• শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১  |   ৩৭ °সে
  • বেটা ভার্সন
sonargao

মুলারের রিপোর্ট প্রকাশ

নির্বাচনে ট্রাম্পের রুশ সম্পৃক্ততার তথ্য ভুয়া

  আন্তর্জাতিক ডেস্ক

১৯ এপ্রিল ২০১৯, ০১:৫৮
ট্রাম্প
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। (ছবিসূত্র : দ্য হিল)

২০১৬ সালের যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে রাশিয়া সরকারের পরোক্ষ হস্তক্ষেপ এবং প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের নির্বাচনি প্রচার শিবিরের সঙ্গে কথিত রুশ সংশ্লিষ্টতার কোনো প্রমাণই পাওয়া যায়নি। বৃহস্পতিবার (১৮ এপ্রিল) এই ইস্যুতে দেশটির স্পেশাল কাউন্সেল রবার্ট মুলারের তৈরি প্রতিবেদনের সারসংক্ষেপ জনসম্মুখে প্রকাশ করেন মার্কিন অ্যাটর্নি জেনারেল উইলিয়াম বার।

যদিও এর আগে এ দিন সময় রাতে মুলারের প্রতিবেদন ইস্যুতে একটি আগাম সংবাদ সম্মেলন করেছিলেন মার্কিন এই অ্যাটর্নি জেনারেল। প্রতিবেদন অনুযায়ী, মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে রাশিয়া সরকারের হস্তক্ষেপের সঙ্গে ট্রাম্পের সংশ্লিষ্টতার সরাসরি কোনো প্রমাণই পাওয়া যায়নি।

যদিও তার সহযোগীরা আগে থেকেই জানতেন যে, এতে তখন ট্রাম্প ব্যাপকভাবে উপকৃত হতে পারেন। সংবাদ সম্মেলনের পর মুলারের সেই প্রতিবেদনের সারসংক্ষেপ প্রকাশ করা হয়। খবর ‘বিবিসি নিউজের’।

মুলারের প্রতিবেদন

মার্কিন অ্যাটর্নি জেনারেল উইলিয়াম বার। (ছবিসূত্র : সিএনএন)

৪০০ পৃষ্ঠার সেই প্রতিবেদন অনুযায়ী, রবার্ট মুলার তার সেই প্রতিবেদনের তদন্ত চলাকালীন সময়ে রাশিয়ার সঙ্গে ট্রাম্পের জড়িত থাকার বিষয়ে কোনো মজবুত প্রমাণ খুঁজে পাননি। তবে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প একেবারেই যে নির্দোষ; সে বিষয়েও তার হাতে কোনো শক্ত তথ্য নেই।

এতে মুলার কেবল এটাই জানতে পেরেছেন, নির্বাচন চলাকালীন সময়ে ট্রাম্পের সহযোগীরা আগে থেকে জানতে পেরেছিলেন যে, রুশ সংশ্লিষ্টতার কারণে ট্রাম্প নির্বাচনে ভীষণ রকমের উপকৃত হবেন। তবে বিষয়টি ট্রাম্পের জানা ছিল কিনা সে বিষয়ে মুলার পুরোপুরি নিশ্চিত নন।

রিপোর্ট অনুযায়ী, মুলার এর তদন্ত চলাকালীন সময়ে জানতেন; প্রেসিডেন্টকে সমন পাঠানোর ক্ষমতা তার হাতে ছিল। তবে তিনি এটি কখনোই করেননি; কারণ এতে তদন্ত কাজে আরও দেরি হতে পারে। যদিও প্রসিকিউটরদের দাবি, এ বিষয়ে তাদের হাতে যথেষ্ট নথি রয়েছে।

মুলারের প্রতিবেদন

যুক্তরাষ্ট্রের স্পেশাল কাউন্সেল রবার্ট মুলার। (ছবিসূত্র : এনবিসি নিউজ)

রিপোর্টে বলা আছে :-

* মুলারের তদন্ত কাজ চলাকালীন সময়ে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প একটিকে প্রতিরোধ করার চেষ্টা করেছিলেন। তখন তিনি বলেছিলেন, ‘হে আমার ঈশ্বর, এটা ভয়ানক। এটার জন্য আমার প্রেসিডেন্টের মর্যাদা শেষ।’

* মুলার তার তদন্তে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের বিরুদ্ধে দশ ধরনের পরীক্ষা চালিয়েছিলেন।

* তদন্তকারীদের মতে, তাদের করা প্রশ্নগুলোতে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প অপর্যাপ্ত লিখিত তথ্য দিয়েছেন। একইসঙ্গে তিনি তার সাক্ষাৎকারে সম্ভাব্য আইনি যুদ্ধ লম্বা না করার সিদ্ধান্ত নেন।

* ২০১৬ সালের জুন মাসে ট্রাম্প তার নির্বাচনি প্রচারাভিযানে রাশিয়ার মধ্যস্থতাকারীদের সঙ্গে ট্রাম্প টাওয়ারে করা বৈঠকের বিষয়ে একটি বিভ্রান্তিকর তথ্য জানিয়েছেন। যদিও পরবর্তীতে তার ব্যক্তিগত আইনজীবী এবং হোয়াইট হাউসের মুখপাত্র সারাহ স্যান্ডার্স বিষয়টি পুরোপুরি অস্বীকার করেছিলেন।

মুলারের প্রতিবেদন

রবার্ট মুলারের ৪০০ পৃষ্ঠার সেই প্রতিবেদন। (ছবিসূত্র : ইউএসএ টুডে)

প্রতিবেদনটি ইতোমধ্যে মার্কিন কংগ্রেস এবং সিনেট জুডিশিয়ারি কমিটির কাছে পাঠানো হয়েছে। আর ট্রাম্পের আইনজীবীরা মুলারের এই প্রতিবেদনের ফলাফলকে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের জন্য একটি পূর্ণাঙ্গ বিজয় বলে অভিহিত করেছেন।

এদিকে বৃহস্পতিবারের সেই সংবাদ সম্মেলনে মুলারের করা প্রতিবেদনের সংক্ষেপিত কপি হাতে নিয়ে অ্যাটর্নি জেনারেল উইলিয়াম বার বলেছিলেন, ‘মুলারের সেই প্রতিবেদনে উঠে এসেছে; ২০১৬ সালে মার্কিন নির্বাচনে রাশিয়ার সঙ্গে ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রচারণা শিবিরের কোনো আঁতাত ছিল না। স্পেশাল কাউন্সিল ইতোমধ্যে নিশ্চিত করেছে, সেই নির্বাচনে রুশ সরকার অবৈধভাবে হস্তক্ষেপ করলেও এর সঙ্গে ট্রাম্পের প্রচারণা শিবির বা অন্য কোনো মার্কিনী কোনো ধরনের আঁতাত করেননি।’

উইলিয়াম বার এও বলেছেন, ‘আমার এই মুলারের করা প্রতিবেদন ইস্যুতে এখন আর কোনো ধরনের অভিযোগ নেই।’

অপরদিকে প্রতিবেদন সংক্রান্ত করা সেই সংবাদ সম্মেলনের পর প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প এক টুইট বার্তায় ‘গেম অব থ্রোনসের’ আদলে একটি ছবি পোস্ট করেন। সেখানে তিনি বলেছেন, ‘খেলা শেষ’। যদিও এর আগে তিনি অপর এক টুইট বার্তায় বলেছিলেন, ‘এটি প্রেসিডেন্টকে সম্পূর্ণভাবে হয়রানি করার জন্য করা হয়েছে। যা কখনোই সফল হবে না।’

আরও পড়ুন :- লন্ডনে তারেক-জোবাইদার ব্যাংক হিসাব জব্দের নির্দেশ

যুক্তরাষ্ট্রের স্পেশাল কাউন্সেল রবার্ট মুলারের করা এই প্রতিবেদনটি দীর্ঘ ২২ মাসের তদন্তের একটি প্রধান দলিল। যা তিনি মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে রাশিয়া এবং ট্রাম্পের আঁতাত প্রসঙ্গে করেছিলেন। মুলারের সেই প্রতিবেদনে তার দলের সদস্যরা অন্তত ৩৫ জনকে বিভিন্নভাবে অভিযুক্ত করেছিলেন। যার মধ্যে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের নামটি কেবল সবচেয়ে বেশি উল্লেখিত হয়েছিল।

ওডি/কেএইচআর

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া

 

সম্পাদকীয় কার্যালয় 

১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।

যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702 

ই-মেইল: [email protected]

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড