অধিকার ডেস্ক ১৫ নভেম্বর ২০১৮, ২০:৩১
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের একের পর এক সমালোচনার জবাবে ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রো বলেছেন, তার দেশ যুক্তরাষ্ট্রের মিত্র, আজ্ঞাবহ রাষ্ট্র নয়। ফ্রান্সের সমালোচনা করে দেয়া মার্কিন প্রেসিডেন্টের সিরিজ টুইটে তাদের সম্পর্কের অবনতির চিত্র ফুটে উঠে বলে বুধবার (১৪ অক্টোবর) জানান তিনি। ‘ভয়েস অব আমেরিকা’
প্রথম বিশ্বযুদ্ধের সমাপ্তির শতবর্ষ পূর্তিতে চলতি সপ্তাহেই ফ্রান্স সফরে গিয়েছিলেন ট্রাম্প। সেখান থেকে ফিরেই মঙ্গলবার টুইটারে ফ্রান্স ও ম্যাক্রোর বিরুদ্ধে একটা একটা করে ৫ টা পোস্ট করেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট।
ট্রাম্প তার টুইটে জার্মানির কাছে দুটি বিশ্বযুদ্ধে ফ্রান্সের ‘প্রায় হেরে যাওয়ার’ কথা মনে করিয়ে দেন। ফ্রান্সের বিখ্যাত ওয়াইন শিল্প ধসিয়ে দেওয়ার হুমকির সঙ্গে ম্যাক্রোর জনপ্রিয়তা কমে যাওয়ার কথাও বলেন।
যুক্তরাষ্ট্রের সেনাবাহিনীর ওপর নির্ভরশীলতা কমানোর লক্ষ্যে আলাদা ইউরোপীয় সেনাবাহিনী বানাতে ফরাসী প্রেসিডেন্টের ইঙ্গিত নিয়েও সমালোচনা করেছিলেন ট্রাম্প। এরপর থেকেই দুই দেশের সম্পর্কে অবনতির বিষয়টি স্পষ্ট হতে শুরু করে।
ছবি : সংগৃহীত
ট্রাম্পের একের পর এক অপমানজনক টুইটে ফরাসী প্রেসিডেন্ট অপমানিত হয়েছেন কিনা ‘রয়টার্স’ এর কাছে এক সাক্ষাৎকারে এমন প্রশ্নের জবাবে ম্যাক্রো আমেরিকার স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় থেকে শুরু করে দুই দেশের দীর্ঘ সামরিক মিত্রতার কথা উল্লেখ করেন। তিনি বলন, ‘ইতিহাসের প্রতিটি ক্ষণে আমরা মিত্র ছিলাম। মিত্রদের মধ্যে শ্রদ্ধাবোধ থাকে। মনে হয় না ফরাসীরা আমার কাছ থেকে ওই টুইটগুলোর জবাব আশা করে, আশা করে ইতিহাসের ধারাবাহিকতা’।
২০১৭ সালে অল্প বয়সে ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হওয়ার পর থেকেই তার সঙ্গে ট্রাম্পের সম্পর্ক বন্ধুত্বপূর্ণভাবে শুরু হলেও এই প্রকাশ্য বিরোধ সেই অবস্থার সম্পূর্ণ বিপরীত। মার্কিন মধ্যবর্তী নির্বাচনে পরাজয়ের পরে মার্কিন প্রেসিডেন্ট আন্তর্জাতিক রাজনীতি নিয়ে খেলছেন বলেও তিনি মন্তব্য করেন।
দুজনের সাক্ষাতের পর গণমাধ্যমে ম্যাক্রোকে ‘অসাধারণ মানুষ’ ও ‘আমার বন্ধু’ বলেছিলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট। যদিও এ ‘উষ্ণ কথামালাকে’ ঘনিষ্ঠতায় রূপান্তর করতে পারেননি ম্যাক্রোঁ। একে অপরের প্রশংসায় পঞ্চমুখ থাকলেও তাদের শাসনামলেই প্যারিস জলবায়ু চুক্তি, ইরানের পারমাণবিক চুক্তি ও ইউরোপ থেকে ধাতব পণ্য আমদানিতে মার্কিন শুল্ক আরোপসহ আন্তর্জাতিক অনেক বিষয়েই যুক্তরাষ্ট্র ও ফ্রান্স পরস্পরের বিরোধিতা করে আসছে।
ছবি : সংগৃহীত
ফরাসী প্রেসিডেন্টের ইউরোপীয় সেনাবাহিনী প্রতিষ্ঠার প্রস্তাব ট্রাম্পকে ক্রুদ্ধ করার পর থেকে দুই দেশের মধ্যে ‘কোনো ধরনের ভুল বোঝাবুঝি’ চলছে কি না, এমন প্রশ্নের জবাবে ফরাসী প্রেসিডেন্ট বলেন, মার্কিন মিত্র হওয়ার অর্থ এই নয় যে, তার দেশ যুক্তরাষ্ট্রের আজ্ঞাবহ।
ফরাসী প্রেসিডেন্ট বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্র আমাদের ঐতিহাসিক মিত্র এবং এ ধারাবাহিকতা বজায় থাকবে। তারা সেই মিত্র যাদের নিয়ে আমরা সব ধরনের ঝুঁকি নিয়েছি, চালিয়েছি জটিল সব অভিযান। যদিও মিত্রতার অর্থ এই নয় যে, আমরা তাদের আজ্ঞাবহ রাষ্ট্র।’
ম্যাক্রোর প্রতিক্রিয়ায় সংযতভাব দেখা গেলেও ট্রাম্পের সমালোচনা যে দুই দেশের সম্পর্কে ‘জোরাল আঘাত’ করেছে তা বোঝা গেছে ফরাসী সরকারের মুখপাত্রের প্রতিক্রিয়ায়।
এমন বিরোধের ছাপ কখনোই ব্যক্তিগত সম্পর্কের ক্ষেত্রে দেখাননি দুই প্রেসিডেন্ট, যা ফ্রান্স ও আমেরিকার মধ্যে আগেকার বিরোধপূর্ণ সম্পর্কের সময়ও দেখা যায়নি। যুক্তরাষ্ট্রের ইরাক আক্রমণের তীব্র বিরোধিতা করেছিল ফ্রান্স, সেসময় দুই দেশের রাষ্ট্রপ্রধানদের মধ্যে দেখা গিয়েছিল তুমুল কথার লড়াই।
নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া
সম্পাদকীয় কার্যালয়
১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।
যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702
ই-মেইল: [email protected]
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।
Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড