আন্তর্জাতিক ডেস্ক
পাকিস্তান সীমান্ত সংলগ্ন এলাকায় অন্তত ১৪০টি শক্তিশালী যুদ্ধবিমান নিয়ে এক বিরাট সামরিক মহড়া চালিয়েছে ভারতীয় বিমানবাহিনী। এমন সময়ে দুদেশের সীমান্তে এই মহড়াটি চালানো হল যখন কাশ্মিরের পুলওয়ামায় জঙ্গিদের আত্মঘাতী বোমা হামলায় এক দল ভারতীয় সেনা সদস্য প্রাণ হারানোয় পাক-ভারত সম্পর্কে নতুন করে উত্তেজনার সৃষ্টি হয়েছে।
রবিবার (১৭ ফেব্রুয়ারি) ভারতীয় বিমানবাহিনীর দেওয়া তথ্যের বরাতে করা প্রতিবেদনে এই সামরিক মহড়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেছে দেশটির সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি।
প্রতিবেদনে বলা হয়, পাকিস্তান ভিত্তিক সশস্ত্র জঙ্গি সংগঠন জয়েশ-ই-মোহাম্মদের ঘাঁটিতে পাল্টা হামলা চালানোর পরিকল্পনার অংশ হিসেবে এই মহড়াটি চালিয়েছে ভারতীয় বিমান বাহিনী।
এদিকে এই মহড়ার বিষয়ে ভারতীয় বিমান বাহিনীর প্রধান মার্শাল বীরেন্দ্র সিংহ ধনোয়া বলছেন, ‘দেশের রাজনৈতিক নেতাদের নির্দেশনা অনুযায়ী যে কোনো সময় উপযুক্ত জবাব দেওয়ার জন্য প্রস্তুত রয়েছে বিমানবাহিনী।’ যদিও ভারতীয় বায়ুসেনা হিসেবে পরিচিত শক্তিশালী এই বাহিনীটির প্রধান পাকিস্তান কিংবা পুলওয়ামা হামলার বিষয়ে একটি কথাও উল্লেখ করেননি।
দেশটির বিমানবাহিনীর এ প্রধান আরও বলেছিলেন, ‘আমি গোটা জাতিকে আশ্বাস দিয়ে বলতে চাই ভারতীয় বিমানবাহিনীর সক্ষমতা এবং প্রতিজ্ঞা আমাদের জাতীয় নিরাপত্তা ও সার্বভৌমত্বের ওপর যেকোনো চ্যালেঞ্জ মোকাবিলার জন্য প্রস্তুত রয়েছে।’
অপরদিকে সেনাবাহিনীর জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তাদের বরাতে দেশটির সংবাদমাধ্যম এনডিটিভির প্রতিবেদনে বলা হয়, ভারতীয় বিমানবাহিনী তাদের আগাম পরিকল্পনার অংশ হিসেবেই এ মহড়াটি চালিয়েছে। জরুরি নির্দেশনায় যাতে বাহিনীটি সঠিক লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হানাসহ মিশন পরিচালনা করতে সক্ষম হয় মূলত তা নিশ্চিত করতেই এই মহড়াটি পরিচালনা হয়েছে।’
ভারতীয় বিমানবাহিনী এবারের মহড়ায় লাইট কমব্যাট এয়ারক্রাফট ‘তেজা’, অ্যাডভান্সড লাইট হেলিকপ্টার ছাড়াও ভূমি থেকে আকাশে উৎক্ষেপণ যোগ্য ক্ষেপণাস্ত্রবাহী বিমান ‘আকাশ’ এবং আকাশ থেকে আকাশে ক্ষেপণাস্ত্র ছুড়তে সক্ষম অসংখ্য বিমানও ছিল।
এ সময় এসব যুদ্ধবিমান ছাড়াও আকাশ থেকে ভূমিতে হামলা করতে সক্ষম উন্নতমানের মিগ-২৯ যুদ্ধবিমানের মহড়া চালায় বিমানবাহিনী। বিমানবাহিনীর এই মহড়ায় সুখোই-৩০, মিরেজ-২০০০, জাগুয়ার, মিগ-২১, বিসন, মিগ-২৭, মিগ-২৯, আইএল৭৮, হারকিউলিস এবং এএন-৩২ নিয়ে মোট ১৩৭টি বিমান দিয়ে এই মহড়াটি পরিচালনা হয়।
উল্লেখ্য, গত বৃহস্পতিবার (১৩ ফেব্রুয়ারি) ভারত নিয়ন্ত্রিত জম্মু কাশ্মিরে এক আধাসামরিক বাহিনীর গাড়ি বহরে পাকিস্তানভিত্তিক জঙ্গি সংগঠন জয়েশ-ই-মোহাম্মদের করা হামলায় অন্তত ৪৪ সেনা নিহত হন। হামলার সময় গাড়িটিতে ভারতের কেন্দ্রীয় রিজার্ভ পুলিশ বাহিনীর (সিআরপিএফ) কমপক্ষে ৫৪ জন সদস্য ছিলেন।
নির্মম এ হামলার ঘটনার পর সেনাবাহিনীকে যেকোনো পদক্ষেপ গ্রহণের স্বাধীনতা দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। যদিও এতসংখ্যক সেনা সদস্যকে একসঙ্গে আকাশ পথে না পাঠিয়ে কেন এভাবে সড়ক পথে পাঠানো হল এবার তা নিয়ে ইতোমধ্যে দেশটির রাজনৈতিক মহলে নানা প্রশ্ন সৃষ্টি হয়েছে।
নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া
সম্পাদকীয় কার্যালয়
১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।
যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702
ই-মেইল: [email protected]
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।
Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড