• বৃহস্পতিবার, ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১  |   ৩৪ °সে
  • বেটা ভার্সন
sonargao

পশ্চিমবঙ্গের ভোট সর্বশেষ : গুলি,বোমা, লাঠিচার্জে রণক্ষেত্র

  অধিকার ডেস্ক    ১৮ এপ্রিল ২০১৯, ১৩:০৪

ভারতের লোকসভা নির্বাচন
ছবি : এএফপি

বিশ্বের সবচেয়ে বড় গণতান্ত্রিক ভোটের চলছে দ্বিতীয় ধাপের ভোটগ্রহণ, ভারতের লোকসভা নির্বাচনের এই ধাপে ভোট জালিয়াতি, কারচুপি, ভীতিপ্রদর্শণের ব্যাপক অভিযোগের কথা জানাচ্ছে দেশটির গণমাধ্যম। পশ্চিমবঙ্গের ধূপগুড়ির বারঘুড়িয়ায় ভোট ঘিরে বিশৃঙ্খলা চলছে। এই দফায় ১৩টি রাজ্যের ভোট হবে।

গোয়ালপোখরের কাটা ফুলবাড়িতে ভোটদানে বাধা দেওয়ার খবর সংগ্রহ করতে গিয়ে হামলার শিকার হয় সাংবাদিকেরাও। বাঁশ, লাঠি দিয়ে মেরে সাংবাদিকের মাথা ফাটানোর অভিযোগ প্রকাশ করেছে 'আনন্দবাজার'। ভেঙে দেয়া হয়েছে ক্যামেরাও। গোয়ালপোখরের কাটা ফুলবাড়িতে ভোটদানে বাধা দেওয়া হচ্ছে ভোটারদের। এই অভিযোগ পেয়েই সেই খবর সংগ্রহে করতে যান তাঁরা। সেখানেই বেধড়ক মারা হয় তাঁকে। আহত হয়েছেন তাঁর সঙ্গে থাকা চিত্র সাংবাদিকও। গোটা ঘটনার রিপোর্ট তলব করেছে নির্বাচন কমিশন। জেলাপ্রশাসনকে কড়া ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ কমিশনের।

এদিকে, সকালে ভোট দিতে গিয়ে ইভিএম বিভ্রাটের মুখে পড়তে হয় রায়গঞ্জের কংগ্রেস প্রার্থী দীপা দাশমুন্সিকে। পরে নতুন ইভিএম আসায় ১০ মিনিট পরে ভোট দেন তিনি। এ দিকে ইসলামপুরে ১৩৫ নম্বর বুথে ভিভিপ্যাট বিকল হয়ে পড়ায় তৃণমূলপ্রার্থীরা অনেকক্ষণ লাইনে দাঁড়িয়ে থাকতে হয়। ইভিএম খারাপের অভিযোগ আসে শিলিগুড়ি বুথেও। ফলে ভোট শুরু হতে ১ ঘণ্টা দেরি হয় সেখানেও।

ভোটদানে বাধা দেয়ার অভিযোগ দার্জিলিং এর চোপড়ায়। সুষ্ঠ ভোটের দাবিতে ৩১ নম্বর জাতীয় সড়ক অবরোধ করে পুলিশকে ঘিরে বিক্ষোভ করে বাসিন্দারা। প্রায় ২০ মিনিট অবরুদ্ধ হয়ে পড়ে জাতীয় সড়কটি। এক অভিযুক্ত তৃণমূল কর্মীকে আটক করেছে পুলিশ। তৃণমূল কর্মীদের ওপর হামলার অভিযোগ বিজেপির বিরুদ্ধে। ঘটনাস্থলে পাথর ছুড়তে দেখা যায় বিক্ষোভকারীদের। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে ঘটনাস্থলে পৌঁছায় পুলিশ বাহিনী, র‌্যাফ।

মালবাজারের কুমলাই গ্রামে আক্রান্ত বিজেপি কর্মী। বিজেপির নির্বাচনী কার্যালয় ভাঙচুর করে আগুন লাগানোর অভিযোগ তৃণমূলের বিরুদ্ধে। অভিযোগ অস্বীকার তৃণমূলের।

ছবি : সংগৃহীত

নির্বাচন কমিশন সূত্রে জানানো হয়েছে, সকাল ৯টা পর্যন্ত জলপাইগুড়িতে ভোট পড়েছে ১৬ দশমিক ৮৬ শতাংশ, দার্জিলিং এ ১৬ দশমিক ১৪ শতাংশ রায়গঞ্জে ১৭ দশমিক ৪৫ শতাংশ। সব মিলিয়ে এই তিন আসনে সকাল ৯টা পর্যন্ত গড় ভোট পড়েছে ১৬ দশমিক ৭৬ শতাংশ

হেমতাবাদের মহজমপুরে কেন্দ্রীয় বাহিনীর দাবিতে বিক্ষোভ বাসিন্দাদের। পুলিশের সঙ্গে বচসায় জড়িয়ে পড়েন গ্রামবাসীরা। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পৌঁছেলে কুইক রেসপন্স টিম। আব্দুলঘাটার ১৮৫ নম্বর বুথে সকাল থেকে বাসিন্দারা বিক্ষোভ দেখাতে শুরে করেছেন। বাসিন্দাদের অভিযোগ, ওই বুথে আধা সেনা থাকলেও কোনও ভোটকর্মী নেই। সে কারণেই বাসিন্দারা বিক্ষোভ দেখান। আব্দুলঘাটার ১৮৫ নম্বর বুথে তালা লাগিয়ে দেন তাঁরা।

২০১৯ লোকসভা ভোটের দ্বিতীয় দফায় ১৩টি রাজ্যের সঙ্গে এ রাজ্যেও তিনটি আসনের ভোট। দার্জিলিং, জলপাইগুড়ি এবং রায়গঞ্জ কেন্দ্রের ভোটগ্রহণের চূড়ান্ত প্রস্তুতি সারা হয়ে গিয়েছে। তিন কেন্দ্রের ভোটগ্রহণে নজর রয়েছে রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদেরও। দ্বিতীয় দফার ভোটগ্রহণে সকাল থেকেই বুথে পৌঁছে গিয়েছেন ভোটকর্মীরা। সেই সঙ্গে রয়েছেন নিরাপত্তা কর্মীরা। অন্য দিকে গতকাল বুধবার থেকেই উত্তেজনাপ্রবণ বুথগুলির দখল নিয়েছে কেন্দ্রীয় বাহিনী। এ ছাড়াও রয়েছে নির্বাচন কমিশনের পর্যবেক্ষকরা।

ভৌগোলিক অবস্থান এবং ভোটারদের চরিত্রগত দিক থেকে বাংলার অন্যান্য আসনের চেয়ে দার্জিলিং বরাবরই আলাদা। একদিকে যেমন রয়েছে দার্জিলিং, কালিম্পং, কার্শিয়াঙের মতো পাহাড়ি এলাকা, তেমনই সমতলের শিলিগুড়ি, মাটিগাড়া-নকশালবাড়ি এবং ফাঁসিদেওয়া বিধানসভা কেন্দ্রও এই লোকসভার অন্তর্গত।

ছবি : আনন্দবাজার

আবার আলাদা জেলা উত্তর দিনাজপুরের চোপড়াও এই লোকসভার মধ্যে পড়ে। ফলে রাজনৈতিক দিক থেকেও বৈচিত্রে ভরা এই কেন্দ্র। গোর্খা জনমুক্তি মোর্চার বিনয় তামাং গোষ্ঠী এ বার ভোটে তৃণমূলকে সমর্থন করেছে। বিমল গুরুং গোষ্ঠী পাহাড়ছাড়া হলেও তাঁর অনুগামীদের প্রভাব এখনও যে কিছুটা রয়েছে, তা অস্বীকার করার উপায় নেই।

এক সময় পাহাড়ের একছত্র অধিপতি সুবাস ঘিসিংয়ের জিএনএলএফ-এর প্রভাবও রয়েছে। তাঁর ছেলের নেতৃত্বে জিএনএলএফ এবং বিমল গুরুং গোষ্ঠী বিজেপি প্রার্থীকে সমর্থন করেছেন। ফলে দার্জিলিং, কার্শিয়াং, কালিম্পঙে হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ের সম্ভাবনা।

রায়গঞ্জ এক সময় কংগ্রেসের শক্তি ঘাঁটি ছিল। প্রিয়রঞ্জন দাশমুন্সির খাসতালুকের ভোট ঘিরে রাজনৈতিক শিবিরে কৌতুহল তুঙ্গে। কিন্তু প্রিয়রঞ্জন অসুস্থ হওয়ার পর থেকেই ক্ষমতা খর্ব হতে থাকে কংগ্রেসের। ২০১৪ সালে তাঁর স্ত্রী দীপা দাশমুন্সি এই কেন্দ্রে প্রার্থী হন। কিন্তু, মোহাম্মদ সেলিমের কাছে মাত্র দেড় হাজার ভোটের ব্যবধানে হেরে যান দীপা। এ বারও দু’জনই প্রার্থী। তৃণমূল প্রার্থী কানাইয়ালাল আগরওয়াল এবং বিজেপির দেবশ্রী চৌধুরীকে নিয়ে এ বারও চতুর্মুখী লড়াই রায়গঞ্জ কেন্দ্রে।

জলপাইগুড়ি লোকসভা কেন্দ্রের রাজনীতিতে চা বাগান বরাবরই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নেয়। অনেক সময় নির্নায়ক শক্তিও হয়ে ওঠেন চা-বাগানের ভোটাররা। বাঙালির পাশাপাশি আদিবাসী এবং নেপালি মিলিয়ে মিশ্র ভোটারের সংখ্যাও নেহাত কম নয় এই এলাকায়।

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া

 

সম্পাদকীয় কার্যালয় 

১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।

যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702 

ই-মেইল: [email protected]

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড