করোনায় ৬৬ লাখ ১৭ হাজার মৃত্যু দেখল বিশ্ব

চলমান মহামারি করোনা ভাইরাসের ভয়াল থাবায় বিশ্বজুড়ে দৈনিক মৃত্যুর সংখ্যা ক্রমে বৃদ্ধি পাচ্ছে। একই সঙ্গে আগের দিনের তুলনায় উল্লেখযোগ্য পরিমাণে বেড়েছে প্রাণঘাতী ভাইরাসে নতুন শনাক্ত রোগীর সংখ্যাও। গেল ২৪ ঘণ্টায় সারা বিশ্বে কোভিড আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুবরণ করেছেন সাড়ে সাত শতাধিক মানুষ। নির্ধারিত এই সময়ের মধ্যে ভাইরাসটিতে নতুন করে সংক্রমিতের সংখ্যা প্রায় সোয়া তিন লাখে পৌঁছেছে।

এ দিকে গত এক দিনে বিশ্বজুড়ে সবচেয়ে বেশি সংক্রমণের ঘটনা ঘটক পূর্ব এশিয়ার দেশ জাপানে। অপর দিকে দৈনিক প্রাণহানির তালিকায় এরই মধ্যে শীর্ষস্থানে উঠে এসেছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নাম। আর প্রাণ হারানোদের তালিকায় এরপরই রয়েছে যথাক্রমে- ফ্রান্স, জাপান, রাশিয়া এবং তাইওয়ান। এতে বিশ্বব্যাপী রোগটিতে আক্রান্তের সংখ্যা ৬৪ কোটি নয় লাখের ঘর ছাড়িয়েছে। অন্য দিকে মৃতের সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়ে ৬৬ লাখ ১৭ হাজারে দাঁড়িয়েছে।

বুধবার (১৬ নভেম্বর) বাংলাদেশ সময় সকাল সাড়ে ১০টা পর্যন্ত করোনা ভাইরাসে মৃত্যু, আক্রান্ত ও সুস্থতার হিসাব রাখা ওয়েবসাইট ওয়ার্ল্ডো মিটারস থেকে পাওয়া সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, শেষ ২৪ ঘণ্টায় সারা বিশ্বে কোভিড আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুবরণ করেছেন ৭৫৬ জন। অর্থাৎ আগের দিনের তুলনায় মৃত্যুর সংখ্যা প্রায় দুইশ বেড়েছে। এতে বিশ্বজুড়ে মৃতের সংখ্যা ৬৬ লাখ ১৭ হাজার ৮১৬ জনে পৌঁছে গেছে।

নির্ধারিত এই সময়ের মধ্যে ভাইরাসটিতে নতুন করে সংক্রমিত হয়েছেন তিন লাখ ১৭ হাজার ১৮৬ জন। অর্থাৎ আগের দিনের তুলনায় নতুন শনাক্ত রোগীর সংখ্যা দেড় লাখেরও বেশি বেড়েছে। এতে মহামারির তাণ্ডব শুরুর পর থেকে ভাইরাসটিতে এ পর্যন্ত মোট আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা বেড়ে ৬৪ কোটি নয় লাখ ২২ হাজার ৩১০ জনে দাঁড়িয়েছে।

এ দিকে গত এক দিনে বিশ্বজুড়ে করোনার থাবায় সবচেয়ে বেশি সংক্রমণের ঘটনা দেখল জাপানের জনগণ। একই সময়ে দেশটিতে নতুন করে রোগটিতে আক্রান্ত হয়েছেন এক লাখ দুই হাজার ৮২৯ জন এবং মারা গেছেন ৮৮ জন। করোনা মহামারির তাণ্ডব শুরুর পর থেকে পূর্ব এশিয়ার দেশটিতে এ পর্যন্ত দুই কোটি ৩৩ লাখ ১৯ হাজার ৯৪ জন রোগটিতে আক্রান্ত বলে শনাক্ত হয়েছেন। এদের মধ্যে মারা গেছেন ৪৭ হাজার ৭১৫ জন।

অন্য দিকে দৈনিক প্রাণ হারানোদের তালিকায় এরই মধ্যে শীর্ষস্থানে উঠে এসেছে যুক্তরাষ্ট্রের নাম। গত ২৪ ঘণ্টায় মার্কিন ভূখণ্ডে নতুন করে কোভিড আক্রান্ত হয়েছেন ১৪ হাজার ৮৪৬ জন এবং মারা গেছেন ১৪৫ জন। করোনা ভাইরাসে সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত দেশটিতে এ পর্যন্ত নয় কোটি ৯৯ লাখ ৬০ হাজার ২৩৯ জন রোগটিতে আক্রান্ত বলে শনাক্ত হয়েছেন। এদের মধ্যে মৃত্যু হয়েছে ১১ লাখ ৫০৭ জন।

ফ্রান্সে গত ২৪ ঘণ্টায় করোনার থাবায় আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুবরণ করেছেন ১১০ জন। এছাড়া নতুন করে ভাইরাসটিতে আক্রান্ত হয়েছেন ৪৮ হাজার ৯৭১ জন। করোনা মহামারির তাণ্ডব শুরুর পর থেকে দেশটিতে এ পর্যন্ত তিন কোটি ৭১ লাখ ৮২ হাজার ১৬১ জন রোগটিতে আক্রান্ত বলে শনাক্ত হয়েছেন। এছাড়া মারা গেছেন এক লাখ ৫৭ হাজার ৯৩১ জন। একই সময়ে দক্ষিণ কোরিয়ায় নতুন করে কোভিড আক্রান্ত হয়েছেন ৭২ হাজার ৮৮৩ জন এবং প্রাণ গেছে ৩৯ জনের।

রাশিয়ায় গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে ভাইরাসটিতে সংক্রমিত হয়েছেন চার হাজার ৪৩১ জন এবং মারা গেছেন ৬৪ জন। এছাড়া মহামারির তাণ্ডব শুরুর পর থেকে দেশটিতে এ পর্যন্ত মোট শনাক্ত রোগীর সংখ্যা বেড়ে দুই কোটি ১৫ লাখ আট হাজার ৯৬১ জনে পৌঁছেছে। এছাড়া মারা গেছে তিন লাখ ৯১ হাজার ১৪৯ জন। একই সময়ে ইন্দোনেশিয়ায় নতুন করে করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন সাত হাজার ৮৯৩ জন এবং মারা গেছেন ৪১ জন।

করোনায় আক্রান্তের দিক থেকে চতুর্থ ও মৃত্যুর সংখ্যায় তালিকার দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে ল্যাটিন আমেরিকার দেশ ব্রাজিল। গত ২৪ ঘণ্টায় দেশটিতে করোনার থাবায় আক্রান্ত হয়ে প্রাণ গেছে ২৪ জনের। আর নতুন করে সংক্রমিত হয়েছেন দুই হাজার ৫৮২ জন। অপর দিকে মহামারির তাণ্ডব শুরুর পর থেকে দেশটিতে এ পর্যন্ত মোট শনাক্ত রোগীর সংখ্যা বেড়ে তিন কোটি ৪৯ লাখ ৬৩ হাজার ৯৮৫। এছাড়া মৃত্যু হয়েছে ছয় লাখ ৮৮ হাজার ৭৭০ জনের।

উল্লেখ্য, ২০১৯ সালের ডিসেম্বর মাসে এশিয়ার পরাশক্তি চীনের হুবেই প্রদেশের উহান শহরে প্রথম করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত রোগী শনাক্ত হয়। এরপর ২০২০ সালের ১১ মার্চ বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) প্রাণঘাতী ভাইরাসটিকে ‘বৈশ্বিক মহামারি’ হিসেবে ঘোষণা করে। এর আগে একই বছরের ২০ জানুয়ারি বিশ্বজুড়ে জরুরি পরিস্থিতি ঘোষণা করে সংস্থাটি।