• শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১  |   ৩০ °সে
  • বেটা ভার্সন
sonargao

তিন মাসে আফগানিস্তানে ৩০৩ বেসামরিকের মৃত্যু : জাতিসংঘ

  আন্তর্জাতিক ডেস্ক

২৪ এপ্রিল ২০১৯, ১৬:৪৯
আফগানিস্তানে বোমা হামলা
আফগানিস্তানে বোমা হামলায় হতাহতদের উদ্ধার করে নিয়ে যাচ্ছেন বাসিন্দারা। (ছবিসূত্র : এবিসি নিউজ)

আফগানিস্তানে নিষিদ্ধ ঘোষিত জঙ্গি সংগঠন তালিবান ও অন্যান্য সশস্ত্র গোষ্ঠীর চেয়ে দেশটির সরকার এবং ন্যাটো বাহিনীর হাতে সবচেয়ে বেশি লোকের মৃত্যু হয়েছে। বুধবার (২৪ এপ্রিল) জাতিসংঘের প্রকাশিত নতুন এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়।

জাতিসংঘের সহায়তা মিশন (ইউএনএএমএএ) থেকে প্রাপ্ত ফলাফল অনুযায়ী, বছরের প্রথম তিন মাসে আফগান এবং মার্কিন সমর্থিত ন্যাটো বাহিনী দেশটির অন্তত ৩০৫ বেসামরিক নাগরিককে হত্যা করেছে। তাছাড়া এতে আহত হয়েছেন আরও কমপক্ষে ৩০৩ জন। যা তখন দেশটির মোট জনসংখ্যা মৃত্যুর প্রায় ৫২ দশমিক ৫ শতাংশ।

জাতিসংঘের প্রকাশিত সেই প্রতিবেদনের বরাতে কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা জানায়, ‘গত বছরের একই সময়ের তুলনায় এবার সামগ্রিক বেসামরিক লোকজনের মধ্যে প্রায় ২৩ শতাংশ হ্রাস পেয়েছে। যা এভাবেই চলতে থাকলে খুব শিগগিরই একটি বড় ধরনের বড় সংকটে পরবে দেশটি।’

প্রতিবেদনে এও বলা আছে, ‘সরকারসহ ন্যাটো জোটের সদস্যরা জঙ্গি দমনের নামে প্রায়ই অঞ্চলটিতে একের পর এক অভিযান চালাতে থাকে। তবে এতে তালিবানসহ অন্যান্য সব জঙ্গিদের যতটা না ক্ষতি হয়েছে; তার চেয়ে বেশি ক্ষতি হয়েছে সেখানে বসবাসরত সাধারণ বেসামরিকদের। হামলায় ক্ষতিগ্রস্ত এসব নাগরিকরা বর্তমানে তাদের নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছে।’

এসব হামলায় হতাহত সম্পর্কে জাতিসংঘের এক মুখপাত্র বলেন, ‘সরকারি বাহিনী কর্তৃক পরিচালিত এই হামলায় এখন পর্যন্ত ৬০৮ জন হতাহত হয়েছেন। যাদের মধ্যে ৩০৫ জন নিহত এবং আরও প্রায় ৩০৩ জনের মতো মারাত্মকভাবে আহত হয়েছেন। যা গত বছরের এই একই সময়ের তুলনায় প্রায় ৩৯ শতাংশ বেশি।’

জাতিসংঘের এ কর্মকর্তা এও বলেছিলেন, ‘সরকার কর্তৃক পরিচালিত এসব হামলাগুলোর মধ্যে স্থলপথের পাশাপাশি বায়ু হামলা ছিল উল্লেখযোগ্য। যেখানে প্রায় ১৪০ জনের বেশি লোকের মৃত্যু হয়েছে। আর আহত হয়েছেন আরও অসংখ্য লোক।’

এদিকে প্রকাশিত এই প্রতিবেদনের প্রতিক্রিয়া জানিয়ে দেশটিতে নিযুক্ত মার্কিন বাহিনীর মুখপাত্র কর্নেল ডেভ বাটলার বলেছেন, ‘আমরা আমাদের বাহিনীর আত্মরক্ষা এবং আফগানিস্তানের সকল নিরাপত্তা বাহিনীগুলোর অধিকার সংরক্ষণে কাজ করে যাচ্ছি। দেশটিতে বসবাসরত সকল যুদ্ধহীনদের দুঃখকষ্ট শেষ করার সর্বোত্তম উপায় হল যুদ্ধের মাধ্যমে সব পক্ষকে সহিংসতা নিরসনে একমত করা।’

ইউএনএএমএএ থেকে তথ্য নিয়ে করা সেই প্রতিবেদনে এও বলা ছিল, ‘বছরের শুরু থেকে প্রথম তিন মাসে তালিবান এবং অন্যান্য সশস্ত্র দলগুলোর করা হামলায় এখন পর্যন্ত কমপক্ষে ২২৭ বেসামরিকের মৃত্যু হয়েছে। তাছাড়া এতে আরও প্রায় ৭৩৬ জনের মতো লোক আহত হয়েছেন।’

যদিও গত ১০ বছরে তালিবান ঘাঁটিকে লক্ষ্য করে মার্কিন নেতৃত্বাধীন বাহিনী কর্তৃক পরিচালিত এসব হামলায় প্রায় ৩২ হাজারের বেশি নিহত এবং প্রায় ৬০ হাজারের বেশি আহত হয়।

আফগানিস্তানের কেন্দ্রীয় মেদদান ওয়ারদাক প্রদেশের বাসিন্দা মাসীহ রহমান তার পরিবার হারিয়ে বলেছেন, ‘গত বছরের সেপ্টেম্বর মাসে এখানে একটি বিমান হামলা চালানো হয়েছিল। তখন আমার স্ত্রী, চার মেয়ে, তিন পুত্র এবং চার ভাতিজাসহ মোট ১২ জন সদস্য মারা যান।’

‘এতে শুধু আমার পরিবারই নয়, বোমা বিস্ফোরণে হারিয়ে যাওয়া আমার মতোই কয়েক ডজন পরিবার রয়েছে।’

অপরদিকে দেশটিতে নিযুক্ত জাতিসংঘের মহাসচিবের বিশেষ প্রতিনিধি তাদামিচি ইয়ামামোটো বলেছিলেন, ‘নির্দিষ্ট এই সময়ের মধ্যে বেসামরিক জনগণের বড় একটি অংশ ব্যাপক হুমকির মুখে রয়েছে। কেনোনা প্রতিদিন তাদের প্রত্যেককে ব্যাপক মৃত্যু ঝুঁকিতে দিন কাটাতে হয়।’

আরও পড়ুন :- মার্কিন সেনাদের ‘সন্ত্রাসী’ আখ্যা দিয়ে ইরানে বিল পাশ

মহাসচিবের বিশেষ এই প্রতিনিধি এও বলেছিলেন, তালিবান এবং অন্যান্য সশস্ত্র দলগুলো ইচ্ছাকৃতভাবে নাগরিকদের লক্ষ্যবস্তুতে নিমজ্জিত করেছে। যে কারণে ইমোভেনিং বোমগুলো ব্যবহার অচিরেই বন্ধ করতে হবে এবং সরকারকে ক্রমবর্ধমান মৃত্যু নিয়ন্ত্রণে আনতে সড়কসহ সব ধরনের বিমান হামলা দ্রুত বন্ধ করতে হবে।’

ওডি/কেএইচআর

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া

 

সম্পাদকীয় কার্যালয় 

১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।

যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702 

ই-মেইল: [email protected]

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড