• শনিবার, ১৮ মে ২০২৪, ৪ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১  |   ৩৩ °সে
  • বেটা ভার্সন
sonargao

ট্রাম্পের আয়কর বিবরণী প্রকাশে ৯ দিনের আল্টিমেটাম

  আন্তর্জাতিক ডেস্ক

১৪ এপ্রিল ২০১৯, ১৪:১৬
ডোনাল্ড ট্রাম্প
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। (ছবিসূত্র : সিএনএন)

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের গত ছয় বছরের সম্পূর্ণ আয়কর বিবরণী প্রকাশের জন্য দেশটির অভ্যন্তরীণ রাজস্ব বিভাগের কাছে সময় বেঁধে দিয়েছে মার্কিন ডেমোক্র্যাট দলের আইন প্রণেতারা। গত শনিবার (১৩ এপ্রিল) মার্কিন কংগ্রেস একদল ডেমোক্র্যাট সদস্য আগামী ২৩ এপ্রিলের মধ্যে এটি পার্লামেন্টে সরবরাহের জন্য রাজস্ব বিভাগকে এই আল্টিমেটামটি দিয়েছেন।

রবিবার (১৪ এপ্রিল) বার্তা সংস্থা রয়টার্সে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে বলা হয়, যে কারণে মার্কিন ট্রাম্প প্রশাসনের বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপ গ্রহণের পথে হাঁটছেন ডেমোক্র্যাট দলের আইন প্রণেতারা। এ বিষয়ে ইতোমধ্যে দেশের আয়কর বিভাগকে সতর্ক করে দিয়েছেন প্রতিনিধি পরিষদের ওয়েজ অ্যান্ড মিনস কমিটির চেয়ারম্যান রিচার্ড নীল।

ওয়েজ অ্যান্ড মিনস কমিটির এ চেয়ারম্যান বলেন, ‘আগামী ২৩ এপ্রিলের মধ্যে মার্কিন আইন প্রণেতাদের কাছে ট্রাম্পের গত ছয় বছরের আয়কর বিবরণী অবশ্যই সরবরাহ করতে হবে। অন্যথায় বিষয়টিকে কংগ্রেসের প্রতি রাজস্ব বিভাগের অবজ্ঞা বলেও বিবেচিত হবে।’

রিচার্ড নীল তার চিঠিতে আরও বলেন, ‘আমাদের ফেডারেল ট্যাক্স আইন সম্পর্কিত আইন প্রণয়নের প্রস্তাব এবং নজরদারি বৃদ্ধির জন্য প্রস্তাবটির প্রয়োজন রয়েছে। তবে এটির সীমাবদ্ধতা এবং আইআরএসের পরিমাণ ঠিক কতটুকু তাও আমাদের নিশ্চিত করতে হবে।’

এর মাধ্যমে এটাই প্রমাণিত হয় যে, মার্কিন ডেমোক্র্যাট দলীয় আইন প্রণেতারা মূলত প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের গত ছয় বছরের ব্যক্তিগত এবং ব্যবসায়িক আয়কর বিবরণী দেখতে ভীষণ আগ্রহী। যদিও ইতোমধ্যে এ ব্যাপারে পার্লামেন্টের নিম্নকক্ষ হাউস অব রিপ্রেজেন্টেটিভসের পক্ষ থেকে দেশের অভ্যন্তরীণ রাজস্ব বিভাগের কমিশনার চার্লস রেটিগ বরাবর একটি চিঠিও পাঠানো হয়েছে। চিঠিটি মূলত ওয়েজ অ্যান্ড মিনস কমিটির চেয়ারম্যান রিচার্ড নীলের কাছ থেকে পাঠানো হয়।

od

মার্কিন ওয়েজ অ্যান্ড মিনস কমিটির চেয়ারম্যান রিচার্ড নীল। (ছবিসূত্র : দ্য পলিটিকো)

এদিকে রিচার্ড নীল এক বিবৃতিতে বলেন, ‘আমাদের এখন সরকার এবং নির্বাচিত কর্মকর্তাদের জবাবদিহিতার আওতায় আনা ভীষণভাবে প্রয়োজন হয়ে দাঁড়িয়েছে। বর্তমানে এটা অবশ্যই আমাদের নিশ্চিত করতে হবে। আমাদের এই গণতন্ত্রের উপর আস্থা বজায় রাখার জন্য মার্কিন জনগণকে এ বিষয়টি আশ্বস্ত করতে হবে যে, তাদের সরকার এখন সঠিকভাবে কাজ করে যাচ্ছে।’

অপরদিকে শনিবার (১৩ এপ্রিল) মার্কিন ট্রেজারি সেক্রেটারি স্টিভেন মুনচিন সাংবাদিকদের বলেছিলেন, ‘নীল নির্দিষ্ট সময়সীমার মধ্যেই এই তারিখগুলো বেছে নিচ্ছেন। আমি তার এই প্রস্তাব অনুসরণ করতে ইচ্ছুক। তবে আমরা এও মনে করি যে, এই বিষয়গুলো ভীষণ জটিল। কেননা অনেক কঠিন কঠিন সমস্যাগুলো তুলে ধরে ডেমোক্র্যাটদের এক্ষেত্রে এগোতে হবে।’

স্টিভেন মুনচিন এও বলেছেন, ‘যে কারণে আমি এই বিষয়কে অতি সহজ বলে মনে করি না। সেক্ষেত্রে ওয়াশিংটনের আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল এবং বিশ্বব্যাংকের বসন্ত বৈঠকের পাশাপাশি একটি সাংবিধানিক সমস্যাও রয়েছে। যা অবশ্যই তাদের অতিক্রম করতে হবে। তাছাড়া আগামী ২৩ এপ্রিলের মধ্যে আল্টিমেটামটি ঠিক কতটা বাস্তবায়ন হবে তাও একটি ভাবার বিষয়। কেননা বিষয়টি পর্যালোচনা করে সম্পন্ন করতে হবে।’

হোয়াইট হাউস এবং প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের আয়কর রিটার্ন প্রসঙ্গে মার্কিন বিচার বিভাগের সম্পর্কের বিষয়ে মিনুচিন বলেন, ‘চলতি সপ্তাহের শুরুতে কমিটি কর্তৃপক্ষকে সুযোগ প্রদান এবং মার্কিন কর্মকর্তাদের গোপনীয়তা সুরক্ষাসহ লুকায়িত নথি খোঁজার জন্য ডেমোক্র্যাট আইন প্রণেতাদের কাছে আইনটি প্রণয়ন প্রয়োজন। আর এটিই হচ্ছে আমার অন্যতম উদ্বেগের একটি বিষয়।’

যদিও ওয়েজ অ্যান্ড মিনস কমিটির চেয়ারম্যান রিচার্ড নীলের দাবি, ‘আইআরএস, ট্রেজারি বা জাস্টিসদের সঙ্গে যথাযথ ফাংশনটি কমিটির অনুরোধকৃত ট্যাক্স রিটার্ন এবং ফেরতের তথ্য সম্পর্কিত তার যুক্তিসঙ্গত সিদ্ধান্তগুলোর বিষয়ে প্রশ্ন বা অনুমান করা নয়। অনুগ্রহ করে জানুন, যদি আপনি মেনে চলতে ব্যর্থ হন; তাহলে আপনার ব্যর্থতা আমার অনুরোধ অস্বীকার হিসাবে ব্যাখ্যা করা হবে।’

বিশ্বের সকল দেশেই যে সব ব্যক্তির আয় বেশি তাকে আয়কর দিতে হয় বেশি। তবে সেই আয়করের বিস্তারিত বিবরণী গোপন রাখতে স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করেন অনেকে। যদিও প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পও সে কাজটিই করেছেন। কিন্তু ২০১৭ সালে যুক্তরাষ্ট্রের বেসরকারি টেলিভিশন নেটওয়ার্ক ‘এমএসএনবিসি’ তার পুরনো একটি আয়কর নথি ফাঁস করে দিয়ে বিশ্ব ব্যাপী হৈ চৈ ফেলে দেয়।

সেখানে বলা হয়, ২০০৫ সালে মোট ৩৮ মিলিয়ন ডলার আয়কর দিয়েছিলে ট্রাম্প। যদিও সে বছর তিনি তার আয়কর বিবরণীতে তার আয়ের পরিমাণ দেখিয়েছেন ১৫০ মিলিয়ন ডলারের বেশি।

ট্রাম্পের পুরনো সেই আয়কর নথিতে দেখা যায়, ২০০৫ সালে ট্রাম্প যে পরিমাণ আয়কর দিয়েছেন সেটি তার মোট উপার্জনের প্রায় ২৪ শতাংশ। সাধারণত মার্কিনীরা গড়ে যে পরিমাণ আয়কর দেন এটি তার চেয়ে অনেক বেশি। তবে দেশটির উচ্চ আয়ের লোকজন বছরে গড়ে ২৭ দশমিক ৪ শতাংশ আয়কর দেন। আর ট্রাম্পের আয়কর তাদের তুলনায় অনেক কম।

আরও পড়ুন :- অ্যাসাঞ্জকে যুক্তরাষ্ট্রে হস্তান্তর না করতে লেবার পার্টির আহ্বান

যুক্তরাষ্ট্রের রেওয়াজে আছে, মার্কিন নির্বাচনে যারা প্রেসিডেন্ট প্রার্থী হন, তারা সব সময় নিজ থেকেই তাদের আয়কর বিবরণী প্রকাশ করে থাকেন। যা ১৯৭৬ সালে প্রথম এই রীতিটি পালন করা হয়। পরবর্তীতে তখন থেকে সকল প্রেসিডেন্ট প্রার্থীরা এই রীতিটি পালন করে আসছেন। যদিও দেশের আইন অনুযায়ী এর কোনো বাধ্যবাধকতা নেই। এবার সেই আইনের দোহাই দিয়েই ট্রাম্প প্রচলিত সেই রেওয়াজটি ভঙ্গ করেছেন।

ওডি/কেএইচআর

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া

 

সম্পাদকীয় কার্যালয় 

১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।

যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702 

ই-মেইল: [email protected]

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড