• শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১  |   ৩৫ °সে
  • বেটা ভার্সন
sonargao

ট্রাম্প বনাম সিএনএন : ওয়াটারগেট কেলেঙ্কারি!

বাকস্বাধীনতার রক্ষক যখন হয়ে ওঠেন ভক্ষক

  এস এম সোহাগ

০৮ নভেম্বর ২০১৮, ১৭:৩৯
ট্রাম্প বনাম গণমাধ্যম
ছবি : সম্পাদিত

রাষ্ট্রের ৪র্থ স্তম্ভ বলা হয়ে থাকে গণমাধ্যমকে, গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠায় যে প্রতিষ্ঠানটি সবচেয়ে বেশি ভূমিকা রাখে সেই প্রতিষ্ঠান গণমাধ্যম। নাগরিকের কাছে সরকারের প্রতিনিধি, সরকারের কাছে নাগরিকদের প্রতিনিধি। স্বাধীন গণমাধ্যম হয়তো আক্ষরিক অর্থে একটা মিথ, তবুও পশ্চিমা গণমাধ্যমের পেশাদারিত্ব তৃতীয় বিশ্বের গণমাধ্যমকে স্ব স্ব রাষ্ট্রে বাকস্বাধীনতা ও গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠায় অনুপ্রেরণা জুটাতো, খোদ মার্কিন মুল্লুকে প্রভাবশালী ‘সিএনএন’ এর সাংবাদিকের সঙ্গে সরকারের চলমান আচরণকে দেখা হচ্ছে বিশ্ব মিডিয়ার জন্য একটা বড় ধাক্কা হিসেবে।

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রসহ বিশ্ব দরবারে এক সাহসী সংবাদ সংস্থার নাম ‘সিএনএন’, দেশটির বর্তমান রাষ্ট্রপতি ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে সরাসরি দ্বন্দ্বে জড়িয়ে পড়ে। ডোনাল্ড ট্রাম্প মিডিয়ার শক্তিকে ভুলে গিয়েছেন হয়তো, সময়টা ১৯৭২, প্রভাবশালী পত্রিকা ‘ওয়াশিংটন পোস্ট’ দুজন তরুণ সাংবাদিককে দায়িত্ব দিয়েছে ওয়াটেরগেট ভবনে একটা তদন্তের। বব উডওয়ার্ড ও কার্ল বার্নস্টেইন, ২০ বছর বয়সী দুই তরুণ মার্কিন সাংবাদিক, যারা পাল্টে দিয়েছিল আমেরিকার রাজনৈতিক ইতিহাস।

১৯৭২ সালের সেই তদন্তে এমন তথ্য বের করে আনেন তৎকালীন নবীন এই দুই সাংবাদিক, যার ধাক্কায় হোয়াইট হাউজ থেকে ছিটকে পড়তে হয়েছিল রিচার্ড নিক্সনের মতো প্রেসিডেন্টকে। রাজনীতির আড়ালে ক্ষমতার অপব্যবহার করে রাজনৈতিকেরা যে অপকর্মে জড়িয়ে পড়ে এই ভেবে যে নাগরিকদের জানার ক্ষমতা নাই, সেই রাজনৈতিকদের ইতিহাস পাল্টে দিয়েছিল এই দুই সাংবাদিক।লোকচক্ষুর আড়ালে রাজনৈতিকদের রহস্য জনগনের সামনে নিয়ে আসার জন্য সাংবাদিকেরা দায়বদ্ধ তা ভুলেই যান রাজনীতিবিদরা, সেই ভুলের খেসারৎ দিতে হয়েছিল বিশ্বের সবচেয়ে শক্তিশালী দেশটির সবচেয়ে ক্ষমতাধর পদাসীন ব্যক্তিকে।

১৯৭২ সালের মাঝামাঝি সময়ে মার্কিন তৎকালীন মার্কিন প্রেসিডেন্ট এর ষড়যন্ত্র অনুসন্ধানে বের করে এনেছিল ‘ওয়াশিংটন পোস্ট’, সিআইএ, এফবিআই এর মতো চৌকষ গোয়েন্দা বাহিনীকে টপকে ২০ বছর বয়সী দুই সাংবাদিক বের করলো ‘ওয়াটারগেট কেলেঙ্কারি’র রহস্য। মার্কিন রাজনৈতিক ইতিহাসকে পাল্টে দিল তারা, পেয়ে গেল পুলিৎজার পুরস্কার, যা সাংবাদিকতার নোবেল নামে পরিচিত।

সেসময় থেকেই মার্কিন রাজনীতিবিদরা বিশেষ করে প্রেসিডেন্সিয়াল ব্যক্তিরা সাংবাদিকদের তোয়াক্কা করে চলতো, গণমাধ্যমকে সরাসরি আক্রমণের মতো উদ্ধত আচরণ দেখায়নি কেউই। তবে, ৪৬ বছর পর এসে বর্তমান প্রেসিডেন্ট, আমেরিকার ইতিহাসে অন্যতম সমালোচিত প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প সেই ধারাবাহিকতা ধরে রাখতে পারলো না। মার্কিন সংবাদ সংস্থা ‘সিএনএন’ এর সঙ্গে জড়িয়ে পড়ে সরাসরি দ্বন্দ্বে, সমালোচিত ও বহু অভিযোগে অভিযুক্ত ধনাঢ্য মার্কিন প্রেসিডেন্ট এর হোয়াইট হাউজে প্রেস পাস বাতিল করলো জিম গণমাধ্যমটির হোয়াইট হাউজ প্রতিনিধি জিম অ্যকোস্টার।

ছবি : সম্পাদিত

সদ্য সমাপ্ত মার্কিন মধ্যবর্তী নির্বাচন পরবর্তী হোয়াইট হাউজ আয়োজিত বুধবারের (৮ নভেম্বর) সংবাদ সম্মেলনে এক উত্তপ্ত বাক্য বিনিময়ের পরেই এমন নিষেধাজ্ঞা আসে। সংবাদ সম্মেলনে জিম ট্রাম্পকে যখন লাতিন আমেরিকা থেকে আমেরিকার দক্ষিণাঞ্চলীয় ক্যারাভান সীমান্তে অভিবাসীদের ব্যাপারে প্রশ্ন করলেই তারা বিবাদে জড়িয়ে পড়েন। ‘এপি’

জিম পরের প্রশ্নে যাওয়ার আগেই ট্রাম্প বলে উঠলেন, ‘যথেষ্ট হয়েছে!’ ,এরপরেই হোয়াইট হাউজের এক ইন্টার্ণ তরুণী জিমের হাত থেকে মাইক্রোফোন ছিনিয়ে নেয়ার ব্যর্থ চেষ্টা করেন। এরপরেই হোয়াইট হাউজের প্রেস সচিব সারা স্যাণ্ডার্স জিমের বিরুদ্ধে অভিযোগ এনে এক বিবৃতিতে জানায় যে, ‘হোয়াইট হাউজের তরুন এক নারী ইন্টার্নের শরীরে হাত দেয়া, যখন সে তার দায়িত্ব পালন করছিল তা “একেবারেই অগ্রহণযোগ্য”।’

অ্যাকোস্টা এবং ইন্টার্নের মধ্যে যোগাযোগটি সংক্ষিপ্ত ছিল, এবং মাইক্রোফোন টান দিলে অ্যাকোস্টা তার হাত ঝাঁকি দিতে লাগলো এবং সেটি ধরে রাখার চেষ্টা করেছিল এবং জিম তাকে বলেছিল, ‘আমাকে ক্ষমা করবেন ম্যাডাম’। জিম এক টুইটে স্যাণ্ডার্সের অভিযোগ করে দেয়া বিবৃতিকে ‘মিথ্যা’ বলেন। ‘সিএনএন’ এর এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, হোয়াইট হাউস বুধবার তার (জিম) চ্যালেঞ্জিং প্রশ্নের প্রতিশোধ নেয়ার জন্য জিমের প্রেস পাস প্রত্যাহার করে নিয়েছে এবং নেটওয়ার্কটি তাদের সাংবাদিকের কর্মকাণ্ড সম্পর্কে মিথ্যা অভিযোগের দায়ে স্যান্ডার্সকে অভিযুক্ত করেছে।

‘সিএনএন’ বিবৃতিতে জানায়, আমরা জিমের সঙ্গে আছি, (স্যান্ডার্স) প্রতারণামূলক অভিযোগ প্রদান করেছে, যেমন ঘটনা উদ্ধৃত করেছে যা কখনও ঘটেইনি। এই অভূতপূর্ব সিদ্ধান্তটি আমাদের গণতন্ত্রের জন্য একটি হুমকি এবং দেশটি আরও ভালো কিছুর যোগ্য।’

হোয়াইট হাউজের দৈনিক সংবাদ সংগ্রহের জন্যে সাংবাদিকদের একটি প্রেস পাস দেয়া হয় যা পশ্চিম উইং এ প্রবেশের জন্য প্রয়োজন পড়ে। হোয়াইট হাউসের কর্মীরা সিদ্ধান্ত নেয় যে সাংবাদিক প্রবেশের যোগ্য কিনা, যদিও সিক্রেট সার্ভিস তাদের অ্যাপ্লিকেশন অনুমোদিত কিনা তা নির্ধারণ করে।

ছবি : সম্পাদিত

মধ্যবর্তী নির্বাচনের সংবাদ সম্মেলন সাংবাদিকদের সঙ্গে প্রেসিডেন্টের সম্পর্কের অবনতিকে চিহ্নিত করেছে। আমেরিকান শহুরে রেডিও নেটওয়ার্কের এপ্রিল রায়ান প্রশ্ন করার চেষ্টা করলে তাকে বসতে নির্দেশ করার পরে বলেছেন, ‘এটা একটা শত্রুতাপরায়ণ মিডিয়া’। তারা দেশটির লোভনীয় অর্থনীতিকে চিহ্নিত করেনা উল্টো দেশের রাজনীতিবিদদের মধে বিভাজন সৃষ্টির জন্য মিডিয়াকেই দায়ী করেন। তিনি বলেন। আমি কিছু চমকপ্রদ ভাল কাজ করেছি কিন্তু তারা (মিডিয়া) সেই কাজকে খারাপভাবে দেখায়।’

ক্যারাভানের অভিবাসীকে এত জোর দিয়ে নির্বাচনী প্রচারণায় কাজে লাগানোর কারণ জিজ্ঞেস করতেই ট্রাম্প চটে যান, এবং বলেন, ‘ তোমার আমাকে দেশটি পরিচালনবা করতে দেয়া উচিৎ, তাতে তোমার ভাল হবে এবং তোমার সিএনএন এর রেটিং ভাল হবে’।

‘সিএনএন’ এর প্রধান হোয়াইট হাউজ প্রতিনিধি জিম অ্যাকোস্টা ও ‘এনবিসি নিউজ’ এর পিটার অ্যালেক্সান্ডার এর সঙ্গে বিবাদে জড়িয়ে পড়ে ট্রাম্প। ২০১৬ সালের নির্বাচনে রাশিয়ার সম্পৃক্ততার তদন্ত সম্পর্কে জিম প্রশ্ন জিজ্ঞাসা করার পর ট্রাম্প আলেকজান্ডারের দিকে ফিরে যাওয়ার চেষ্টা করেছিলেন, কিন্তু জিম তালে প্রশ্ন করতে থাকলেন।

জিমকে ট্রাম্প বলেন, ‘আপনার মতো লোককে কাজ করতে দেয়ার জন্য সিএনএনকে লজ্জিত হতে হবে। আপনি একজন অভদ্র, ভয়ানক ব্যক্তি। আপনার ‘সিএনএন’ জন্য কাজ করা উচিত নয়। সারাহ স্যান্ডার্সের সাথে যেভাবে আচরণ করেছেন সেটি ভয়ঙ্কর। আপনার অন্য মানুষের সঙ্গে আচরণের উপায়ও অতি ভয়ঙ্কর। মানুষের সঙ্গে এভাবে আচরণ করা উচিৎ নয়।’

অ্যালেক্সান্ডার তার সহকর্মীকে বাঁচাতে এগিয়ে আসলেন, বললেন, ‘আমি পুরোটা পথে তাকে (জিম) লক্ষ্য করেছি, তিনি একজন অধ্যবসায়ী সাংবাদিক যিনি বাকি সবার মতোই সংবাদের জন্য গর্ত খুঁড়তে থাকে।’

‘আমি আপনারও বড় কোন ভক্ত নই’ অ্যালেক্সান্ডারকে উদ্দেশ্য করে ট্রাম্প বলেন। আমি বুঝলাম, আলেকজান্ডার বলে একটি প্রশ্ন জিজ্ঞাসা করার চেষ্টা করছেন। জিম উঠে দাঁড়ালেন এবং সম্প্রতি সিএনএন কার্যালয় ও রাষ্ট্রপতির কিছু রাজনৈতিক বিরোধীদের কাছে বিস্ফোরক ডিভাইসগুলি পাঠানো নিয়ে প্রশ্ন করলেন।

বামে সারাহ স্যান্ডার্স। ছবি : সম্পাদিত

ট্রাম্প বললেন, ‘শুধু বসে থাকো, যখন আপনি ফেইক নিউজ রিপোর্ট করেন, যা সিএনএন অনেক বেশি করে, আপনারা মানুষের শত্রু।’

‘সিএনএন’ সংবাদ সম্মেলনে বিনিময় শেষে টুইট করে জানায়, ‘সংবাদ সম্মেলনে ট্রাম্পের এমন আক্রমণাত্মক আচরণের জল অনেকদূর গড়িয়েছে। তারা শুধুমাত্র বিপজ্জনক নয়, তারা বিরক্তিকরভাবে অ-আমেরিকানও। যদিও রাষ্ট্রপতি ট্রাম্প এটা পরিষ্কার করেছে যে, তিনি একটি মুক্ত প্রেসকে সম্মান করেন না, যার সুরক্ষার জন্য তিনি অঙ্গীকারবদ্ধ। গণতন্ত্রের জন্য একটি মুক্ত সংবাদ অপরিহার্য, এবং আমরা সর্বত্র জিম এবং তার সহকর্মী সাংবাদিকদের সমর্থণে রয়েছি।’

বুধবার স্থানীয় সময় সন্ধ্যা ৭ টার সময় পেনসিলভানিয়ার দ্বার থেকে জিম যখন প্রবেশ করতে চেষ্টা করলো, যে দ্বার থেকে সচরাচর সাংবাদিকরা প্রবেশ করেন সেখানে তাকে আটকে দেয়া হয়। তিনি ‘অ্যান্ডারসন কুপার ৩৬০’ এর লাইভ শটের জন্য হোয়াইট হাউযে ফিরে যাচ্ছিলেন। ‘সিএনএন’

এর কিছুক্ষণের মধ্যে জিম এক টুইট বার্তায় জানায়, ‘আমি যখন আমার ৮ টার সংবাদ সংগ্রহে হোয়াইট হাউজ ভবনে প্রবেশের চেষ্টা করলাম, সিক্রেট সার্ভিসের সদস্যরা আমাকে থামিয়ে দিল। তারা জানালো আমি সেখানে যেতে পারব না।’

জিম তার প্রেস পাস সিক্রেট সার্ভিস কর্তৃক খুলে নেয়ার মুহূর্তটির ভিডিও প্রকাশ করেছে। জিম সেখানে জানায়, সিক্রেট সার্ভিসের দায়িত্বরত লোকটি তার নির্দেশ পালন করছে। আমার পাসের হার্ডকপি দেয়ার পরে তারা সেটা নিয়ে নেয়।

‘নিউ ইয়র্ক টাইমস’ এর হোয়াইট হাউজে নিয়োযিত প্রধান সমন্বয়কারী পিটার বেকার এক টুইটে জানায়, ‘১৯৯৬ সাল থেকে হোয়াইট হাউজের সংবাদ কাভার করে আসছি আমি, এটা এমন কিছু যা এখন পর্যন্ত দেখা আমার জীবনের প্রথম এমন কোন ঘটনা। এর আগের কোন প্রেসিডেন্ট জটিল প্রশ্নের উত্তর দিতে ভয় পায়নি।’

হোয়াইট হাউস কোরেসপন্ডেন্টস অ্যাসোসিয়েশন (ডাব্লিউএইচসিএ), যারা প্রেস কর্পসের পক্ষে কাজ করে, জিমের প্রত্যাহার নিয়ে এক বিবৃতিতে জানায় যে, জিমের প্রবেশাধিকারের নিষেধাজ্ঞাটি গ্রহণযোগ্য নয়।’

ছবি : সম্পাদিত

‘সাংবাদিকরা তাদের কাজ সম্পাদনের জন্য বিভিন্ন পন্থা ব্যবহার করতে পারে, রাষ্ট্রপতসহ শক্তিশালী সিনিয়র সরকারি কর্মকর্তাদের জিজ্ঞাসাবাদের প্রশ্নগুলির স্বর বা ফ্রিকোয়েন্সিতে হস্তক্ষেপ করেনা ডাব্লিউএইচসিএ। এ ধরনের মিথস্ক্রিয়াগুলি হয়তো আমাদের জাতীয় প্রতিষ্ঠানগুলির শক্তি সংজ্ঞায়িত করতে সহায়তা করে তবুও এটি অস্বস্তিকর মনে হতে পারে। আমরা হোয়াইট হাউসকে এই দুর্বল এবং বিভ্রান্তিকর আচরণ পাল্টানোর পরামর্শ দিচ্ছি’ বলে জানায় সংস্থাটী।

সংবাদ সম্মেলনের সময়, ট্রাম্প ‘পিবিএস’ এর ‘নিউজআওয়ার’ এর প্রতিবেদক ইয়ামিশ আলসিন্দরকেও আক্রমণ করেন। ইয়ামিশ আলসিন্দরকে বলেন, ‘প্রচারণার পথে আপনি নিজেকে একজন জাতীয়তাবাদী বলেছিলেন। কিছু লোক একে সাদা জাতীয়তাবাদীদের উজ্জ্বল উদাহরন হিসেবে দেখেছে।’ ট্রাম্প তাকে বাধা দিয়ে এটি একটি বর্ণবাদী প্রশ্ন বলে অভিযোগ করে।

আলসিন্দার আবার বলেন, ‘এমন কিছু লোক আছে যারা আপনার সাদা জাতীয়তাবাদীদের সমর্থন হিসেবে বাগাড়ম্বরপূর্ণ উক্তির ব্যবহারে রিপাবইলিকান দলকেও সাদা জাতীয়তাবাদী হিসেবে দেখে। সেটি সম্পর্কে কি বলতে চান আপনি?’

ট্রাম্প বলেন, ‘তুমি যা বলেছ তা আমার কাছে খুবই অপমানজনক, এটা একটা খুব ভয়ানক জিনিস যা তুমি আমাকে বলেছো।’

আলসিন্দার ভিন্ন এক টপিকে সরে যান এবং পরবর্তীতে টুইটারে এক বার্তায় তিনি বলেন যে, ‘আমি সাদা জাতীয়তাবাদীদের সাক্ষাত্কার গ্রহণ করেছি যারা বলে যে, তারা অন্যান্য রাষ্ট্রপতির চেয়ে ট্রাম্পের কাছ থেকে প্রাপ্ত অনুপ্রেরণায় বেশি উত্তেজিত। রাষ্ট্রপতি ট্রাম্প যদি এমন মনস্থ নাও করে তবুও কিছুলোক তাকে সরাসরি বর্ণবাদী হিসেবেই দেখতে পায়।’

ইয়ামিশ আলসিন্দর(বামে উপরে),এপ্রিল রায়ান (বামে নিচে),এলিজাবেথ বুমিলার (ডানে উপরে),পিটার অ্যালেক্সান্ডার (ডানে নিচে)। ছবি : সম্পাদিত

আমেরিকান শহুরে রেডিও নেটওয়ার্ক এর রায়ানকে ট্রাম্প বারবার বসে যেতে নির্দেশ দেয়, যখন তিনি ভোটারদের দমনের অভিযোগ সম্পর্কে ট্রাম্পকে প্রশ্ন করেন। ট্রাম্প তাকে অন্য প্রতিবেদকের সময় কেড়ে নেয়ার অভিযোগ করলেও কিছু প্রশ্নের উত্তর দেন। ‘এপি'

‘নিউইয়র্ক টাইমস’-এর ওয়াশিংটন ব্যুরো প্রধান এলিজাবেথ বুমিলার বলেন, ‘তাকে কে কভার করবেন তা প্রেসিডেন্ট বেছে নিতে পারেন না বা তার তা করাও উচিত নয়, এবং অবশ্যই তিনি দেশের অন্যতম শীর্ষ সংবাদ সংস্থাগুলির একজন প্রতিনিধিকে জোরপূর্বক বের করে দিতে বাধ্য করতে পারেন না, কোটি আমেরিকান যাদের সংবাদের জন্য অপেক্ষায় থাকেন।’

জিম হোয়াইট হাউজে ট্রাম্পের বিরুদ্ধে একজন কড়া সমালোচনাকারী, তার এই আগ্রাসী প্রেসিডেন্ট বিটের জন্য অনেক ভক্তের সঙ্গে সমালোচকের ও সৃষ্টি করেছেন। বুধবারের উত্তপ্ত বাক্যবিনিময়কে কেন্দ্র করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে অনেক আমেরিকান ট্রাম্পের চুক্তি ও কথাগুলোর প্রতি জবাবদিহিতাকে ইঙ্গিত করে জিমের প্রশংসা করেন। ‘সিএনএন’

নাগরিক ও সরকারের সঙ্গে যোগসূত্র স্থাপনকারী প্রতিষ্ঠানের নাম গণমাধ্যম, আর এই সেতুবন্ধনের কাজটি করে থাকে সাংবাদিকেরা। গণতন্ত্র রক্ষার্থে রাষ্ট্রের সবচেয়ে বড় হাতিয়ার গণমাধ্যম, যাদের পেশাদারিত্বে স্বাধীনতা নিশ্চিত করার দায়িত্ব রাষ্ট্রপতির। সেই রাষ্ট্রপতি সাংবাদিকের বাকস্বাধীনতাকে খর্ব করলে সেটা হয় মুক্ত গণমাধ্যম প্রতিষ্ঠার অন্তরায়।

সাংবাদিকের সঙ্গে ট্রাম্পের এই আচরণ প্রমাণ করে দেয় যে, নিক্সনের ওয়াটারগেট কেলেঙ্কারির সেই ঐতিহাসিক ঘটনা হারিয়ে গেছে। তরুন সাংবাদিকের দাপটে প্রভাবশালী প্রেসিডেন্ট যখন বাধ্য হয়েছিলেন পদত্যগ করতে, সেখানে এমন সমালোচিত প্রেসিডেন্টের জ্যেষ্ঠ সাংবাদিকদের সঙ্গে করা আচরণের পরিণতি কি হবে তাই এখন দেখার বিষয়।

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া

 

সম্পাদকীয় কার্যালয় 

১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।

যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702 

ই-মেইল: [email protected]

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড