• শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১  |   ৩০ °সে
  • বেটা ভার্সন
sonargao

দিল্লির সংসদ অভিমুখে ছুটেছে লাখো কৃষক

  অধিকার ডেস্ক    ৩০ নভেম্বর ২০১৮, ২০:১৭

ভারতের কৃষক আন্দোলন
যাদের ভোটে বিজপি ক্ষমতায় আসে সেই কৃষকদের বিরুদ্ধে নীতিমালা করেছে, যারা ফলে সেই ভোটার কৃষক বাধ্য হয়েছে আত্মহত্যা করতে। ছবি : সংগৃহীত

ভারতের কৃষি সংকট গভীর হতে থাকলে দেশটির রাজধানীতে অবস্থিৎ সংসদ অভিমুখে বিক্ষোভ করতে করতে ছুটে চলেছে লাখো কৃষক। খরামুক্তি, ঋণ মওকুফ ও ভাল দামের দাবিতে বৃহস্পতিবার (২৯ নভেম্বর) সারা দেশ থেকে কৃষকরা একসঙ্গে জড়ো হয়। ‘বিবিসি নিউজ’

দেশটির প্রধান বিরোধী দল কংগ্রেস পার্টির সভাপতি রাহুল গান্ধী এবং দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়াল ‘যন্তর মন্তরে’ কৃষকদের এই বিক্ষোভ মিছিলে যোগ দেবেন বলে জানিয়েছে এনডিটিভি। পার্লামেন্ট স্ট্রিট পুলিশ স্টেশনের কাছে প্রায় ৩৫ হাজার কৃষককে পুলিশ আটকে রেখেছে।

ভারতীয় কৃষিতে কয়েক দশক ধরে পানিস্বল্পতা এবং উৎপাদনশীলতা হ্রাস পেয়েছে। গত এক বছরে এই নিয়ে ৪ বারের মতো কৃষক বিক্ষোভ সংঘটিত হয়েছে দেশটিতে।

ছবি : সংগৃহীত

দেশটির ভোটের একটি বিশাল সংখ্যক অংশ হলো কৃষক, বিশেষজ্ঞদের মতে এমন বিক্ষোভকে অবজ্ঞা করা আগামী বছরে অনুষ্ঠিৎ হতে যাওয়া সাধারণ নির্বাচনে ভারতীয় জনতা পার্টি (বিজেপি)কে মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করতে পারে।

বিক্ষোভকারীদের মধ্যে লখন পাল সিং নামক একজন কৃষক বার্তা সংস্থা ‘রয়টার্স’কে বলে, ‘আমরা বিজেপিকে ভোট দিয়ে ক্ষমতায় এনেছি। আমি এমন অনেক কৃষককে চিনি যারা মোদি সরকারকে ভোট দিয়েছে তারা সেই সরকারের করা কৃষি নীতির ফলে আত্মহত্যা করেছে। মোদী সরকার আমাদের কঠিনভাবে আঘাত করেছে।’

এই বিক্ষোভে স্বাভাবিকভাবেই মোদির ভারতীয় জনতা পার্টির (বিজেপি) জন্য উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। আগামী বছর মে মাসে দেশটিতে জাতীয় নির্বাচন। ২৬ কোটির বেশি কৃষকের ভোট নির্বাচনের ফলাফল নির্ধারণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।

তাদের প্রধান দাবিগুলির মধ্যে একটি হল একটি বিশেষ সংসদীয় অধিবেশনের আয়োজন করা যা কৃষক সংকটের সমাধান নিয়ে আলোচনা করতে পারে, যার মধ্যে একটি সম্পূর্ণ ঋণ মওকুফ এবং ফসলের ভালো দাম অন্তর্ভুক্ত থাকবে।

ছবি : সংগৃহীত

ভারতের জনসংখ্যার অর্ধেক কৃষি কাজ করে, কিন্তু দেশের জিডিপিতে কেবলমাত্র ১৫ শতাংশ অবদান থাকে কৃষির। কৃষকদের এই বিক্ষোভ মিছিল প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী সরকারের বিরুদ্ধে সবচেয়ে বড় প্রতিবাদ সমাবেশের একটিতে পরিণত হতে যাচ্ছে। ভারতের ২ দশমিক ৬ ট্রিলিয়ন মার্কিন ডলারের বিশাল অর্থনীতিতে কৃষির অবদান ১৫ শতাংশের বেশি। ভারত এশিয়ার তৃতীয় বৃহৎ অর্থনীতির দেশ।

বেশিরভাগ রাজ্যে সরকারগুলি তাদের ফসলের জন্য কৃষকদের আরও বেশি অর্থ প্রদানের অনীহা প্রকাশ করে। ফেডারেল সরকার উৎপাদন বৃদ্ধির জন্য এবং আয় সহায়তা নিশ্চিত করতে কৃষকদের কাছ থেকে ফসল উৎপাদনের জন্য এবং উৎপাদনের মূল্য নির্ধারণ করে দেয় যা পর্যাপ্ত নয়।

'একের পর এক কৃষক আত্মহত্যার পথ বেছে নিচ্ছেন। যারা আমাদের খাবারের যোগান দেন তাদের জন্য সরকারের কাছে কোনো সময় নেই, এটা ভীষণ লজ্জার’ বলে জানান বিক্ষোভকারীদের নেতা যোগেন্দ্র যাদব।

ভারতের সবচেয়ে জনবহুল উত্তর প্রদেশ থেকে আসা লখন পাল সিং বলেন, “আমি নিজে এমন অনেক কৃষককে চিনি যারা আত্মহত্যা করেছেন। তাদের পরিবার এখন চরম দারিদ্রের মধ্যে বসবাস করছে।

ছবি : সংগৃহীত

২০১৭ সালে কৃষিজাত পণ্যের মূল্য বৃদ্ধির দাবিতে মধ্য প্রদেশের কৃষকরা আন্দোলন শুরু করেছিল। ওই আন্দোলন দমাতে পুলিশের গুলিতে অন্তত ছয় কৃষক নিহত হয়। কন্যা, স্ত্রী এবং কৃষকদের অন্যান্য পরিবারের সদস্যরা যারা ফসলের ব্যর্থতা বা মাউন্টিং ঋণের উপর নিজের জীবন নিয়েছেন তারাও প্রতিবাদে অংশগ্রহণ করছেন - তাদের মধ্যে অনেকে তাদের প্রিয়জনদের ফটোগ্রাফ বহন করে।

শুধুমাত্র কৃষকেরা বা তাদের পরিবারের সদস্যরা ই না , প্রকৌশল,মেডিকেলসহ অনেক শিক্ষার্থী,শিক্ষক অংশগ্রহন করেছে এই বিক্ষোভে। বহু শিক্ষক, শিল্পী, কলা-কুশলীসহ আইনজীবীরা কৃষকদের মাঝে খাবার, পানি সরবারহ করাসহ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে আন্দোলনের সংবাদ ছড়িয়ে দিয়েছে।

দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক মোনামি বসু যিনি এই বিক্ষোভে অংশ নিয়েছে তিনি বলেন, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের কল্যাণে কৃষকদের আন্দোলন নিয়ে সচেতনতা বৃদ্ধি পেয়েছে। উত্তেজিত কৃষকদের সাথে একাত্মতা প্রদর্শন করার জন্য আমি এই বিক্ষোভে অংশ হতে চাই।’

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া

 

সম্পাদকীয় কার্যালয় 

১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।

যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702 

ই-মেইল: [email protected]

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড