আন্তর্জাতিক ডেস্ক
শক্তিশালী ড্রোন হামলা চালিয়ে জেনারেল কাশেম সোলাইমানিকে হত্যার দায়ে যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক বাহিনীর কয়েক ডজন কর্মকর্তার বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে ইসলামি প্রজাতন্ত্র ইরান। ২০২০ সালে মধ্যপ্রাচ্যের যুদ্ধবিধ্বস্ত রাষ্ট্র ইরাকের বাগদাদ বিমানবন্দরের কাছে ড্রোন থেকে গোলাবর্ষণ করে ইরানের বিপ্লবী গার্ড বাহিনীর (আইআরজিসি) কুদস ফোর্সের শীর্ষ ওই জেনারেলকে হত্যার দায়ে নিষেধাজ্ঞাটি আরোপ করা হয় বলে জানিয়েছে তেহরান।
শনিবার (৮ জানুয়ারি) ইরানি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলছে, মানবাধিকার লঙ্ঘন এবং সন্ত্রাসবাদের দায়ে ৫১ মার্কিন সামরিক কর্মকর্তাকে টার্গেট করা হয়েছে। এই নিষেধাজ্ঞার ফলে ইরানের মাটিতে আমেরিকান কর্মকর্তাদের কোনো সম্পদ থাকলে তা ইরানি কর্তৃপক্ষ বাজেয়াপ্ত করতে পারবে। যদিও ইরানি ভূখণ্ডে মার্কিন সামরিক কর্মকর্তাদের সম্পদ না থাকায় নিষেধাজ্ঞাটি প্রতীকী ব্যবস্থা বলে ধারণা করা হচ্ছে।
দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে পাঠানো বিবৃতির বরাতে ইরানি বার্তা সংস্থা ইরনা জানায়, জেনারেল কাশেম সোলাইমানি এবং তার সহযোগীর বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রের সন্ত্রাসবাদী ভূমিকায় সংশ্লিষ্টতা এবং সন্ত্রাসবাদ ও মৌলিক মানবাধিকার লঙ্ঘনের দায়ে ওই ৫১ জনের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে।
বিশ্লেষকদের মতে, ইরানের বিপ্লবী গার্ড বাহিনীর অভিজাত শাখা কুদস ফোর্সের কমান্ডার ছিলেন জেনারেল কাশেম সোলাইমানি। যিনি দীর্ঘদিন যাবত বাহিনীটির বৈশ্বিক কর্মকাণ্ডের নেতৃত্ব দিয়ে আসছিলেন। ২০২০ সালের ৩ জানুয়ারি মার্কিন সামরিক বাহিনী ইরাকে ড্রোন হামলা চালিয়ে তাকে হত্যা করে। পরবর্তীকালে আমেরিকার তৎকালীন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ঘোষণা দেন যে, তার নির্দেশেই কাশেম সোলাইমানিকে হত্যা করা হয়েছে।
ইরানের নিষেধাজ্ঞার তালিকায় থাকা মার্কিন সামরিক কর্মকর্তাদের মধ্যে জয়েন্ট চিফস অব স্টাফের চেয়ারম্যান জেনারেল মার্ক মিলি, হোয়াইট হাউসের সাবেক জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা রবার্ট ও’ব্রায়েন রয়েছেন।
আরও পড়ুন : ভবিষ্যতের সমরাস্ত্র-যুদ্ধের কৌশল কেমন হবে?
সন্ত্রাসী এবং মানবতাবিরোধী কাজে জড়িত থাকার অভিযোগে এক বছর আগে তৎকালীন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এবং যুক্তরাষ্ট্রের অন্য কয়েকজন জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে একই ধরনের নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছিল তেহরান।
গেল সপ্তাহে জেনারেল কাশেম সোলাইমানি হত্যাকাণ্ডের দ্বিতীয় বার্ষিকীতে ইরানের প্রেসিডেন্ট ইব্রাহীম রাইসি বলেন, নির্মম এই হত্যাকাণ্ডের জন্য ট্রাম্পকে অবশ্যই বিচারের মুখোমুখি হতে হবে। নতুবা তেহরান অবশ্যই প্রতিশোধ নেবে।
উল্লেখ্য, ২০১৫ সালে বিশ্ব শক্তির দেশগুলোর সঙ্গে স্বাক্ষরিত ইরানের পারমাণবিক চুক্তি থেকে ২০১৮ সালে যুক্তরাষ্ট্রকে প্রত্যাহার করে নেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। চুক্তি থেকে বেরিয়ে যাওয়ার পর সেই সময় ইরানের কয়েক ডজন কর্মকর্তা-রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব এবং বিভিন্ন কোম্পানির বিরুদ্ধে কঠোর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে ট্রাম্প প্রশাসন।
আরও পড়ুন : ইথিওপিয়ায় আশ্রয় শিবিরে বিমান হামলায় নিহত ৫৬
মৃতপ্রায় সেই পারমাণবিক চুক্তি পুনরুজ্জীবিত করতে সম্প্রতি ভিয়েনায় ইরান এবং যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে পরোক্ষ আলোচনা শুরু হয়েছে।
সূত্র : রয়টার্স
ওডি/কেএইচআর
সম্পাদক: মো: তাজবীর হোসাইন
সহযোগী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া
সম্পাদকীয় কার্যালয়
১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।
যোগাযোগ: 02-48118241, +8801907484702
ই-মেইল: [email protected]
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।
Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড