• শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১  |   ৩৩ °সে
  • বেটা ভার্সন
sonargao

সরকারি কাজে ব্যক্তিগত ইমেইল ব্যবহার : হিলারির মতোই ভুল ইভাঙ্কার

  এস এম সোহাগ

২০ নভেম্বর ২০১৮, ১৭:০০
ইভাঙ্কা ট্রাম্প
সরকারি কাজে ব্যক্তিগত ইমেইল ব্যবহারে হিলারির নাস্তানাবুদ অবস্থা করেছিলেন ট্রাম্প, বর্তমানে তার মেয়েই একই কাজ করেছেন। ছবি : সংগৃহীত

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এর কন্যা ইভাঙ্কা ট্রাম্প গেল বছর হোয়াইট হাউজের কর্মকর্তাদের সঙ্গে যোগাযোগের ক্ষেত্রে তিনি তার ব্যক্তিগত ইমেইল একাউন্ট ব্যবহার করেছিলেন বলে কর্মকর্তারা নিশ্চিত করেছেন। ‘বিবিসি নিউজ’

তার ইমেইলগুলো বিশ্লেষণ করে জানা যায় যে, তিনি তার ব্যক্তিগত ঠিকানা ব্যবহার করে সরকারি কর্মকর্তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। নিয়মকানুন সম্পর্কে অবহিত হওয়ার আগেই ট্রাম্পকন্যা ওইসব ইমেইল পাঠিয়েছিলেন বলে ইভাঙ্কার আইনজীবীরা দাবি করেছেন।

২০১৬ সালের মার্কিন নির্বাচনের সময়ে তার পিতার তৎকালীন নির্বাচনি প্রতিদ্বন্দ্বী হিলারি ক্লিনটন একই ধরণের কাজ করে প্রচারণা চালালে ডোনাল্ড ট্রাম্প অভিযোগ করেন যে হিলারি পররাষ্ট্রমন্ত্রী থাকাকালে ব্যক্তিগত ইমেইল ব্যবহার করে আমেরিকাকে ‘বিপদের মধ্যে’ ঠেলে দিয়েছে।

ছবি : সংগৃহীত

ইভাঙ্কার পাঠানো বেশিরভাগ ইমেইলেই ব্যক্তিগত ও দৈনন্দিন সাধারণ বিষয়াদি থাকলেও কোনো কোনোটি কেন্দ্রীয় নথি সংরক্ষণ আইন লংঘন করতে পারে বলেও আশঙ্কা করা হচ্ছে। ‘ওয়াশিংটন পোস্ট’

প্রেসিডেন্ট কন্যা ব্যক্তিগত ইমেইল অ্যাকাউন্ট থেকে যেসব বার্তা পাঠিয়েছেন তার কোনোটিতেই ‘শ্রেণিবদ্ধ তথ্য’ ছিল না। মূলত নিয়ম সম্বন্ধে জ্ঞানের অভাবের কারণেই ইভাঙ্কা এ কাজ করেছিলেন বলে দাবি তার। যখন তাকে ব্যক্তিগত ইমেইল সরকারি কাজে ব্যবহার না করার সম্পর্কে অবগত করা হয় তখন আর তিনি এমন কাজ করেন নি বলে এক সরকারি কর্মকর্তা ‘সিবিএস নিউজ’কে জানায়।

যদিও আমেরিকান ওভারসাইট গ্রুপের অস্টিন এভারস ট্রাম্প প্রশাসনের এ সাফাই মানতে রাজি নন। ‘তথ্যের স্বাধীনতা’ আইনের আওতায় এ গোষ্ঠীটির আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতেই হোয়াইট হাউসের কাছে গত বছর ইভাঙ্কার ব্যক্তিগত ইমেইল অ্যাকাউন্ট ব্যবহারের বিষয়টি উন্মোচিত হয়।

আমেরিকান ওভারসাইট গ্রুপের অস্টিন এভারস(উপরে বামে)। ছবি : সংগৃহীত

এভারস বলেন, ‘প্রেসিডেন্টের পরিবার আইনের উর্ধ্বে নয়। এখানে গুরুতর প্রশ্ন উঠেছে, কংগ্রেসের উচিত এসব দ্রুত খতিয়ে দেখা। আইন অনুযায়ী যেসব ইমেইল সংরক্ষিত রাখা দরকার ইভাঙ্কা কি সেগুলো উন্মোচন করেছেন? তিনি কি ব্যক্তিগত উদ্যোগে শ্রেণিবদ্ধ তথ্য বাইরে পাঠিয়েছেন?’।

২০১৬ এর প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের প্রচারে প্রতিদ্বন্দ্বীকে ঘায়েল করতে ক্লিন্টনের ইমেইল ব্যবহারের বিষয়টিকে হাতিয়ার করেছিলেন রিপাবলিকান প্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্প। ২০০৯ সালে পররাষ্ট্র মন্ত্রী থাকাকালে হিলারি ক্লিনটন ব্যক্তিগত সার্ভার ব্যবহার করে কর্মকর্তাদের বার্তা পাঠিয়েছিলেন। হিলারির ব্যক্তিগত সার্ভার ব্যবহার করার বিষয়টিতে ‘ওয়াটার গেইটের চেয়েও বড় কেলেঙ্কারি’ হিসেবে অ্যাখ্যা দিয়েছিলেন তিনি। ‘অবৈধ’ এ কর্মকাণ্ড যুক্তরাষ্ট্রের নিরাপত্তাকে হুমকির মুখে ফেলে দিয়েছে মন্তব্য করে দাপ্তরিক কাজে ডেমোক্রেট প্রার্থীর ব্যক্তিগত ইমেইল ব্যবহারের ঘটনাটির ধারাবাহিক সমালোচনা করেছিলেন ট্রাম্প।

তৎকালীন রিপাবলিকানদের প্রচারণা সমাবেশে হিলারিকে ‘কারাবন্দী কর’ স্লোগান দিতেও উৎসাহ দিতেন। নির্বাচনে জিতলে ব্যক্তিগত ইমেইল ব্যবহারকাণ্ডে ডেমোক্রেট প্রার্থীকে কারাগারে পাঠানোরও প্রতিশ্রুতি ছিল তার। হিলারি ও তার আইনজীবীরা ৩০ হাজারের মতো ইমেইলকে ‘ব্যক্তিগত বার্তা’ অ্যাখ্যা দিয়েছে, সেগুলো তদন্ত কর্মকর্তাদের কাছে উপস্থাপন করেননি। ট্রাম্প ওই বার্তাগুলো উন্মোচন করতে রাশিয়ার প্রতি আহ্বানও জানিয়েছিলেন।

ছবি : সংগৃহীত

পররাষ্ট্রমন্ত্রী হওয়ার আগেই হিলারি তার নিউ ইয়র্কের বাড়িতে ব্যক্তিগত ইমেইল সার্ভার তৈরি করেছিলেন। চার বছরের মন্ত্রীত্বকালে তিনি সব ব্যক্তিগত ও দাপ্তরিক বার্তা এই সার্ভার ব্যবহার করেই পাঠিয়েছিলেন। পররাষ্ট্রমন্ত্রীর ব্যবহারের জন্য মার্কিন সরকার যে রাষ্ট্রীয় ইমেইল অ্যাকাউন্টটি খুলেছিল, হিলারি সেখান থেকে কোনো বার্তা পাঠাননি, এমনকি সেটি চালুও করেননি। স্বাচ্ছন্দ্যের কারণেই ব্যক্তিগত সার্ভার ব্যবহার করেছিলেন বলে পরে জানিয়েছিলেন হিলারি।

হোয়াইট হাউসের কর্মকর্তাদের সরকারী কাজে ব্যবহারের জন্য ব্যক্তিগত ইমেইল অ্যাকাউন্ট ব্যবহার করা অবৈধ নয়। তবে, রাষ্ট্রপতি রেকর্ড আইন এবং ফেডারেল রেকর্ডস আইন অধীনে, সরকারী কর্মকর্তাদের সংরক্ষণের জন্য ২০ দিনের মধ্যে একটি অফিস অ্যাকাউন্টে কোন সরকারী চিঠিপত্র ফরওয়ার্ড করার বিধান রয়েছে।

যদি এটি নির্ভরযোগ্যভাবে সম্পন্ন না হয় তবে, সরকারি তথ্য আদানপ্রদানে ব্যক্তিগত অ্যাকাউন্টগুলির ব্যবহার সাংবাদিক, আইন প্রণেতা এবং অন্যদের কাছে পৌঁছানোর উর্ধ্বে চলে যায়। ব্যক্তিগত ইমেইল অ্যাকাউন্টগুলি ব্যবহারে, শ্রেণীবদ্ধ বা বিশেষাধিকারযুক্ত তথ্য ভাগ করার জন্য নির্ধারিত নিয়ম রয়েছে।

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া

 

সম্পাদকীয় কার্যালয় 

১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।

যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702 

ই-মেইল: [email protected]

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড