বিশ্বে ৫১ লাখ ৮২ হাজার প্রাণ নিল করোনা

চলমান মহামারি করোনা ভাইরাসের ভয়াল থাবায় বিশ্বজুড়ে দৈনিক মৃত্যুর সংখ্যা ক্রমে বৃদ্ধি পাচ্ছে। একই সঙ্গে আগের দিনের তুলনায় উল্লেখযোগ্য পরিমাণে বাড়ল প্রাণঘাতী ভাইরাসটিতে নতুন সংক্রমিত রোগীর সংখ্যাও। গেল ২৪ ঘণ্টায় সারা বিশ্বে কোভিড শনাক্ত হয়ে মৃত্যুবরণ করেছেন প্রায় সাড়ে সাত হাজার মানুষ। নির্ধারিত এই সময়ের মধ্যে রোগটিতে নতুন করে আক্রান্ত মানুষের সংখ্যা পাঁচ লাখ ৩৯ হাজার পৌঁছেছে।

সর্বশেষ এক দিনে বিশ্বজুড়ে সবচেয়ে বেশি সংক্রমণের ঘটনা ঘটল মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে। এ দিকে দৈনিক মৃত্যুতে এখনো শীর্ষে রয়েছে রাশিয়া। আর প্রাণহানির তালিকায় এরপরই রয়েছে যথাক্রমে যুক্তরাষ্ট্র, ইউক্রেন, তুরস্ক, ব্রাজিল, জার্মানি ও পোল্যান্ডের নাম। এতে বিশ্বব্যাপী কোভিড আক্রান্তের সংখ্যা ২৫ কোটি ৮৯ লাখের ঘর ছাড়িয়েছে। অপর দিকে মৃতের সংখ্যাও এরই মধ্যে ৫১ লাখ ৮২ হাজারে দাঁড়িয়েছে।

বুধবার (২৪ নভেম্বর) বাংলাদেশ সময় সকাল ১০টা পর্যন্ত করোনা ভাইরাসে মৃত্যু, আক্রান্ত ও সুস্থতার হিসাব রাখা ওয়েবসাইট ওয়ার্ল্ডো মিটারস থেকে পাওয়া তথ্য অনুযায়ী, শেষ ২৪ ঘণ্টায় সারা বিশ্বে কোভিড সংক্রমিত হয়ে মৃত্যুবরণ করেছেন সাত হাজার ৩২৩ জন। অর্থাৎ আগের দিনের তুলনায় মৃত্যুর সংখ্যা বাড়ল প্রায় দুই হাজার। এতে বিশ্বজুড়ে মৃতের সংখ্যা ৫১ লাখ ৮২ হাজার ১৪৯ জনে পৌঁছে গেছে।

নির্ধারিত এই সময়ের মধ্যে প্রাণঘাতী ভাইরাসটিতে নতুন করে আক্রান্ত হয়েছেন পাঁচ লাখ ৩৯ হাজার ৬৫১ জন। অর্থাৎ আগের দিনের তুলনায় নতুন শনাক্ত রোগীর সংখ্যা বেড়েছে এক লাখের বেশি। এতে মহামারির শুরু থেকে এ পর্যন্ত রোগটিতে আক্রান্ত মোট রোগীর সংখ্যা বেড়ে ২৫ কোটি ৮৯ লাখ ৮৪ হাজার ২৭৯ জনে দাঁড়িয়েছে।

আরও পড়ুন : আফগান টিভি নাটকে এবার নারীরা নিষিদ্ধ

এ দিকে গেল এক দিনে বিশ্বে করোনার থাবায় সবচেয়ে বেশি সংক্রমণের ঘটনা ঘটেছে যুক্তরাষ্ট্রে। একই সময়ে দেশটিতে নতুন করে রোগটিতে আক্রান্ত হয়েছেন ৮২ হাজার ৩০১ জন। আর মারা গেছেন এক হাজার ১৫০ জন। করোনা ভাইরাসে সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত দেশটিতে এ পর্যন্ত চার কোটি ৮৮ লাখ ৩০ হাজার ৮৮১ জন সংক্রমিত হয়েছেন। এর মধ্যে মারা গেছেন সাত লাখ ৯৬ হাজার ১৩০ জন।

অন্য দিকে দৈনিক মৃত্যুর তালিকায় এখনো শীর্ষে রয়েছে রাশিয়া। নির্ধারিত ২৪ ঘণ্টায় দেশটিতে কোভিড আক্রান্ত হয়ে প্রাণ হারিয়েছেন এক হাজার ২৪৩ জন। আর নতুন করে রোগটিতে সংক্রমিত হয়েছেন ৩৩ হাজার ৯৯৬ জন। এছাড়া মহামারির শুরু থেকে দেশটিতে এ পর্যন্ত মোট শনাক্ত রোগীর সংখ্যা বেড়ে ৯৪ লাখ ৮৩৫ জনে দাঁড়িয়েছে। এর মধ্যে মৃত্যু হয়েছে দুই লাখ ৬৬ হাজার ৫৭৯ জনের।

গেল ২৪ ঘণ্টায় ব্রিটেনে নতুন করে মহামারি করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন ৪২ হাজার ৪৮৪ জন। আর মারা গেছেন ১৬৫ জন। এছাড়া একই সময়ে ইউরোপের দেশ জার্মানিতে নতুন করে কোভিড আক্রান্ত হয়েছেন ৫৪ হাজার ২৬৮ জন। এর মধ্যে মৃত্যু হয়েছে ৩৪৩ জনের। ইউক্রেনে নতুন করে প্রাণঘাতী ভাইরাসটিতে সংক্রমিত হয়েছেন ১২ হাজার ৭২৯ জন। এই সময়ের মধ্যে মারা গেছেন ৭২০ জন।

আরও পড়ুন : ফরাসি প্রধানমন্ত্রী করোনায় আক্রান্ত

করোনায় আক্রান্তের দিক থেকে তৃতীয় ও মৃত্যুর সংখ্যায় তালিকার দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে ল্যাটিন আমেরিকার দেশ ব্রাজিল। সর্বশেষ ২৪ ঘণ্টায় দেশটিতে কোভিড শনাক্ত হয়ে প্রাণ হারিয়েছেন ২২৪ জন। এর মধ্যে নতুন করে করোনায় সংক্রমিত হয়েছেন ১০ হাজার ৩১২ জন। অপর দিকে মহামারির শুরু থেকে দেশটিতে এ পর্যন্ত মোট শনাক্ত রোগীর সংখ্যা বেড়ে দুই কোটি ২০ লাখ ৩০ হাজার ১৮২ জনে দাঁড়িয়েছে। আর মৃত্যু হয়েছে ছয় লাখ ১৩ হাজার ৬৬ জনের।

এ দিকে করোনায় আক্রান্তের তালিকায় দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে দক্ষিণ এশিয়ার ঘনবসতিপূর্ণ দেশ ভারত। যদিও প্রাণঘাতী ভাইরাসে সংক্রমিত হয়ে মৃতের সংখ্যার তালিকায় দেশটির অবস্থান এখন তৃতীয়। মহামারির শুরু থেকে দেশটিতে এ পর্যন্ত মোট শনাক্ত রোগীর সংখ্যা বেড়ে তিন কোটি ৪৫ লাখ ৩৩ হাজার ৪৭৩ জনে দাঁড়িয়েছে। আর মৃত্যু হয়েছে চার লাখ ৬৬ হাজার ১৪৭ জন।

এছাড়া কোভিড সংক্রমিত হয়ে গেল এক দিনে ইসলামি প্রজাতন্ত্র ইরানে ১৩২ জন, ইউরোপের মুসলিম রাষ্ট্র তুরস্কে ২০৮ জন, ফিলিপাইনে ১৯৫ জন, পোল্যান্ডে ৩৯৮ জন, রোমানিয়ায় ২৪৩ জন, হাঙ্গেরিতে ১৭১ জন এবং ভিয়েতনামে ১৬৭ জন মৃত্যুবরণ করেছেন। অন্য দিকে নির্ধারিত ২৪ ঘণ্টায় উত্তর আমেরিকার দেশ মেক্সিকোতে প্রাণ হারিয়েছেন ৫৩ জন। মহামারির শুরু থেকে দেশটিতে এ পর্যন্ত মৃত্যু হয়েছে দুই লাখ ৯২ হাজার ৫২৪ জনের।

আরও পড়ুন : অন্ধ্রপ্রদেশে বন্যায় নিহত বেড়ে ৩৪, নিখোঁজ ১০

উল্লেখ্য, ২০১৯ সালের ডিসেম্বর মাসে এশিয়ার পরাশক্তি চীনের হুবেই প্রদেশের উহান শহরে প্রথম করোনা ভাইরাসে সংক্রমিত রোগী শনাক্ত হয়। এরপর গত বছরের ১১ মার্চ প্রাণঘাতী ভাইরাসটিকে ‘বৈশ্বিক মহামারি’ হিসেবে ঘোষণা করে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও)। এর আগে একই বছরের ২০ জানুয়ারি সংস্থাটি বিশ্বজুড়ে জরুরি পরিস্থিতি ঘোষণা করে।

ওডি/কেএইচআর