈঠকে বসেছিলেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। বৃহস্পতিবার (২৫এপ্রিল) দুই ঘন্টা ব্যাপি প্রথম দফার বৈঠক শেষে তারা গণমাধ্যমকে জানায়, পিয়ংইয়ং নিউক্লিয়ার প্রোগ্রামের ব্যাপারে ফলপ্রসূ আলোচনা হয়েছে। ‘আল-জাজিরা’
রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট পুতিনের সাথে বৈঠক করার জন্য উত্তর কোরিয়ার নেতা কিম জং উন বুধবার (২৪ এপ্রিল) সশস্ত্র ট্রেনে করে প্রতিনিধিদের নিয়ে রাশিয়ার ভ্লাদিভস্তকের তাসারিস্ট-এরা স্টেশনে পৌছান। এর একদিন পর বৃহস্পতিবার ভ্লাদিভস্তকে আসেন দেশটির প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। পুতিনের সাথে এটাই কিম জং উনের প্রথম বৈঠক।
গত ফেব্রুয়ারিতে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সাথে কিম জং উনের হ্যানয় বৈঠকের পর এই প্রথম বিদেশ সফরে গেলেন কিম। ট্রাম্প-কিমের হ্যানয় সম্মেলনে যুক্তরাষ্ট্র –উত্তর কোরিয়ার মধ্যে কোন বিষয়ে চুক্তি হয় নি। ফলে ব্যর্থতায় পর্যবসিত হয়েছিল সে সম্মেলন।
বিশেষজ্ঞদের মতে, রাশিয়া-উত্তর কোরিয়ার এই সম্মেলন যুক্তরাষ্ট্রের জন্য একটি অনুস্মারক। এই সম্মেলন এটাই প্রকাশ করছে যে, যুক্তরাষ্ট্র ছাড়াও উত্তর কোরিয়ার জন্য অন্য আরো সুযোগ রয়েছে। পিয়ংইয়ং এ পারমানবিক বিষয়ে যে নিষেধাজ্ঞা জারি হয়েছে সে ব্যাপারে রাশিয়ার সাহায্য চেয়েছেন কিম জং উন। আর পুতিন এই সুযোগ কে কাজে লাগিয়ে বিশ্ব দরবারে আবারো মস্কোকে প্লেয়িং গ্রাউন্ড হিসেবে প্রতিষ্ঠিত ও বিশ্বরাজনীতিতি তে রাশিয়ান প্রভাব বিস্তার করতে চাইছেন।
তবে, এই সম্মেলনে কিম জং উনের প্রধান উদ্দেশ্য হচ্ছে ,এই বছরের মধ্যে রাশিয়ায় কর্মরত কোরিয়ান কর্মীদের প্রত্যাবর্তন ও কোরিয়ার খাদ্য সংকটের বিষয় নিয়ে খোলামেলা আলোচনা করা।
জাতিসংঘ ২০১৭ সালে কোরিয়ান কর্মীদের দেশে প্রত্যাবর্তনের বিষয়ে পদক্ষেপ গ্রহনের জন্য রাশিয়াকে জানায়। আনুমানিক ৫০ হাজার কোরিয়ান কর্মী রাশিয়ায় কর্মরত ছিল যাদের বাৎসরিক রেভিনিউ ছিল ৫০০ মিলিয়ন ইউএস ডলার। তবে সে সংখ্যা অনেক কমে গিয়েছে। বর্তমানে রাশিয়ায় ১০ হাজার কোরিয়ান কর্মী কর্মরত আছে।
এই বিষয়ে মস্কোর ‘আঞ্চলিক সমস্যা সংস্থা’র পরিচালক দামিত্রি জুহুরাভলিভ বলেন, এই বৈঠকের পর কর্মী প্রত্যাবর্তনের সংখ্যা কমে যাবে। বর্তমানে উত্তর কোরিয়ার অন্যতম প্রধান সমস্যা দেশটির খাদ্যে ঘাটতি। এই সমস্যা সমাধানের জন্যেও এই বৈঠক অত্যন্ত গুরত্বপূর্ন ছিল। রাশিয়া এই সমস্যা সমাধানে সাহায্য করতে আগ্রহ প্রকাশ করেছে। এছাড়াও গত মাসে উত্তর কোরিয়ার চংজিন পোর্টে ২ হাজার টন গম পাঠিয়েছে রাশিয়া।
এই বৈঠক নিয়ে বৃহস্পতিবার(২৫ এপ্রিল) চায়নার সরকারি গণমাধ্যমে পুতিনের সমালোচনা করে বলা হয়, বিশ্বব্যাপী একমাত্র নের্তৃত্ব প্রতিষ্ঠা করতেই বৈঠকে বসছেন পুতিন।
পুতিন-কিম বৈঠক নিয়ে কিম জং উন বলেন,প্রথম দফার বৈঠকে ”শান্তিপূর্ন নিষ্পত্তি” ও “ ফলপ্রসূ বিনিময়”ই ছিল মূল আলোচ্য বিষয়।
বৈঠকের বিষয় নিয়ে ভ্লাদিমির পুতিন বলেন, আমরা কোরিয়ার পেনিনসুলার অবস্থা নিয়ে আলোচনা করেছি। এই বিষয়ে আমাদের মত বিনিময় হয়েছে এবং অবস্থার উন্নয়নের জন্য আমরা বদ্ধপরিকর।
এই এই সম্মেলনের পূর্বে দুই দেশের প্রতিনিধিদের থেকে সংক্ষেপে বলা হয় এই সম্মেলন রাশিয়া-উত্তর কোরিয়ার ভেঙে পড়া সম্পর্ক উন্নয়ন করবে যেমনটা রাশিয়ার সাথে কিমের প্রপিতামহ দ্বিতীয় কিম সাং এর ছিল।
ওডি/কেএম
নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া
সম্পাদকীয় কার্যালয়
১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।
যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702
ই-মেইল: [email protected]
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।
Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড