সুদানে আট দিনের সংঘাতে নিহত ৩৫

উত্তর আফ্রিকার দেশ সুদানের পশ্চিমাঞ্চলীয় দারফুর পশুপালকদের মধ্যকার সংঘাতে শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত নিহতের সংখ্যা বেড়ে ৩৫ জনে পৌঁছেছে। গেল ১৭ নভেম্বর থেকে শুরু হওয়া এই বন্দুকযুদ্ধ এখনো চলছে বলে শুক্রবার (২৬ নভেম্বর) ফরাসি বার্তা সংস্থা এএফপিকে জানিয়েছেন দারফুরের মানবিক সহায়তা বিষয়ক কমিশনার ওমর আবদেলকরিম।

ওমর আবদেলকরিম বলেছেন, সুদান ও তার প্রতিবেশী রাষ্ট্র শাদের সীমান্তবর্তী জেবেল মুন পার্বত্য এলাকায় আরব জাতিভুক্ত পশুপালক ও সুদানের স্থানীয় জনগোষ্ঠীভুক্ত পশুপালকের মধ্যে শুরু হয় রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ। সংঘাতে কবলিত ওই এলাকার ১৬টি গ্রাম এরই মধ্যে জ্বালিয়ে দেওয়া হয়েছে। ফলে বর্তমানে পশ্চিম দারফুরের জেবেল মুন পার্বত্য এলাকার হাজার হাজার মানুষ আক্ষরিক অর্থেই খোলা আকাশের নিচে দিনরাত কাটাচ্ছেন।

পশ্চিম দারফুরের গভর্নর খামিস আবদাল্লাহ এএফপিকে বলেছেন, উট লুটপাটের একটি ঘটনাকে কেন্দ্র করে স্থানীয় পশুপালক ও আরব পশুপালকের মধ্যে বিরোধ দেখা দেয় এবং খুব অল্প সময়ের মধ্যেই পক্ষ দুটির মধ্যে সশস্ত্র যুদ্ধে রূপ নেয় সেই বিরোধ।

সংঘাতের তীব্রতা থেকে বাঁচতে কিছু গ্রামবাসী এরই মধ্যে সীমান্ত পেরিয়ে পার্শ্ববর্তী দেশ শাদে আশ্রয় নিয়েছেন। যদিও আবদাল্লাহ জানাচ্ছেন, জেবেল মুন পার্বত্য এলাকার পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে ইতোমধ্যে সেনাবাহিনী পাঠানো হয়েছে এবং বর্তমানে সেখানকার পরিস্থিতি অনেকটাই শান্ত।

আরও পড়ুন : রাশিয়ায় কয়লা খনিতে অগ্নিকাণ্ডে বহু হতাহত

বিশ্লেষকদের মতে, দীর্ঘ ১৬ বছর যাবত চলা গৃহযুদ্ধে ক্ষতবিক্ষত অবস্থায় পৌঁছেছে পশ্চিম দারফুর। সুদানের তৎকালীন সরকার ওমর আল বশিরের বিরুদ্ধে জাতিগত বৈষম্যের অভিযোগে ২০০৩ সালে বিদ্রোহ ঘোষণা করে স্থানীয় একাধিক সশস্ত্র সংগঠন। ২০১৯ সালে বশিরের পদত্যাগ ও কারাবরণের মধ্যে দিয়ে রক্তক্ষয়ী এই গৃহযুদ্ধের সমাপ্তি হয়।

জাতিসংঘের তথ্য অনুযায়ী- ১৬ বছরের এই গৃহযুদ্ধে দারফুরে মৃত্যুবরণ করেছেন তিন লাখেরও বেশি মানুষ। বাস্তুচ্যুত হয়েছেন ২৫ লাখেরও বেশি।

আরও পড়ুন : ইংলিশ চ্যানেলে নৌকাডুবিতে ২৭ শরণার্থীর মৃত্যু

উল্লেখ্য, গৃহযুদ্ধ যদিও শেষ হয়েছে, তবে দারফুরের পরিস্থিতির খুব উন্নতি হয়েছে- এমন বলার উপায় নেই। এখনো বিভিন্ন কারণে প্রায়ই সংঘর্ষ বেঁধে যায় স্থানীয় বাসিন্দা ও আরব জাতিভুক্তদের মধ্যে।

ওডি/কেএইচআর