আন্তর্জাতিক ডেস্ক
মহামারি করোনা ভাইরাসের শক্তিশালী নতুন ধরন ওমিক্রন ভ্যারিয়েন্টের কারণে ইউরোপজুড়ে সংক্রমণের ব্যাপক ঊর্ধ্বগতি দেখা দিয়েছে। ব্রিটেন, ফ্রান্স ও পর্তুগালে রেকর্ড সংক্রমণসহ মহাদেশটির অনেকে রাষ্ট্রেই আক্রান্তের সংখ্যা লাফিয়ে লাফিয়ে বৃদ্ধি পাচ্ছে। বুধবার (২৯ ডিসেম্বর) প্রতিবেদন প্রকাশের মাধ্যমে ব্রিটিশ মিডিয়া বিবিসি নিউজ ও কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল-জাজিরা তথ্যটি নিশ্চিত করেছে।
মিডিয়াগুলো বলছে, গেল ২৪ ঘণ্টায় ফ্রান্সে নতুন করে মহামারি করোনা ভাইরাসে সংক্রমিত হয়েছেন এক লাখ ৭৯ হাজার ৮০৭ জন। যা প্রাণঘাতী ভাইরাসটির তাণ্ডব শুরুর পর থেকে সর্বোচ্চ। এর আগে গেল শনিবার দেশটিতে আক্রান্ত হয়েছিলেন এক লাখ চার হাজার ৬১১ জন। মঙ্গলবারের আগ পর্যন্ত সেটিই ছিল সর্বোচ্চ সংখ্যক সংক্রমণ। অপর দিকে একই সময়ের মধ্যে রোগটিতে শনাক্ত হয়ে দেশটিতে প্রাণ হারিয়েছেন ২৯০ জন।
এ দিকে মঙ্গলবার যুক্তরাজ্যে নতুন করে করোনা ভাইরাসে সংক্রমিত হয়েছেন এক লাখ ২৯ হাজার ৪৭১ জন। দৈনিক সংক্রমণের বিচারে যা মহামারির শুরু থেকে সর্বোচ্চ। যদিও এর মধ্যে উত্তর আয়ারল্যান্ড এবং স্কটল্যান্ডের তথ্য অন্তর্ভুক্ত করা হয়নি। এর আগে গত ২৪ ডিসেম্বর ব্রিটিশ ভূখণ্ডে এক লাখ ২২ হাজার ১৮৬ জনের শরীরে করোনার উপস্থিতি শনাক্ত হয়েছিল।
এছাড়া করোনা ভাইরাসে মৃত্যু, আক্রান্ত ও সুস্থতার হিসাব রাখা ওয়েবসাইট ওয়ার্ল্ডো মিটারস থেকে পাওয়া তথ্য অনুযায়ী, নির্ধারিত শেষ ২৪ ঘণ্টায় করোনার থাবায় যুক্তরাজ্যে মৃত্যুবরণ করেছেন ১৮ জন। মহামারির তাণ্ডব শুরুর পর থেকে ইউরোপের দেশটিতে এ পর্যন্ত এক কোটি ২৩ লাখ ৩৮ হাজার ৬৭৬ জন সংক্রমিত হয়েছেন। আর মৃত্যু হয়েছে এক লাখ ৪৮ হাজার ২১ জন কোভিড রোগীর।
মঙ্গলবার পর্তুগালেও রেকর্ড সংখ্যক লোক মহামারি করোনায় শনাক্ত হয়েছেন। কোভিড প্রতিরোধী টিকাদানের হারে বিশ্বের শীর্ষস্থানীয় দেশগুলোর মধ্যে থাকা সত্ত্বেও ওমিক্রনের থাবায় দেশটিতে ফের সংক্রমণের ঊর্ধ্বগতি দেখা দিয়েছে। এছাড়া ভ্যাকসিন প্রয়োগের হার অনেক ভালো হওয়া সত্ত্বেও ইতালি, সাইপ্রাস ও গ্রিসেও সংক্রমণ লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে।
আরও পড়ুন : করোনার থাবায় বিশ্বে সাড়ে ১১ হাজার ফ্লাইট বাতিল
অবশ্য আগামী দিনগুলোতে ফ্রান্সসহ ইউরোপের বহু দেশে সংক্রমণ আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। গেল সোমবার ফরাসি স্বাস্থ্যমন্ত্রী অলিভার ভেরান হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেছিলেন, সবকিছু বিবেচনা করে এটিই বোঝা যাচ্ছে যে- আগামী জানুয়ারি মাসের শুরুতে ফ্রান্সে দৈনিক সংক্রমণের হার দুই লাখ ৫০ হাজারে পৌঁছাতে পারে।
অপর দিকে ফ্রান্সের হসপিটাল ফেডারেশন হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেছে, মহামারি করোনা ভাইরাসের কারণে সবচেয়ে খারাপ সপ্তাহগুলো এখনো আসতে বাকি রয়েছে। এর পাশাপাশি জানুয়ারির শুরু থেকে সম্ভব হলে সবাইকে বাধ্যতামূলকভাবে সপ্তাহে তিনদিন বাড়িতে থেকে কাজ করার নির্দেশনা দিয়েছেন ফরাসি প্রধানমন্ত্রী জ্যঁ ক্যাসটেক্স।
বিশ্লেষকদের মতে, ওমিক্রনের এই বিপর্যয়কর পরিস্থিতির মধ্যেই অবশ্য করোনা প্রতিরোধী ভ্যাকসিনের বুস্টার ডোজ প্রয়োগের কাজ আরও জোরদার করেছে ফরাসি প্রশাসন। গেল মঙ্গলবার পর্যন্ত দেশটিতে দুই কোটি ৩০ লাখেরও বেশি মানুষ কোভিড প্রতিরোধী টিকার বুস্টার ডোজ গ্রহণ করেছেন।
আরও পড়ুন : করোনায় ৫৪ লাখ ৩০ হাজার মৃত্যু দেখল বিশ্ব
উল্লেখ্য, ২০১৯ সালের ডিসেম্বর মাসে এশিয়ার পরাশক্তি চীনের হুবেই প্রদেশের উহান শহরে প্রথম করোনা ভাইরাসে সংক্রমিত রোগী শনাক্ত হয়। এরপর গত বছরের ১১ মার্চ প্রাণঘাতী ভাইরাসটিকে ‘বৈশ্বিক মহামারি’ হিসেবে ঘোষণা করে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও)। এর আগে একই বছরের ২০ জানুয়ারি সংস্থাটি বিশ্বজুড়ে জরুরি পরিস্থিতি ঘোষণা করে।
ওডি/কেএইচআর
নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া
সম্পাদকীয় কার্যালয়
১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।
যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702
ই-মেইল: [email protected]
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।
Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড