• বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১  |   ৩৯ °সে
  • বেটা ভার্সন
sonargao

মোদী তথ্যচিত্র : বিবিসিকে দিল্লির হাইকোর্টে তলব

  আন্তর্জাতিক ডেস্ক

২২ মে ২০২৩, ১৭:২৮
মোদী তথ্যচিত্র : বিবিসিকে দিল্লির হাইকোর্টে তলব
ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী (ছবি : বিবিসি নিউজ)

দু’দশক আগে ভারতের গুজরাট শহরের ভয়াবহ দাঙ্গা এবং তাতে দেশটির বর্তমান প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সংশ্লিষ্টতা নিয়ে বিবিসির বিতর্কিত ‘ইন্ডিয়া : দ্য মোদী কোশ্চেন’ তথ্যচিত্রের জেরে করা এক মানহানির মামলায় এবার ব্রিটেনভিত্তিক এই বৈশ্বিক সংবাদমাধ্যমের নির্বাহীদের তলব করেছেন দিল্লি হাইকোর্ট।

দিল্লি হাইকোর্টের বিচারপতি শচীন দত্তের নেতৃত্বাধীন একটি বেঞ্চ সোমবার বিবিসির যুক্তরাজ্য শাখা বা সদর দপ্তর এবং বিবিসি ভারত শাখা কার্যালয়ের নির্বাহীদের উদ্দেশে এই আদেশ দিয়েছেন।

‘ইন্ডিয়া : দ্য মোদী কোশ্চেন’ তথ্যচিত্রের মাধ্যমে বিবিসি বৈশ্বিক অঙ্গনে ভারতের মানহানির চেষ্টা করেছে— অভিযোগ জানিয়ে কয়েক মাস আগে দিল্লি হাইকোর্টে রিট করেছিল ‘জাস্টিস অন ট্রায়াল’ নামের একটি ভারতীয় অলাভজনক এনজিও সংস্থা। সেই রিটে বিবিসির নিঃশর্ত ক্ষমা ও ১০ লাখ টাকা ক্ষতিপূরণ দাবি করে সংস্থাটি।

আজ সোমবার সেই রিটের ওপর শুনানি শেষে আদালত এ ব্যাপারে বিবিসির বক্তব্য জানতে চেয়ে এই তলবের আদেশ দেন। আগামী ১৫ সেপ্টেম্বর মামলার পরবর্তী শুনানির দিন ধার্য করে দিয়েছেন বিচারক। যদি সেদিন বিবিসির দুই শাখার প্রতিনিধিরা হাই কোর্টে হাজির না থাকেন, সেক্ষেত্রে আদালত অবমাননার অভিযোগে পড়বে বিবিসি।

দিল্লি হাইকোর্টের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী অ্যাডভোকেট হরিশ সালভে আদালতে রিটকারী ওই এনজিওর প্রতিনিধিত্ব করছেন। ভারতের বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমকে তিনি জানান, দুই খণ্ডের ওই তথ্যচিত্রের মাধ্যমে বিবিসি কেবল ভারতের রাজনীতিই নয়, বিচারব্যবস্থার মানহানি করেছে।

গত ১৭ জানুয়ারি ‘ইন্ডিয়া : দ্য মোদী কোশ্চেন’ নামে একটি তথ্যচিত্র প্রকাশ করেছে বিবিসি ২ টেলিভিশন চ্যানেল। মূল বিবিসিরই একটি শাখা এই চ্যানেলটি।

তথ্যচিত্রটিতে প্রধানত দেখানো হয়েছে, কীভাবে ২০০২ সালে গুজরাটের দাঙ্গাকে ব্যবহার করে ওই রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ২০১৪ সালে ভারতের প্রধানমন্ত্রী হলেন। এমন অনেক কথাই অবশ্য ছবিটিতে বলা হয়েছে, যা নতুন নয়; কিন্তু যাবতীয় তথ্য-উপাত্ত এক জায়গায় এনে বিবিসি একটি তত্ত্ব দাঁড় করিয়েছে। আর তত্ত্বটি হলো, গুজরাট দাঙ্গা মোদীকে প্রধানমন্ত্রী হতে সাহায্য করেছে।

এই প্রক্রিয়ায় কীভাবে তার দল ভারতীয় জনতা পার্টি (বিজেপি), হিন্দুত্ববাদী সংগঠন রাষ্ট্রীয় স্বয়ং সেবক সংঘ এবং হিন্দুত্ববাদী নেতা-কর্মীদের পাশাপাশি ভারতের বিচারব্যবস্থা তাঁকে সাহায্য করেছে, তা ও দেখানো হয়েছে ছবিতে।

এ দিকে দুই খণ্ডের সেই তথ্যচিত্রটি প্রকাশের পর রীতিমতো তোলপাড় শুরু হয় ভারতের রাজনীতিতে। চিত্রটির প্রদর্শনকে কেন্দ্র করে ভারতের বিভিন্ন রাজ্যে বিজেপি ও বিজেপি বিরোধী অন্যান্য রাজনৈতিক দলের কর্মী-সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনাও ঘটেছে। তার জেরে ফেসবুক, টুইটার, ইউটিউবসহ সব সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এই তথ্যচিত্রটি প্রচারে নিষেধাজ্ঞা দেয় দেশটির কেন্দ্রীয় সরকার।

পাশাপাশি কেন্দ্রীয় সরকারে ক্ষমতাসীন বিজেপির পক্ষ থেকে বলা হয়, ভারত ও ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সম্মানহানির জন্য উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে বানানো হয়েছে এ তথ্যচিত্র।

তার কিছুদিন পর ফেব্রুয়ারির দ্বিতীয় সপ্তাহে বিবিসি ভারত শাখার দিল্লি ও মুম্বাই কার্যালয়ে হানা দেন ভারতের আয়কর বিভাগের কর্মকর্তারা। তিন দিন ধরে চলা সেই তল্লাশি অভিযান শেষে দুই কার্যালয়ের আর্থিক লেনদেন ও ব্যাংক হিসাব সংক্রান্ত যাবতীয় নথি তারা জব্দ করে নিয়ে যান।

আয়কর বিভাগের কর্মকর্তারা অবশ্য বলেছেন, দুই কার্যালয়ে তারা সমীক্ষা চালিয়েছেন, তল্লাশি নয় এবং পর্যবেক্ষণ ও পর্যালোচনা শেষে যাবতীয় নথি ও কাগজপত্র তারা ফেরত দেবেন।

সেই অভিযানের প্রায় দু’মাস পর, ১৩ এপ্রিল ভারত শাখার বিরুদ্ধে কর ফাঁকির মামলা করে ভারতের আয়কর বিভাগ। সেই মামলার বিচার কার্যক্রম এখনো চলছে।

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া

 

সম্পাদকীয় কার্যালয় 

১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।

যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702 

ই-মেইল: [email protected]

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড