করোনায় ৫১ লাখ ৬৩ হাজার মৃত্যু দেখল বিশ্ব

চলমান মহামারি করোনা ভাইরাসের ভয়াল থাবায় বিশ্বজুড়ে দৈনিক মৃত্যুর সংখ্যা ক্রমে হ্রাস পাচ্ছে। একই সঙ্গে আগের দিনের তুলনায় উল্লেখযোগ্য পরিমাণে কমল প্রাণঘাতী ভাইরাসে নতুন সংক্রমিত রোগীর সংখ্যাও। গেল ২৪ ঘণ্টায় সারা বিশ্বে কোভিড শনাক্ত হয়ে মৃত্যুবরণ করেছেন সাড়ে পাঁচ হাজারের বেশি মানুষ। নির্ধারিত এই সময়ের মধ্যে নতুন করে রোগটিতে আক্রান্ত মানুষের সংখ্যা প্রায় পৌনে পাঁচ লাখে নেমে এসেছে।

সর্বশেষ এক দিনে বিশ্বজুড়ে সবচেয়ে বেশি সংক্রমণের ঘটনা ঘটল ইউরোপের দেশ জার্মানিতে। এ দিকে দৈনিক মৃত্যুতে এখনো শীর্ষে রয়েছে রাশিয়া। আর প্রাণহানির তালিকায় এরপরই রয়েছে যথাক্রমে যুক্তরাষ্ট্র, ইউক্রেন, পোল্যান্ড, তুরস্ক, ব্রাজিল এবং মেক্সিকোর নাম। এতেই বিশ্বব্যাপী করোনায় শনাক্তের সংখ্যা ২৫ কোটি ৭৪ লাখের ঘর ছাড়িয়েছে। অপর দিকে মৃতের সংখ্যাও এরই মধ্যে ৫১ লাখ ৬৩ হাজারে পৌঁছে গেছে।

রবিবার (২১ নভেম্বর) বাংলাদেশ সময় সকাল ১০টা পর্যন্ত করোনা ভাইরাসে মৃত্যু, আক্রান্ত ও সুস্থতার হিসাব রাখা ওয়েবসাইট ওয়ার্ল্ডো মিটারস থেকে পাওয়া তথ্য অনুযায়ী, শেষ ২৪ ঘণ্টায় সারা বিশ্বে কোভিড সংক্রমিত হয়ে প্রাণ হারিয়েছেন পাঁচ হাজার ৬৩০ জন। অর্থাৎ আগের দিনের তুলনায় মৃত্যুর সংখ্যা প্রায় দুই হাজার হ্রাস পেয়েছে। এতে বিশ্বজুড়ে মৃতের সংখ্যা ৫১ লাখ ৬৩ হাজার ৩৮ জনে পৌঁছেছে।

নির্ধারিত এই সময়ের মধ্যে প্রাণঘাতী ভাইরাসটিতে নতুন করে সংক্রমিত হয়েছেন চার লাখ ৭৮ হাজার ৭৩ জন। অর্থাৎ আগের দিনের তুলনায় রোগটিতে নতুন আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা কমেছে প্রায় এক লাখ ১৪ হাজার। এতে মহামারির শুরু থেকে এ পর্যন্ত ভাইরাসে শনাক্ত মোট রোগীর সংখ্যা বেড়ে ২৫ কোটি ৭৪ লাখ ছয় হাজার ৪৩১ জনে দাঁড়িয়েছে।

আরও পড়ুন : বিএসএফ-সীমান্তহত্যা ইস্যুতে উত্তাল পশ্চিমবঙ্গের বিধানসভা

এ দিকে গেল এক দিনে বিশ্বে করোনার থাবায় সবচেয়ে বেশি সংক্রমণ দেখেছে জার্মানি। একই সময়ে দেশটিতে নতুন করে মহামারি করোনা ভাইরাসে সংক্রমিত হয়েছেন ৪৮ হাজার ২৪৫ জন। আর মারা গেছেন ১৫৪ জন। রোগটিতে সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত দেশটিতে এ পর্যন্ত আক্রান্ত হয়েছেন ৫৩ লাখ ৪১ হাজার ৩৩২ জন। এছাড়া মৃত্যু হয়েছে ৯৯ হাজার ৫৫৩ জনের।

অপর দিকে দৈনিক মৃত্যুর তালিকায় এখনো শীর্ষে রয়েছে রাশিয়া। শেষ ২৪ ঘণ্টায় দেশটিতে কোভিড আক্রান্ত হয়ে প্রাণ হারিয়েছেন এক হাজার ২৫৪ জন। আর নতুন করে রোগটিতে সংক্রমিত হয়েছেন ৩৭ হাজার ১২০ জন। এছাড়া মহামারির শুরু থেকে দেশটিতে এ পর্যন্ত মোট আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা বেড়ে ৯২ লাখ ৯৪ হাজার ১৮৮ জনে দাঁড়িয়েছে। এই সময়ের মধ্যে মৃত্যু হয়েছে দুই লাখ ৬২ হাজার ৮৪৩ জনের।

গত ২৪ ঘণ্টায় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে করোনায় নতুন সংক্রমণ ও প্রাণহানি অনেকটাই হ্রাস পেয়েছে। একই সময়ে দেশটিতে নতুন করে কোভিড আক্রান্ত হয়েছেন ৩৬ হাজার ৬৩৩ জন। আর মারা গেছেন ৪০৪ জন। মহামারি করোনা ভাইরাসে সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত দেশটিতে এ পর্যন্ত চার কোটি ৮৫ লাখ ৫৮ হাজার ২২৯ জন সংক্রমিত হয়েছেন। এই সময়ের মধ্যে মারা গেছেন সাত লাখ ৯৩ হাজার ৫৩৯ জন।

সর্বশেষ ২৪ ঘণ্টায় ইউক্রেনে নতুন করে করোনা ভাইরাসে সংক্রমিত হয়েছেন ১৮ হাজার ২৫০ জন। আর মারা গেছেন ৬৬৪ জন। একই সময়ে ব্রিটেনে নতুন করে কোভিড সংক্রমিত হয়েছেন ৪০ হাজার ৯৪১ জন। এছাড়া মৃত্যু হয়েছে ১৫০ জনের।

আরও পড়ুন : ইসরায়েলে ব্যাপক সাইবার আক্রমণ চালিয়েছে ‘মুসার লাঠি’

করোনায় আক্রান্তের দিক থেকে তৃতীয় ও মৃত্যুর সংখ্যায় তালিকার দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে ল্যাটিন আমেরিকার দেশ ব্রাজিল। গেল এক দিনে দেশটিতে কোভিড আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুবরণ করেছেন ২১৪ জন। আর নতুন করে রোগটিতে সংক্রমিত হয়েছেন আট হাজার ৮৩৩ জন। অপর দিকে মহামারির শুরু থেকে দেশটিতে এ পর্যন্ত মোট শনাক্ত রোগীর সংখ্যা বেড়ে দুই কোটি ২০ লাখ ১২ হাজার ১৫০ জনে দাঁড়িয়েছে। এই সময়ের মধ্যে মারা গেছেন ছয় লাখ ১২ হাজার ৬২৫ জন ব্যক্তি।

এ দিকে করোনায় আক্রান্তের তালিকায় দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে দক্ষিণ এশিয়ার ঘনবসতিপূর্ণ দেশ ভারত। যদিও প্রাণঘাতী ভাইরাসটিতে আক্রান্ত হয়ে প্রাণ হারানোদের সংখ্যার তালিকায় দেশটির অবস্থান এখন তৃতীয়। মহামারির শুরু থেকে দেশটিতে এ পর্যন্ত মোট সংক্রমিত রোগীর সংখ্যা বেড়ে তিন কোটি ৪৫ লাখ চার হাজার ৬৮৯ জনে দাঁড়িয়েছে। আর মারা গেছেন চার লাখ ৬৫ হাজার ৩৪৯ জন।

এছাড়া কোভিড আক্রান্ত হয়ে শেষ এক দিনে ইসলামি প্রজাতন্ত্র ইরানে ১১৮ জন, ইউরোপের দেশ তুরস্কে ২০১ জন, পোল্যান্ডে ৩৮২ জন এবং ফিলিপাইনে ২০৫ জন মৃত্যুবরণ করেছেন। অপর দিকে নির্ধারিত ২৪ ঘণ্টায় উত্তর আমেরিকার দেশ মেক্সিকোতে প্রাণ হারিয়েছেন ২১৬ জন। মহামারির শুরু থেকে দেশটিতে এ পর্যন্ত মৃত্যু হয়েছে দুই লাখ ৯২ হাজার ১৪৫ জনের।

আরও পড়ুন : পোল্যান্ডের সীমান্ত থেকে অভিবাসীদের সরিয়ে নিচ্ছে বেলারুশ

উল্লেখ্য, ২০১৯ সালের ডিসেম্বর মাসে এশিয়ার পরাশক্তি চীনের হুবেই প্রদেশের উহান শহরে প্রথম করোনা ভাইরাসে সংক্রমিত রোগী শনাক্ত হয়। এরপর গত বছরের ১১ মার্চ প্রাণঘাতী ভাইরাসটিকে ‘বৈশ্বিক মহামারি’ হিসেবে ঘোষণা করে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও)। এর আগে একই বছরের ২০ জানুয়ারি সংস্থাটি বিশ্বজুড়ে জরুরি পরিস্থিতি ঘোষণা করে।

ওডি/কেএইচআর