• বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১  |   ৩১ °সে
  • বেটা ভার্সন
sonargao

উত্তাল কাশ্মীর

ফের গৃহবন্দি মেহবুবা মুফতি

  আন্তর্জাতিক ডেস্ক

১৯ নভেম্বর ২০২১, ১৫:১৪
ফের গৃহবন্দি মেহবুবা মুফতি
জম্মু-কাশ্মীরের সাবেক মুখ্যমন্ত্রী মেহবুবা মুফতি (ছবি : কাশ্মীর টাইমস)

দক্ষিণ এশিয়ার ঘনবসতিপূর্ণ দেশ ভারত নিয়ন্ত্রিত ভূস্বর্গ খ্যাত উপত্যকা জম্মু-কাশ্মীরের সাবেক মুখ্যমন্ত্রী এবং পিপলস ডেমোক্রেটিক পার্টির (পিডিপি) প্রধান মেহবুবা মুফতিকে ফের গৃহবন্দি করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার (১৮ নভেম্বর) তিনি নিজেই অভিযোগটি করেছেন। রাজ্যের হায়দারপোরা এলাকায় বন্দুকযুদ্ধের ঘটনার কয়েকদিনের মাথায় নিজের টুইটারে এমন অভিযোগের কথা বললেন মেহবুবা মুফতি। তিনি বলেছেন, পুলিশ আমার দলের প্রধান মুখপাত্র সুহেল বুখারী ও মুখপাত্র নাজমু সাকিবকে এরই মধ্যে গ্রেফতার করেছে।

ভারতীয় মিডিয়া এনডিটিভি জানিয়েছে, জম্মু-কাশ্মীরের সাবেক এ মুখ্যমন্ত্রী টুইটারে নিজের বাড়ির তালা লাগানো দরজার একটি ছবি পোস্ট করেছেন। সদ্য পোস্ট করা ওই ছবিতে দেখা যায়, বাড়ির বাইরে থেকে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর একটি গাড়ি তার বাড়ির ওপর নজরদারি করছে।

নিজেকে আবারও গৃহবন্দি জানিয়ে তিনি লিখেছেন, সাধারণ মানুষকে ঢাল হিসেবে ব্যবহার করা এবং পরবর্তীকালে তাদের পরিবারকে যথাযথ দাফন থেকে বঞ্চিত করা সরকারের অমানবিকতার নতুন রূপ।

সোমবার (১৫ নভেম্বর) জম্মু-কাশ্মীরের হায়দারপোরার বন্দুকযুদ্ধে হায়দারপোরায় একটি বাণিজ্যিক ভবনে ভারতীয় নিরাপত্তা বাহিনীর সঙ্গে বিচ্ছিন্নতাবাদীদের সংঘর্ষ ঘটে। ভয়াবহ সেই ঘটনায় সেখানে মোট চারজন প্রাণ হারান। নিহতদের নাম- আলতাফ বাট, আমির মাগরে, ডা. মুদাসির গুল এবং হায়দার।

আলতাফ ও মুদাসিরের পরিবার বলছে, ওদের সঙ্গে সন্ত্রাসীদের কোনোই সম্পর্ক নেই। তারা সাধারণ মানুষ। পরিবারের পক্ষ থেকে প্রশাসনের কাছে তাদের মরদেহ ফেরত চাওয়া হয়েছে। যদিও পুলিশ তাদের সন্ত্রাসীর ‘সহযোগী’ হিসেবে এরই মধ্যে আখ্যায়িত করেছে।

আরও পড়ুন : বিতর্কিত কৃষি আইন বাতিলের ঘোষণা মোদীর

কাশ্মীর পুলিশের আইজি বিজয় বলেছেন, গত রবিবার শ্রীনগরের জামলতা এলাকায় গুলিতে এক কনস্টেবল আহত হন। সেই ঘটনায় হায়দার জড়িত ছিল। মুদাসির হায়দারকে সেখান থেকে হায়দারপোরায় নিয়ে আসার কাজেও জড়িত থাকতে পারেন।

পুলিশের এই কর্মকর্তা দাবি করেন, আলতাফ বাট দুপক্ষের গোলাগুলির মধ্যে পড়ে নিহত হয়েছেন। তিনি বিচ্ছিন্নতাবাদীদের গুলি না নিরাপত্তা বাহিনীর গুলিতে নিহত হয়েছেন, তা স্পষ্ট নয়। তার ভাষায়, হায়দরপোরার ওই ভবনে বসে বিচ্ছিন্নতাবাদীরা আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করছিলেন। তাদের কাছ থেকে পিস্তল, ম্যাগাজিন ছাড়াও মোবাইল ও কম্পিউটার উদ্ধার হয়েছে।

যদিও পুলিশের এই দাবিকে মোটেও মানতে রাজি নন আলতাফ বাট ও ডা. মুদাসির গুলের পরিবারের সদস্যেরা। আলতাফের বড় মেয়ে জানিয়েছেন, প্রত্যক্ষদর্শীরা আমাদের জানিয়েছেন- আমার বাবাকে নিয়ে সংঘর্ষের সময়ে তিনবার ওই ভবনে ঢুকেছিল নিরাপত্তা বাহিনী। এরপর দুবার তাকে ফিরতে দেওয়া হয়। তৃতীয় বার তিনি নিহত হন।

নিহত আলতাফের পরিবারের দাবি, তাকে ‘মানব ঢাল’ হিসেবে ব্যবহার করেছে ভারতীয় নিরাপত্তা রক্ষাকারী বাহিনী।

এ চিকিৎসক মুদাসির গুলের মা বলছেন, আমার ছেলে একজন ডাক্তার। বিচ্ছিন্নতাবাদীদের সঙ্গে তার কোনো সংশ্লিষ্টতা ছিল না। মুদাসিরের বোনের বক্তব্য, বছরের অধিকাংশ সময়েই রাজধানী নয়াদিল্লিতে থাকতেন মুদাসির। সোমবার জম্মু হয়ে তিনি এখানে এসেছিলেন। মুদাসিরের সম্পর্কে পুলিশ যা বলছে তা মোটেও সত্য নয়।

অপর দিকে বিষয়টি নিয়ে এরই মধ্যে সরব হয়েছেন কাশ্মীরের রাজনীতিক ব্যক্তিত্বরাও। রাজ্যের সাবেক মুখ্যমন্ত্রী এবং পিডিপি নেত্রী মেহবুবা মুফতি জানিয়েছেন, নিরীহ নাগরিকদের মানব ঢাল হিসেবে ব্যবহার করে পরে তাদের বিচ্ছিন্নতাবাদীদের সহযোগীর তকমা দেওয়া ভারত সরকারের নতুন কৌশল।

আরও পড়ুন : হেজবুল্লাহর সঙ্গে সংশ্লিষ্টতার অভিযোগে কুয়েতে ১৮ জন আটক

অন্য দিকে ন্যাশনাল কনফারেন্স নেতা ওমর আবদুল্লাহ মনে করেন, ভয়াবহ এই সংঘর্ষ ও তাতে নিহত ব্যক্তিদের নিয়ে নানা প্রশ্ন উঠছে। অতীতে বহুবার সাজানো সংঘর্ষ হয়েছে। দ্রুত নিরপেক্ষ তদন্ত করে এই সংঘর্ষ নিয়ে ওঠা প্রশ্নের জবাব দেওয়া প্রয়োজন।

ওডি/কেএইচআর

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া

 

সম্পাদকীয় কার্যালয় 

১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।

যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702 

ই-মেইল: [email protected]

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড