অধিকার ডেস্ক ২৩ নভেম্বর ২০১৮, ১৯:৪৮
মাত্র ১৮ মাসে ২২ হাজার অন্তঃসত্ত্বা শিশু হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে বলে জানায় তুরস্কের প্রেসিডেন্সি ডিরেক্টরেট অফ কমিউনিকেশন। ২০১৭ সালের জানুয়ারি থেকে ২০১৮ সালের জুন মাস পর্যন্ত বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি হওয়া অন্তঃসত্ত্বা শিশুর সংখ্যা ২১ হাজার ৯৫৭ জন। ‘ডয়েচে ভেলে’
তুরস্কের প্রধান বিরোধী দল রিপাবলিকান পিপলস পার্টির আইনপ্রণেতা ও চিকিৎসক আলী সেকের ডিরেক্টরেটের কাছে এই বিষয়ে তথ্য জানতে চেয়েছিলেন। পরে তিনি এই বিষয়ে বলেন, এই তথ্যে এটাই প্রমাণিত হয়, প্রতিদিন তুরস্কে ৪০ জনেরও বেশি শিশুকে গর্ভধারণে বাধ্য করা হচ্ছে। তারা নিজেরাই শিশু এবং তাদের এখন স্কুলে যাওয়ার বয়স।
ছবি : সংগৃহীত
চলতি বছরের শুরুতেও পার্লামেন্টে এ নিয়ে প্রশ্ন তোলেন তিনি। দুটি হাসপাতালে নিবন্ধন ছাড়াই অন্তঃসত্ত্বা শিশুদের ভর্তি করার সংবাদ তখন গণমাধ্যমে প্রকাশ হয়। ১১৫ অন্তঃসত্ত্বা শিশুর মধ্যে ৩৮ জনের বয়স ছিল ১৫ বছরের কম। এর ভিত্তিতে সেকের এক লিখিত প্রশ্নে জানতে চান, স্বাস্থ্যকর্মীরা কেন এই বিষয়ে পুলিশকে জানায়নি। তবে তথ্য জানতে চেয়ে করা তার এই প্রশ্নের কোনো উত্তর দেয়নি পার্লামেন্ট।
তুরস্কের আঙ্কারা বার অ্যাসোসিয়েশনের শিশু অধিকার কেন্দ্রের সহসভাপতি এমরাহ সাহিনের প্রশ্ন, ২১ হাজার ৯৫৭ টি ঘটনা কি পুলিশকে জানানো হয়েছে? তুরস্কের পেনাল কোডের বরাত দিয়ে তিনি বলেন, অপ্রাপ্তবয়স্ক গর্ভধারণের তথ্য যথাযথ কর্তৃপক্ষকে জানাতে স্বাস্থ্য কর্মকর্তারা বাধ্য। পুলিশকে সব ঘটনা না জানানোয় এই ধরনের ঘটনা আসলে কী পরিমাণ ঘটেছে, তা জানাও কষ্টসাধ্য বলে মনে করেন সাহিন।
ছবি : সংগৃহীত
সাহিন বলেন, এই সংখ্যা কেবল নিবন্ধিতদের। অনিবন্ধিত গর্ভধারণের তো কোনো হিসাব নেই। আসল সংখ্যা ৪০ থেকে ৪৫ হাজারের মধ্যে হবে বলেও আশঙ্কা তার। তুরস্কের বিচার বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের দেয়া তথ্যে এই ১৮ মাসে শিশু গর্ভধারণ ও শিশু যৌন নির্যাতনে দায়ের করা মামলার হিসাবে কিছুটা গরমিল দেখা দিয়েছে।
তুরস্কের মোট জনসংখ্যা প্রায় আট কোটি, সেখানে ২০১৭ সালেই শিশু যৌন নির্যাতনের মামলা হয়েছে ৩৫ হাজার ৮৯৬টি। ফলে শিশু গর্ভধারণের ঘটনাগুলোর কয়টা আসলেই পুলিশকে জানানো হয়েছে, এ নিয়ে প্রশ্ন থাকছেই।
২০১৬ সালে ১৫ বছরের কম বয়সী মেয়েদের সন্তান জন্মদানের ঘটনা ঘটেছে ২৩৪টি। ১৫ থেকে ১৭ বছরের মেয়ের ক্ষেত্রে এ সংখ্যা ১৬ হাজার ৩৯৬ টি বলে জাতীয় পরিসংখ্যান ইনস্টিটিউটের তথ্যে উঠে আসে।
ছবি : ডয়েচে ভেলে
‘শুধু সংখ্যা নয়, সামাজিক, সাংস্কৃতিক এবং আইনি দৃষ্টিভঙ্গি থেকেও এইসব ঘটনার বিশ্লেষণ দরকার’ বলে জানায় যৌন অপরাধ নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে কাজ করা বেসরকারি সংস্থা অ্যাসোসিয়েশন ফর স্ট্রাগল অ্যাগেইনস্ট সেক্সুয়াল ভায়োলেন্সের সদস্য হিলাল এসমার। তিনি বলেন, আমরা যদি শিশু গর্ভধারণের সংখ্যা কমাতে চাই, তাহলে আমাদের আগে শিশুদের অধিকার সম্পর্কে সচেতন করতে হবে। সবাইকে বুঝতে হবে, শিশুরা তাদের বাবা-মায়ের সম্পত্তি নয়।
তুরস্কে যৌন সম্পর্কে সম্মতির বয়স ১৮, সুতরাং ১৭ বছর বা তার কম বয়সের কেউ সম্মতি দিলেও আইন অনুযায়ী তা ধর্ষণ বলে গণ্য হবে। দেশটিতে বিয়ের ন্যূনতম বয়স ১৮ হলেও ১৭ থেকে ১৮ বছরের মধ্যে বাবা-মা বা অভিভাবকের সম্মতিতে অনানুষ্ঠানিকভাবে বিয়ে করতে পারেন।
নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া
সম্পাদকীয় কার্যালয়
১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।
যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702
ই-মেইল: [email protected]
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।
Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড