লুক্সেমবার্গে সর্বসাধারণ বিনামূল্যে চড়তে পারবে গণপরিবহনে

ইউরোপের অন্যতম আধুনিক দেশ ও বিশ্বে মাথাপিছু গড় আয়ুর দেশের তালিকায় শীর্ষ দেশগুলোর তালিকায় থাকা একটি দেশ হচ্ছে লুক্সেমবার্গ। সম্প্রতি দেশটির সরকার সকল গণপরিবহনে বিনামূল্যে যাতায়াতের সুবিধা ঘোষণার পরিকল্পনা করেছে। আগামী গ্রীষ্ম থেকে ট্রেন, ট্রাম ও বাসে চড়ার ক্ষেত্রে ভাড়া প্রদানের বাধ্যবাধকতা প্রত্যাহার করে নেওয়া হবে। আধুনিক এই দেশটিতে এ পরিকল্পনা বাস্তবায়িত হলে লুক্সেমবার্গই হবে বিশ্বে গণপরিবহনকে ভাড়ামুক্ত ঘোষণাকারী প্রথম দেশ। 'দা গার্ডিয়ান'

ইউরোপের এই দেশটিতে সম্প্রতি সাধারণ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়, জেভিয়ার বেটেলের নেতৃত্বাধীন জোট সরকার পুনর্নির্বাচিত হয়েছে। এই নির্বাচনের পরে জানা যায়, দেশটিতে ডেমোক্র্যাটিক পার্টি, বামপন্থী সোশ্যালিস্ট ওয়ার্কার্স পার্টি ও গ্রিনস- জোটবদ্ধভাবে সরকার গঠন করবে।

বুধবার (৫ ডিসেম্বর) লুক্সেমবার্গের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দ্বিতীয় মেয়াদে শপথ নিয়েছেন ব্যাটেল। এবারের নির্বাচনে পরিবেশবিষযক ইস্যুকে অগ্রাধিকার দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়ে প্রচারণা চালিয়েছেন বেটেল। তারই ধারাবাহিকতায় এই পরিকল্পনা গ্রহণ করতে যাচ্ছে দেশটি।

লুক্সেমবার্গ বরাবরই পরিবহনের ক্ষেত্রে প্রগতিশীল দৃষ্টিভঙ্গি দেখিয়ে আসছে। আসন্ন গ্রীষ্মে প্রতিটি শিশু ও ২০ বছরের কম বয়সীদের জন্য বিনামুল্যে গণপরিবহনে চড়ার সুবিধা দিয়েছিল সরকার। মাধ্রমিক পর্যায়ের শিক্ষার্থীরা বিনামূল্যে শাটল ট্রেনে চড়ে তাদের বাড়ি থেকে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে যেতে পারতো। শুধু দুই ঘণ্টার ভ্রমণ পর্যন্ত ভাড়া গুনতে হতো যাত্রীদের।

কিন্তু এবার সবকিছু ছাপিয়ে নতুন ঘোষণার আভাস মিলেছে এবার, ২০১৯ সালের গ্রীষ্ম থেকে গণপরিবহনে চড়ার ক্ষেত্রে একেবারেই ভাড়া না নেওয়ার পরিকল্পনা করেছে সরকার। অবশ্য ট্রেনের প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণির কামরায় কী ব্যবস্থা নেওয়া হবে সে ব্যাপারে এখনও সিদ্ধান্ত হয়নি।

দেশটির মোট জনসংখ্যা ৬ লাখ, লুক্সেমবার্গে কাজ করতে ফ্রান্স, বেলজিয়াম ও জার্মানি থেকে প্রতিদিন প্রায় ২ লাখ মানুষ সীমান্ত পেরিয়ে আসে। আর লুক্সেমবার্গের রাজধানী লুক্সেমবার্গ সিটিতে ১ লাখ ১০ হাজার মানুষের বসবাস।

এছাড়াও বিভিন্ন দেশ থেকে আরও ৪ লাখ মানুষ শহরটিতে ভিড় জমিয়েছে। শহরটি বিশ্বের শীর্ষ যানজটপূর্ণ এলাকাগুলোর একটি। ২০১৬ সালে লুক্সেমবার্গ সিটির গাড়ি চালকদেরকে গড়ে ৩৩ ঘণ্টা যানজটে কাটাতে হয়েছে।