এস এম সোহাগ
ইরানের তেহরানে সেনা দিবসের প্যারেডের বৃহস্পতিবার (১৮ এপ্রিল) সেনা প্যারেড অনুষ্ঠানের বক্তৃতাকালে রুহানি প্রতিবেশী দেশগুলোর প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেন, 'ইহুদিবাদ (জিওনিজম) ফিরিয়ে আনতে' মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং তার সহযোগী ইসরায়েল এই অঞ্চলের সমস্যাগুলির মূল কারণে পরিণত হয়েছে।
ইরানের রাষ্ট্রপতি হাসান রুহানি মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ হবার আহ্বান জানিয়ে বলেন, 'ইরানের সশস্ত্র বাহিনী কোনো আঞ্চলিক দেশের বিরুদ্ধে হুমকি নয়। এই অঞ্চলের দেশগুলি শত শত বছর ধরে একে অপরের পাশে থেকেছে এবং কখনও কোন সমস্যা হয়নি। যদি কোন সমস্যা হয় তবে এটি বহিরাগতদের দ্বারা সৃষ্ট।'
রুহানি আরও বলেন, 'যদি আজ এই অঞ্চলে আমাদের কোন সমস্যা হয়, তবে তার শেকড় ইহুদিবাদ বা আমেরিকার ঔদ্ধত্যের মধ্যে নিহিত।
শীর্ষ জেনারেলদের দুইপাশে নিয়ে রুহানি ইরানের প্রতিবেশী ও এই অঞ্চলের সব দেশকে উদ্দেশ্য করে বলেছেন যে, তার সশস্ত্র বাহিনী 'কখনও আপনার বা আপনার জাতীয় স্বার্থের বিরুদ্ধে নয়' কিন্তু 'আগ্রাসকদের বিরুদ্ধে দাঁড়িয়ে' থাকবে।
তিনি রাষ্ট্র টেলিভিশনে লাইভ সম্প্রচারে বলেন, 'চলুন পাশাপাশি দাড়াই, একসঙ্গে থাকি এবং এই অঞ্চলের ওপর আগ্রাসনকারীদের নির্মুল করি।'
ছবি : সংগৃহীত
অনুষ্ঠান চলাকালীন, সৈন্যরা রুহানি ও শীর্ষ সামরিক কমান্ডারদের মাঝে দাঁড়িয়ে ছিল, যেখানে স্থানীয়ভাবে পরিকল্পিত এবং উত্পাদিত জঙ্গী বিমানগুলি এয়ার ডিসপ্লেতে প্রথমবারের মতো অংশ নেয়। দেশটি মিসাইল, সাবমেরিন, আর্মড যানবাহন, রাডার এবং ইলেকট্রনিক ওয়ারফেয়ার সিস্টেমও উন্মোচন করেছে। এটি তার রাশিয়া থেকে আনা এস-৩০০ ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষা সিস্টেমের ও প্রদর্শন করেছে।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে ক্রমবর্ধমান চাপের মধ্যেই রুহানি বললেন, ইরানের সশস্ত্র বাহিনী আগের চেয়ে আরও বেশি শক্তিশালী ছিল। তিনি বলেন, 'আমরা এই অঞ্চলের আঞ্চলিক নিরাপত্তা এবং স্থিতিশীলতা চাই ও আঞ্চলিক দেশগুলিতে সার্বভৌমত্ব ও সন্ত্রাসবাদসহ তাদের কার্যক্রম বন্ধে প্রচেষ্টা করি।
ইরানের দুটি বাহিনী আছে, একটি জাতীয় রক্ষাকর্মী শক্তি এবং আরেকটি ইসলামী বিপ্লবি গার্ড কর্পস নামে পরিচিত যা ১৯৭৯ সালের বিপ্লবের পর অভ্যন্তরীণ ও বহিরাগত প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে ইসলামী প্রজাতন্ত্রকে রক্ষা করার জন্য তৈরি করেছিল।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র সোমবার (১৫ এপ্রিল) আনুষ্ঠানিকভাবে একটি বিদেশী 'সন্ত্রাসী সংগঠন' হিসাবে বিপ্লবী গার্ডকে মনোনীত করেছে। এই পদক্ষেপের তীব্র নিন্দা জানায় ইরান এবং মার্কিন বাহিনীর ওপর প্রতিশোধমূলক হামলার বিষয়ে উদ্বেগ সৃষ্টি করেছে।
রুহানি তাদের বাহিনীর বিরুদ্ধে মার্কিন পদক্ষেপকে 'জঘন্য' বলে অভিহিত করেন এবং বলেন, 'বিপ্লবী গার্ডদের অপমান করার অর্থ সব (ইরানী) সশস্ত্র বাহিনীকে এবং মহান দেশ ইরানকে অপমান করা। ইরানের সেনাবাহিনীতে স্থলভিত্তিক বৃহত্তম বাহিনী রয়েছে এবং বিপ্লবী গার্ডসের নিয়ন্ত্রিত অস্ত্রাগারে ব্যালিস্টিক মিসাইলের সংখ্যা ক্রমে বাড়ছে।
২০১৮ সালে, মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ইরানের পরমাণু কর্মসূচি নিয়ে বহুজাতিক চুক্তির থেকে ওয়াশিংটনকে প্রত্যাহার করে নিয়েছিলেন, পরে আবার তেল রপ্তানি ও আর্থিক লেনদেনের ওপর নিষেধাজ্ঞা পুনর্বহাল করেছিলেন।
ছবি : সংগৃহীত
ইরানের কয়েকটি প্রদেশে সামরিক কর্মসূচী বাতিল করা হয়েছিল যেখানে বন্যায় আক্রান্ত জনগণের সহায়তায় সশস্ত্র বাহিনীকে নিয়োগ করা হয়েছিল। ১৯ মার্চ শুরু হওয়া বন্যায় এখন পর্যন্ত ৭৬ জন নিহত হয়েছে, ২ লাখ ২০ হাজারেরও বেশি লোককে জরুরী আশ্রয়স্থলগুলিতে স্থানান্তর করতে হয়েছে এবং সহায়তা সংস্থার এই পরিস্থিতি মোকাবিলা করার জন্য সংগ্রামের মধ্যে ছেড়ে দিয়েছে।
রুহানি বলেন, 'অন্য কোন দেশের নাগরিক ও সশস্ত্র বাহিনীর মধ্যে এমন একতা খুঁজে পাওয়ার ব্যাপারে আমার সন্দেহ রয়েছে।'
ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মোহাম্মদ জাওয়াদ জারিফ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রকে 'অর্থনৈতিক সন্ত্রাসবাদ' হিসেবে অভিযুক্ত করে বলেছিলেন যে, যুক্তরাষ্ট্রের একতরফা নিষেধাজ্ঞায় বন্যায় ক্ষতিগ্রস্থ শহরগুলির জন্য সাহায্যের প্রচেষ্টাকে বাধাগ্রস্থ করছে। ইরান পাকিস্তান এবং কুয়েতের পাশাপাশি জার্মানি, ফ্রান্স এবং জাপান থেকে বিভিন্ন পণ্যের ত্রান পেয়েছে।
নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া
সম্পাদকীয় কার্যালয়
১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।
যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702
ই-মেইল: [email protected]
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।
Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড