• শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১  |   ২৭ °সে
  • বেটা ভার্সন
sonargao

শরণার্থীদের ঘরে ফেরার অধিকার

প্রত্যাবসান ছিল নভেম্বরে, পাড় হচ্ছেনা রোহিঙ্গারা

  এস এম সোহাগ

৩০ অক্টোবর ২০১৮, ১৬:২৬
শরণার্থী
নভেম্বরের মাঝামাঝি সময়ে রোহিঙ্গাদের মিয়ানমারে ফেরত পাঠাতে জাতিসংঘ শরণার্থী বিষয়ক সংস্থার সঙ্গে বাংলাদেশের বৈঠক সম্পন্ন (ছবি : সম্পাদিত)

সাম্রাজ্যবাদের আগ্রাসনের ফল হিসেবে যে একদল দুর্ভাগার আবির্ভাব ঘটে বিশ্বে তার নাম শরণার্থী। তারা মানব সভ্যতার অংশীদার, তবে তা নেহায়েতই তাদের জীবনের অভিশপ্ত একটা দুঃস্বপ্ন। সেই প্রথম বিশ্বযুদ্ধে জার্মানরা বেলজিয়াম আক্রমণ করলে প্রায় আড়াই লাখ বেলজিয়াম অধিবাসী গৃহহারা হয়। আবার সোভিয়েত জার্মান আক্রমণ করলে প্রচুর জার্মান, বিশেষত ইহুদিরা দেশত্যাগ করে। শুধু সোভিয়েতেই আশ্রিত ছিল বিভিন্ন দেশের প্রায় ৬০ লাখ লোক। প্রথম বিশ্বযুদ্ধের পর বিভিন্ন দেশে আশ্রিত সর্বহারা শরণার্থীর সংখ্যা ছিল প্রায় এক কোটি।

দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে বিভিন্ন দেশে আশ্রিত সোভিয়েত ইউনিয়ন, পোল্যান্ড, যুগোস্লাভাকিয়া, জার্মান শরণার্থীর সংখ্যা ছিল প্রায় ছয় কোটি। এসব শরণার্থীর পুনর্বাসিত করতে লেগেছিল পরবর্তী প্রায় ১০ বছর। জীবন বাঁচাতে জার্মানি ও অস্ট্রিয়া থেকে অসংখ্য ইহুদিরা বিভিন্ন ইউরোপীয় দেশে আশ্রয় নেয়।

দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর সারা বিশ্বে ছড়িয়ে থাকা ইহুদিরা আসতে থাকে ফিলিস্তিনে। দাবি করে তাদের জন্য স্বতন্ত্র দেশ ইসরায়েলের। ইসরায়েল রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠিত হওয়ার পর থেকে স্থানীয় ফিলিস্তিনিদের ওপর বিভিন্ন সময় আক্রমণ করে ইহুদিরা। ১৯৪৮-এ ইহুদিদের সৃষ্ট দাঙ্গায় কয়েক লাখ ফিলিস্তিনি দেশ ছাড়তে বাধ্য হয়। এরপর বিভিন্ন সময়ে ফিলিস্তিন, মিসর ও সৌদি আরবের বিরুদ্ধে যুদ্ধে জয়লাভের সঙ্গে ফিলিস্তিনি মুসলিমদের ওপর অত্যাচার যেমন বাড়তে থাকে, তেমনি চলতে থাকে তাদের ভূমি দখল। যার ফলে বাড়তে থাকে বাস্তুহারা ফিলিস্তিনির সংখ্যা। বর্তমানে সিরিয়া, মিসর, লেবাননসহ বিভিন্ন আরব দেশে আশ্রয় পাওয়া ফিলিস্তিনি শরণার্থীর সংখ্যা প্রায় ১৫ লাখ।

ছবি : সম্পাদিত

অর্থাৎ, বিশ্বে যুদ্ধ-বিগ্রহ, হত্যাযজ্ঞের মাত্রা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে শরণার্থী সংখ্যা দিন দিন বাড়ছে। সে দিক দিয়ে শরণার্থী শিবিরের সংখ্যাও নেহাৎ কম নয়। ইরাক ও জর্দানে সিরিয় শরণার্থী, সুদানে দারফুর শরণার্থী, কেনিয়ার দাদাব শরণার্থী, ফিলিপাইনে ভিয়েতনামী শরণার্থী, ভারতে শ্রীলঙ্কান তামিল শরণার্থী, ইরানে আফগান শরণার্থী, ইসরায়েলে ফিলিস্তিনী শরণার্থীসহ অসংখ্য ছড়ানো ছিটানো শরণার্থীদের বাস পুরো দুনিয়া জুড়ে। এদের নেই কোনো নিজস্ব পরিচয়, নেই ন্যূনতম মৌলিক সুবিধা।

প্রত্যেক মানুষের নিজ দেশে নিজ গৃহে বাস করার অধিকার আছে, আন্তর্জাতিক সংগঠনগুলো সেসব অধিকার প্রতিষ্ঠায় প্রতিজ্ঞাবদ্ধ হলেও তাদের বাস্তব প্রভাব একেবারেই শূন্যের কোঠায়। ১৯৫১ সালে জাতিসংঘ কর্তৃক শরণার্থীদের মর্যাদা বিষয়ক সম্মেলনে অনুচ্ছেদ ১-এ-তে সংক্ষিপ্ত আকারে শরণার্থীর সংজ্ঞা তুলে ধরা হয়। একজন ব্যক্তিও যদি গভীরভাবে উপলদ্ধি করেন ও দেখতে পান যে, তিনি জাতিগত সহিংসতা, ধর্মীয় উন্মাদনা, জাতীয়তাবোধ, রাজনৈতিক আদর্শ, সমাজবদ্ধ জনগোষ্ঠীর সদস্য হওয়ায় তাকে ঐ দেশের নাগরিকের অধিকার থেকে দূরে সরানো হচ্ছে; সেখানে ব্যাপক ভয়-ভীতিকর পরিবেশ বিদ্যমান এবং রাষ্ট্র তাকে পর্যাপ্ত নিরাপত্তা দিতে ব্যর্থ হচ্ছে; তখনই তিনি শরণার্থী হিসেবে বিবেচিত হন।

১৯৬৭ সালের সম্মেলনের খসড়া দলিলে উদ্বাস্তুর সংজ্ঞাকে বিস্তৃত করা হয়। আফ্রিকা ও ল্যাটিন আমেরিকায় অনুষ্ঠিত আঞ্চলিক সম্মেলনে যুদ্ধ এবং অন্যান্য সহিংসতায় আক্রান্ত ব্যক্তি কর্তৃক নিজ দেশত্যাগ করাকেও এর অন্তর্ভুক্ত করা হয়। এই সংজ্ঞায় শরণার্থীকে প্রায়শই ভাসমান ব্যক্তিরূপে অন্তর্ভুক্ত করা হয়। সম্মেলনে গৃহীত সংজ্ঞার বাইরে থেকে যদি যুদ্ধের কারণে নির্যাতন-নিপীড়নে আক্রান্ত না হয়েও মাতৃভূমি পরিত্যাগ করেন অথবা জোরপূর্বক নিজ ভূমি থেকে বিতাড়িত হন- তাহলে তারা শরণার্থী হিসেবে বিবেচিত হবেন।

ছবি : সম্পাদিত

শরণার্থী প্রত্যাবাসন :

এমেনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের প্রতিবেদনে বলা হয়,রাইট অফ রিটার্ন আন্তর্জাতিক শরণার্থী আইন, মানবাধিকার আইন, জাতীয়তা আইন এবং রাষ্ট্রীয় দায়িত্বের আইনের সার্বজনীনভাবে স্বীকৃত একটি অধিকার। এটি মানবাধিকারের সার্বজনীন ঘোষণাপত্র (আর্টিকেল ১৩), মানবিক আইনের অধীনে সশস্ত্র সংঘাতের সময়ে শরণার্থীদের অধিকার রক্ষা করার ক্ষেত্রে, রাষ্ট্রের দায়বদ্ধতা ও কর্তব্যগুলোর নিয়ন্ত্রণকারী মূল মানবাধিকার কনভেনশনগুলোতে এবং ধারাবাহিকভাবে উল্লেখ করা হয়েছে।

জাতিসংঘের সার্বজনীন মানবাধিকার ঘোষণায় বলা হয়েছে, রাজনৈতিক হয়রানি থেকে রেহাই পেতে প্রত্যেকের অধিকার আছে অন্য কোনো রাষ্ট্রে রাজনৈতিক আশ্রয় পাবার।

শরণার্থী বা উদ্বাস্তু সম্পর্কিত বিশেষ আন্তর্জাতিক আইনটির নাম 'কনভেনশন রিলেটিং টু দ্য স্ট্যাটাস অব শরণার্থী ১৯৫১'। এই আইনের ৩৩ নম্বর অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে, কোনো দেশ শরণার্থীদের এমন কোনো পার্শ্ববর্তী দেশে বহিষ্কার কিংবা ফেরত পাঠাতে পারে না, যেখানে তাদের ধর্ম, বর্ণ, কিংবা কোনো দলের সদস্য হওয়ার কারণে জীবন বিপন্ন হওয়ার আশঙ্কা থাকে। একই আইনের ৩১ নম্বর অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে, অবৈধভাবে প্রবেশের দায়ে কোনো শরণার্থীকে গ্রেফতার করা যাবে না। শুধু তাই নয়। একই আইনের ১২ থেকে ৩০ নম্বর অনুচ্ছেদে শরণার্থীদের অধিকারের কথা বলা হয়েছে, যেখানে আশ্রয়প্রদানকারী দেশের নাগরিকদের মতোই বেশ কিছু ক্ষেত্রে অধিকার পাবার স্বীকৃতি দেয়া হয়েছে।

রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন :

বাংলাদেশ বারবার রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনের দাবি করে আসলেও মিয়ানমার এ কথা কানে তুলছে না। এমনকি জাতিসংঘসহ অনেক মানবাধিকার সংস্থাও রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনের ব্যাপারে মত দিচ্ছে না এই মুহূর্তে। জাতিসংঘের সম্প্রতি প্রকাশিত একটি প্রতিবেদনে মিয়ানমারের সেনাবাহিনীর ওপর 'জাতিগত গণহত্যার' অভিযোগ আনা হয়েছে এবং সেনাবাহিনীর কমান্ডার ইন চিফ ও পাঁচজন জেনারেলকে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত (আইসিসি) বিচারের মুখোমুখি করানোর আহ্বান জানানো হয়।

ছবি : সম্পাদিত

২৫ অক্টোবর জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের বৈঠকে এই বিষয় নিয়ে আলোচনা করা হলেও এখনও কোনো সুরাহা হয়নি। মিয়ানমারের মানবাধিকার বিষয়ক জাতিসংঘের বিশেষ তদন্তকারী ইয়াংঘি লি সাংবাদিকদের বলেন, ‘এই অভিযোগ সম্পর্কে অং সান সু চি বরাবর "অস্বীকার করে আসছে" এবং তার সরকারকে অতীতে সামরিক স্বৈরতন্ত্রের চেয়ে বর্তমানে ভিন্ন বলে মনে হচ্ছে না।

মিয়ানমার সরকার অনবরতভাবে দেখিয়ে যাচ্ছে যে, এই নিধনযজ্ঞ সম্পূর্ণরূপে কার্যকর গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠায় চালানো অভিযান ছিল, যেখানে দেশের সমস্ত মানুষ সমানভাবে তাদের সকল অধিকার ও স্বাধীনতা উপভোগ করে।’

‘মিয়ানমারের সর্বত্র মানবাধিকার প্রতিষ্ঠিত বলে অং সান সুচি'র বারবার দাবি করে আসা এই কথা ‘ন্যায়বিচার এবং আইনের শাসনকে সমর্থন করে না’। রোহিঙ্গাদের মিয়ানমারে ফিরে যাওয়ার জন্য পরিস্থিতি সঠিক না।’

লি বলেন, অর্থনৈতিক উন্নয়ন ও অবকাঠামোর পরিপ্রেক্ষিতে অগ্রগতি হয়েছে, সেখানে ‘গণতান্ত্রিক স্থান’ বা ভূমি অধিকারের ক্ষেত্রে ‘অগ্রগতি’ নেই। ‘এখন পুনর্বাসন সম্ভব নয়, আমি প্রত্যর্পণে কোনোভাবে অনুপ্রাণিত করব না। এই মুহূর্তে, এটি একটি জাতিবিদ্বেষের মত অবস্থা যার মধ্যে অনেক রোহিঙ্গারা এখনও মিয়ানমারে বসবাস করছে যাদের আন্দোলনের কোন স্বাধীনতা নেই।’

‘ক্যাম্প, আশ্রয়স্থল, মডেল গ্রাম নির্মাণাধীন রয়েছে, যাতে রাখাইন জাতিগোষ্ঠী সম্প্রদায়কে মিয়ানমারের অন্য জাতিগোষ্ঠী থেকে সংযুক্ত করার চেয়ে বিচ্ছিন্ন রাখাতেই জোর দিচ্ছে’ বলে তিনি যুক্ত করেন।

ছবি : সম্পাদিত

আন্তর্জাতিক শরণার্থী বিষয়ক সংস্থা ইউএনএইচসিআর সহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশ ও সংস্থা রোহিঙ্গা শরণার্থীদের জৈবিক চাহিদা পূরণের চেষ্টা করছে ঠিকই, কিন্তু মানসিক চাহিদা পূরণ করতে পিছুটান দেখিয়েছে। নাগরিকতার শর্তে স্বদেশে প্রত্যাবাসনই রোহিঙ্গাদের মানসিক চাহিদা। কিন্তু এ চাহিদা পূরণ হলেই মাত্র শরণার্থী জীবনের অভিশাপ মোচন হবে ।

এদিকে কয়েক দশক ধরে বাংলাদেশের মানুষ সংকটাপন্ন রোহিঙ্গাদের প্রতি অসামান্য সংহতি প্রদর্শন করেছে। নিজেদের অসচ্ছলতা এবং জনসংখ্যা সমস্যা সত্ত্বেও রোহিঙ্গাদের ঠাঁই দেওয়ার এই নিদর্শন উদারতার দৃষ্টান্ত। শরণার্থী অধিকার সুরক্ষার পাশাপাশি শরণার্থী-অধ্যুষিত এলাকায় বসবাসরত বাংলাদেশি সম্প্রদায়ের মানুষের প্রয়োজনগুলো চিহ্নিতকরণ এবং উন্নয়ন ঘটানোও সমানভাবে গুরুত্বপূর্ণ। যা পারবে বাংলাদেশ সরকার ও আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়। অন্যদিকে বার্মা সরকারের ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গিই পারে নিজের দেশের মানুষগুলোকে গ্রহণ করে অধিকার ফিরিয়ে দিতে। সূচি সরকারের দৃষ্টিভঙ্গির পরিবর্তন ঘটাতে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে পাশে দাঁড়াতে হবে ।

অন্যদিকে সহনশীল বাংলাদেশ সরকার রোহিঙ্গা সংকট উত্তোরণে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক রক্ষার পাশাপাশি বিষয়টিকে আন্তর্জাতিকীকরণ করার চেষ্টা করে চলছে। সম্প্রতি ইন্টারন্যাশনাল ক্রাইম কোর্ট (আইসিসি)র চাহিদা পূরণে মতামত সম্বলিত পত্র পাঠিয়েছে বাংলাদেশ। এতে করে নড়েচড়ে বসেছে মিয়ানমার। কিছুটা ইতিবাচক পদক্ষেপ হিসেবে জাতিসংঘের দুটি সংস্থার সাথে প্রত্যাবাসন চুক্তি স্বাক্ষর করেছে নেপিদো সরকার।

ছবি : সম্পাদিত

জাতিসংঘের মানবাধিকার সংস্থার প্রধান জায়েদ রাদ আল হোসাইন সর্বশেষ গত সোমবার (১৮ জুন) বলেছেন, রোহিঙ্গাদের স্বদেশে ফেরত যাওয়ার পরিবেশ এখনো রাখাইনে সৃষ্টি হয়নি। সেখানে মানবাধিকার পরিস্থিতির উন্নতি করতে হবে।

রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন সুষ্ঠু, নিরাপদ ও টেকসই হলেই মাত্র বাংলাদেশের কাঁধের বোঝা নেমে যাবে । তাই রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠির প্রত্যাশামত তাদের নাগরিক অধিকার বিষয়টি খাতা কলমে হওয়া জরুরি। নয়তো অতীত তিক্ত অভিজ্ঞতার মতো বিশাল শরণার্থীর বোঝা কাঁধে নিয়ে বয়ে বেড়াতে হবে বাংলাদেশকে।

ফিলিস্তিনি শরণার্থী ও প্রত্যাবাসনে ইসরায়েলের আইন লঙ্ঘন :

কোনো জাতি, বর্ণ, জাতীয় বা জাতিগত নিধন থেকে শরণার্থীদের তাদের বাড়ি ফেরার অধিকার অস্বীকার করার আন্তর্জাতিক আইনে সম্পূর্ণ অবৈধ। তবুও ইসরায়েল নিজেরা আইন করে ফিলিস্তিনি উদ্বাস্তুদের তাদের বাড়ি ফেরত যাওয়া থেকে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাখ্যান করেনি, যা এখন ইসরায়েলের দখলকৃত ফিলিস্তিনি অঞ্চলগুলিতে (ফিরতি আইন) ফিলিস্তিনি শরণার্থীদের (জাতীয়তা আইন) লক্ষ্য করে গণ সংবিধানকরণের আইন অনুমোদন করেছে।

ফিলিস্তিনিদের ব্যক্তিগত সম্পত্তি এবং ভূমি হোল্ডিং জব্দ করেছে (অনুপস্থিত সম্পত্তি আইন এবং ভূমি অধিগ্রহণ আইন)। রাইট অফ রিটার্ন আইন অমান্য অব্যাহত রেখেছে, ফিলিস্তিনি শরণার্থীরা জাতিসংঘের নীতিমালা ও নির্দেশিকা, আইসিসিপিআর আর্টিকেল ২ এবং অন্যান্য নীতির ওপর ভিত্তি করে তাদের বাড়ির এবং সম্পত্তিগুলির পুনঃপ্রতিষ্ঠানের অধিকারী। প্রত্যাবাসন পুনর্বিবেচনা (ফেরত অধিকারসহ), ক্ষতিপূরণ, পুনর্বাসন, ক্ষতিগ্রস্তদের সন্তুষ্টি, এবং পুনরাবৃত্তি গ্যারান্টি দিতে আন্তর্জাতিক আইন প্রতিষ্ঠিত হলেও ইসরায়েল এখন পর্যন্ত সেই আইন তোয়াক্কা করে না।

নভেম্বরে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন শুরু করতে বাংলাদেশ সরকার ও ‘ইউএনএইচসিআর’ চুক্তি :

নভেম্বর থেকেই রোহিঙ্গা প্রত্যবাসন শুরু হচ্ছে বলে জানিয়েছেন পররাষ্ট্র সচিব এম শহীদুল হক। মঙ্গলবার (৩০ অক্টোবর) দুপুরে মিয়ানমারের পররাষ্ট্র সচিব মিন্ট থো-এর সঙ্গে তৃতীয় জয়েন্ট ওয়ার্কিং কমিটির বৈঠক শেষে তিনি এ কথা জানান।

মধ্য নভেম্বরে রোহিঙ্গাদের প্রথম ব্যাচকে প্রত্যাবাসন করা হবে জানিয়ে তিনি সাংবাদিকদের বলেন, ‘প্রত্যাবাসন একটি জটিল প্রক্রিয়া। কিন্তু রাজনৈতিক সদিচ্ছা থাকলে প্রত্যাবাসন করা সম্ভব। আমরা দেখছি আমাদের দুই পক্ষেরই রাজনৈতিক সদিচ্ছা আছে।’

ছবি : সম্পাদিত

রোহিঙ্গাদের সঙ্গে কথা বলতে বাংলাদেশ ও মিয়ানমারের পররাষ্ট্র সচিবদ্বয় আগামীকাল (বুধবার) কক্সবাজার রোহিঙ্গা ক্যাম্প পরিদর্শনে যাচ্ছেন বলে জানান শহীদুল হক।

রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন প্রসঙ্গে মিয়ানমারের পররাষ্ট্র সচিব মিন্ট থো বলেন, ‘বাংলাদেশ ও মিয়ানমার উভয় পক্ষেরই রাজনৈতিক সদিচ্ছা আছে এবং তারা দ্রুত প্রত্যাবাসন শুরু করতে চায়।’

রোহিঙ্গাদের নিরাপত্তায় রাখাইনে অনেকগুলো পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে উল্লেখ করে তিনি আরও জানান, ‘সেখানকার পুলিশ এবং জনগণকে সচেতন করা হয়েছে যাতে করে রোহিঙ্গারা বৈষম্যের শিকার না হয়।’

কতজন রোহিঙ্গাকে এই ধাপে ফেরত নেওয়া হবে এ প্রসঙ্গে কিছুই বলেননি তিনি। তবে ৪৬০০ জনের তথ্য যাচাইবাছাই করা হয়েছে বলেও জানান তিনি। ফেব্রুয়ারিতে ৮০৩২ জনের একটি তালিকা মিয়ানমার সরকারের নিকট হস্তান্তর করা হয়।

ছবি : সম্পাদিত

শরণার্থীদের নীড়ে ফেরার অধিকার রয়েছে, তাদের ঘরে, নিজের দেশে, নিজের পরিবেশে বেঁচে থাকার অধিকার রয়েছে। 'মানবাধিকার' শব্দটা তখনই বাস্তবায়িত হবে তাদের জীবনে যখন তাদের নিজগৃহে নিজের মানুষের মতো বেঁচে থাকার ব্যবস্থা করে দেয়া যাবে। যারা সব হারিয়েছে তাদের বাড়ির সেই হারানো মানুষ বা বাড়ি না পেলেও সেই মাটিতে যেখানে তাদের জন্ম সেখানে ফিরে যাবার অধিকার আছে। মহীনের ঘোড়াগুলির ‘ঘরে ফেরার গান’ কিছু লাইনে যা কিছুটা স্পষ্ট....

'আমি প্রায় এখনো খুঁজি সে দেশ জানি নেই অবশেষ মরিচীকা হায় স্বপ্ন দেখায় শৈশবে আর ফেরা যাবে নাকি নেই পথ নেই হারিয়ে গেছে সে দেশ'

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া

 

সম্পাদকীয় কার্যালয় 

১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।

যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702 

ই-মেইল: [email protected]

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড