• বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১  |   ২৮ °সে
  • বেটা ভার্সন
sonargao

২৭ যুদ্ধবিমান নিয়ে ফের তাইওয়ানের আকাশে চীন

  আন্তর্জাতিক ডেস্ক

২৯ নভেম্বর ২০২১, ১৩:১০
২৭ যুদ্ধবিমান নিয়ে ফের তাইওয়ানের আকাশে চীন
তাইওয়ানে আক্রমণের জন্য প্রস্তুত চীনের যুদ্ধবিমান (ছবি : সিনহুয়া)

তাইওয়ানের আকাশসীমা আবারও লঙ্ঘনের অভিযোগ উঠেছে এশিয়ার পরাশক্তি চীনের বিরুদ্ধে। এবার চীনা বিমানবাহিনীর পারমাণবিক বোমা বহনে সক্ষম বোমারুসহ মোট ২৭টি যুদ্ধবিমান অবৈধভাবে তাইওয়ানিজ এলাকায় প্রবেশ করে। রবিবার (২৮ নভেম্বর) তাইওয়ান কর্তৃপক্ষের বরাতে এসব তথ্য জানিয়েছে ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্স।

প্রতিবেদনে বলা হয়, এই ২৭টি যুদ্ধবিমানের মধ্যে পারমাণবিক বোমা বহনে সক্ষম এইচ-৬ বোমারু বিমান ছিল পাঁচটি। এছাড়া ১৮টি ছিল ফাইটার বিমান। আর রিফুয়েলিংয়ের জন্য ছিল বাকিগুলো।

বোমারু বিমান এবং ছয়টি ফাইটার জেট তাইওয়ানের দক্ষিণাঞ্চলীয় বাশি চ্যানেল দিয়ে উড়ে যায়। মূলত এরপর চীনে ফিরে যাওয়ার আগে প্রশান্ত মহাসাগরের ওপর সেগুলো চক্কর দেয়।

এ দিকে চীনের যুদ্ধবিমানগুলোকে সাবধান করে দিতে তাইওয়ানের যুদ্ধবিমানও সেখানে উড়ে যায়। এবার তাইওয়ানিজ ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবস্থাকেও চূড়ান্ত সতর্ক করে দেওয়া হয়।

অপর দিকে তাইওয়ানে যুক্তরাষ্ট্রের একটি প্রতিনিধিদল ঘুরে গেছে। আবার একটি মার্কিন প্রতিনিধিদল সেখানে আসছে। মূলত তার আগে চীন আবার অঞ্চলটিতে যুদ্ধবিমান পাঠাল।

আরও পড়ুন : ব্রিটেনের সঙ্গে ‘গুরুতর’ আলোচনা চায় ফ্রান্স

এর আগে ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) প্রতিনিধিদল যখন তাইওয়ান সফরে গিয়েছিল, তখনো চীনা যুদ্ধবিমান তাইওয়ানের এয়ার ডিফেন্স জোনে প্রবেশ করেছিল।

বিশ্লেষকদের মতে, তাইওয়ানকে শুরু থেকেই নিজেদের ভূখণ্ডের একটি অংশ বলে মনে করে থাকে বেইজিং। আর তাই চলমান উত্তেজনার মধ্যেই চলতি বছরের অক্টোবর মাসে চীনা প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং বলেছিলেন, মূল ভূখণ্ডের সঙ্গে তাইওয়ানের পুনরেকত্রীকরণ অবশ্যই সম্পূর্ণ করতে হবে। এ জন্য সামরিক পথে অগ্রসর হওয়ার বিষয়টিও খোলা রেখেছে বেইজিং।

অবশ্য নিজেদের চীনা প্রদেশ নয়, বরং একটি সার্বভৌম রাষ্ট্র বলে মনে করে থাকে তাইওয়ান। চীনের প্রেসিডেন্টের এমন মন্তব্যের জবাবে তাইওয়ান জানায়, আমাদের এই দেশের ভবিষ্যৎ এখানকার জনগণের হাতেই থাকবে।

এতকিছুর পরও তাইওয়ানকে চীনের মূল ভূখণ্ডের সঙ্গে যুক্ত করতে বেইজিংয়ের চেষ্টার কমতি নেই। তাইওয়ান উপত্যকার চারদিকে সামরিক কর্মকাণ্ড জোরদার করেছে চীন। এমনকি অক্টোবরের শুরু থেকেই তাইওয়ানের এয়ার ডিফেন্স আইডেন্টিফিকেশন জোন (এডিআইজেড) বারবার লঙ্ঘন করেছে বৈশ্বিক এই পরাশক্তি দেশটি।

চীনা সেনাবাহিনীর এক মুখপাত্র জানিয়েছেন, তাদের নৌ ও বিমান বাহিনী তাইওয়ান প্রণালীতে সামরিক মহড়ায় অংশ নিয়েছিল। ভবিষ্যতে এই ধরনের আরও মহড়া হবে। কারণ, কোনো বহিঃশত্রু এই অঞ্চলে আচমকা হামলা করলে চীনা সেনা যাতে তার প্রতিরোধ করতে পারে, সে জন্যই এই মহড়া হচ্ছে।

আরও পড়ুন : জেরুজালেমে আরও ৩ হাজার বসতি নির্মাণের পথে ইসরায়েল

বার্তা সংস্থা রয়টার্স বলছে, তাইওয়ানের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় প্রতি দুই বছর অন্তর একটি করে রিপোর্ট প্রকাশ করে থাকে। সম্প্রতি প্রকাশিত ওই রিপোর্টে বলা হয়, চীন কার্যত এই অঞ্চলে যুদ্ধকালীন অবস্থার সূচনা করেছে। প্রতিবেদনে তাইওয়ানের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় ‘গ্রে জোন’ শব্দটি ব্যবহার করেছে। যার অর্থ- যুদ্ধ ও স্থিতিশীল পরিস্থিতির মধ্যবর্তী অবস্থা।

রিপোর্টে আরও দাবি করা হয়, ২০২০ সালের সেপ্টেম্বর মাস থেকে চলতি বছরের আগস্টের শেষ পর্যন্ত এই এক বছরে চীনা যুদ্ধবিমানগুলো ৫৫৪ বার তাইওয়ানের এয়ার ডিফেন্স আইডেন্টিফিকেশন জোনে (এডিআইজেড) ‘অনুপ্রবেশ’ করেছে।

তাদের দাবি, নির্ধারিত এই সময় থেকে ২০৩৫ সালের মধ্যে নিজেদের আধুনিকায়ন সম্পন্ন করার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে চীনের পিপলস লিবারেশন আর্মি (পিএলএ)। মূলত তাইওয়ানের বিরুদ্ধে যেকোনো ধরনের সম্ভাব্য সামরিক অভিযানে নিজেদেরকে এগিয়ে রাখতেই এই লক্ষ্য নিয়েছে তারা। একই সঙ্গে বিদেশি বাহিনী ও শক্তিকে উপেক্ষা করার শক্তি অর্জনও পিএলএর অন্যতম লক্ষ্য। এটি তাইওয়ানের জাতীয় নিরাপত্তায় গুরুতর চ্যালেঞ্জ হিসেবে দেখা দিয়েছে।

মন্ত্রণালয়ের ওই প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বর্তমানে তাইওয়ানের প্রধান প্রধান বিমানবন্দর, সমুদ্রবন্দর ও বহির্গামী ফ্লাইট রুটগুলো একসঙ্গে অবরোধ করার মতো সক্ষমতা রয়েছে চীনের পিপলস লিবারেশন আর্মির (পিএলএ)। এর মাধ্যমে বেইজিং আকাশপথে এবং সমুদ্রপথে তাইওয়ানকে অবরুদ্ধ করতে চায় এবং আমাদের সামরিক সরঞ্জাম সরবরাহ ব্যবস্থায় প্রভাব ফেলতে চায়।

আরও পড়ুন : কম্বোডিয়ার সাবেক প্রধানমন্ত্রী নরোদম রনঋদ্ধ আর নেই

উল্লেখ্য, ১৯৪৯ সালে চীনে কমিউনিস্টরা ক্ষমতা দখল করার পর তাইওয়ান দেশটির মূল ভূখণ্ড থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। যদিও শুরু থেকেই তাইওয়ানকে নিজেদের অংশ বলে দাবি করে আসছে বেইজিং। যদিও এরপর থেকে তাইওয়ান নিজস্ব সরকারের মাধ্যমে পরিচালিত হয়ে আসছে।

ওডি/কেএইচআর

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া

 

সম্পাদকীয় কার্যালয় 

১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।

যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702 

ই-মেইল: [email protected]

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড