বিশ্বে ৪৯ লাখ ৭৮ হাজার প্রাণ নিল করোনা

চলমান মহামারি করোনা ভাইরাসের ভয়াল থাবায় বিশ্বজুড়ে দৈনিক মৃত্যুর সংখ্যা উল্লেখযোগ্য পরিমাণে বৃদ্ধি পেয়েছে। একই সঙ্গে আগের দিনের তুলনায় বাড়ল প্রাণঘাতী ভাইরাসে নতুন সংক্রমিত রোগীর সংখ্যাও। গেল ২৪ ঘণ্টায় সারা বিশ্বে কোভিড শনাক্ত হয়ে মৃত্যুবরণ করেছেন প্রায় সাড়ে সাত হাজার মানুষ। নির্ধারিত এই সময়ের মধ্যে রোগটিতে নতুন করে আক্রান্ত মানুষের সংখ্যা বেড়ে চার লাখ ২৩ হাজারে দাঁড়িয়েছে।

সর্বশেষ এক দিনে বিশ্বজুড়ে সবচেয়ে বেশি সংক্রমণ ও প্রাণহানির ঘটনা ঘটল মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে। এ দিকে দৈনিক মৃত্যুতে এরপরই রয়েছে রাশিয়া-ভারত-ইউক্রেন-ব্রাজিল এবং যুক্তরাজ্যের নাম। এতে বিশ্বব্যাপী কোভিড শনাক্তের সংখ্যা ২৪ কোটি ৫২ লাখের ঘর ছাড়িয়েছে। অপর দিকে প্রাণহানির সংখ্যাও এরই মধ্যে ৪৯ লাখ ৭৮ হাজারে পৌঁছে গেছে।

বুধবার (২৭ অক্টোবর) বাংলাদেশ সময় সকাল পৌনে ১০টা পর্যন্ত করোনা ভাইরাসে মৃত্যু, আক্রান্ত ও সুস্থতার হিসাব রাখা ওয়েবসাইট ওয়ার্ল্ডো মিটারস থেকে পাওয়া তথ্য অনুযায়ী, শেষ ২৪ ঘণ্টায় সারা বিশ্বে কোভিড সংক্রমিত হয়ে প্রাণ হারিয়েছেন সাত হাজার ৪৭৫ জন। অর্থাৎ আগের দিনের তুলনায় মৃত্যুর সংখ্যা বাড়ল দুই হাজার তিনশ ৪৯ জন। এতে বিশ্বজুড়ে মৃতের সংখ্যা ৪৯ লাখ ৭৮ হাজার ১৯১ জনে পৌঁছেছে।

নির্ধারিত এই সময়ের মধ্যে প্রাণঘাতী ভাইরাসটিতে নতুন করে সংক্রমিত হয়েছেন চার লাখ ২৩ হাজার ৮৩৭ জন। অর্থাৎ আগের দিনের তুলনায় নতুন আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা বেড়েছে এক লাখ এক হাজারের বেশি। এতে মহামারির শুরু থেকে এ পর্যন্ত রোগটিতে সংক্রমিত মোট ব্যক্তিদের সংখ্যা বেড়ে ২৪ কোটি ৫২ লাখ ৫৬ হাজার ৩০৪ জনে দাঁড়িয়েছে।

আরও পড়ুন : মিয়ানমারে জান্তাবিরোধীদের হামলায় ৫ সেনা নিহত

এ দিকে গত এক দিনে বিশ্বে করোনায় সবচেয়ে বেশি সংক্রমণ ও মৃত্যু দেখল যুক্তরাষ্ট্রে। একই সময়ে দেশটিতে নতুন করে কোভিড শনাক্ত হয়েছেন ৬৯ হাজার ৫১৮ জন। আর মারা গেছেন এক হাজার ৪৪৯ জন। করোনা ভাইরাসে সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত দেশটিতে এ পর্যন্ত চার কোটি ৬৪ লাখ ৯৭ হাজার ৬০৩ জন আক্রান্ত হয়েছেন। এছাড়া মৃত্যু হয়েছে সাত লাখ ৫৯ হাজার ৯৩০ জনের।

এছাড়া শেষ ২৪ ঘণ্টায় ইউরোপের দেশ যুক্তরাজ্যে নতুন করে কোভিড সংক্রমিত হয়েছেন ৪০ হাজার ৯৫৪ জন। আর মারা গেছেন ২৬৩ জন। মহামারির শুরু থেকে দেশটিতে এ পর্যন্ত ৮৮ লাখ ৫৩ হাজার ২২৭ জন শনাক্ত হয়েছেন। এছাড়া এক লাখ ৩৯ হাজার ৮৩৪ জনের প্রাণ গেছে।

অপর দিকে দৈনিক মৃত্যুর তালিকায় যুক্তরাষ্ট্রের পরই রয়েছে রাশিয়ার অবস্থান। নির্ধারিত ২৪ ঘণ্টায় দেশটিতে মৃত্যুবরণ করেছেন এক হাজার ১০৬ জন। আর নতুন করে কোভিড সংক্রমিত হয়েছেন ৩৬ হাজার ৪৪৬ জন। এছাড়া মহামারির শুরু থেকে দেশটিতে এ পর্যন্ত মোট আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা বেড়ে ৮৩ লাখ ১৬ হাজার ১৯ জনে পৌঁছেছে। একই সময়ে মৃত্যু হয়েছে দুই লাখ ৩২ হাজার ৭৭৫ জনের।

আরও পড়ুন : মিয়ানমারকে বাদ দিয়ে সম্মেলন শুরু আসিয়ানের

করোনায় আক্রান্তের দিক থেকে তৃতীয় ও মৃত্যুর সংখ্যায় তালিকার দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে ল্যাটিন আমেরিকার দেশ ব্রাজিল। শেষ এক দিনে দেশটিতে করোনায় শনাক্ত হয়ে প্রাণ হারিয়েছেন ৪০৯ জন। এছাড়া নতুন করে কোভিড সংক্রমিত হয়েছেন ১৩ হাজার ৪২৪ জন। অপর দিকে মহামারির শুরু থেকে দেশটিতে এ পর্যন্ত মোট সংক্রমিত রোগীর সংখ্যা বেড়ে দুই কোটি ১৭ লাখ ৪৮ হাজার ৯৮৪ জনে পৌঁছেছে। আর মৃত্যু হয়েছে ছয় লাখ ছয় হাজার ২৯৩ জনের।

এ দিকে কোভিড সংক্রমিতের তালিকায় দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে দক্ষিণ এশিয়ার ঘনবসতিপূর্ণ দেশ ভারত। যদিও রোগটিতে আক্রান্ত হয়ে প্রাণহানির সংখ্যার তালিকায় দেশটির অবস্থান এখন তৃতীয়। নির্ধারিত এক দিনে দেশটিতে করোনার থাবায় আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুবরণ করেছেন ৫৮৪ জন। আর নতুন করে ভাইরাসটিতে সংক্রমিত হয়েছেন ১৩ হাজার ৫০৮ জন। দেশটিতে মোট শনাক্ত তিন কোটি ৪২ লাখ ১৪ হাজার ৮৬৫ জন এবং প্রাণ গেছে চার লাখ ৫৫ হাজার ৬৮৪ জন।

এছাড়া কোভিড সংক্রমিত হয়ে শেষ ২৪ ঘণ্টায় ইসলামি প্রজাতন্ত্র ইরানে ১৫৬ জন, ইউরোপের মুসলিম রাষ্ট্র তুরস্কে ২১৫ জন এবং ইউক্রেনে ৭৩৪ জন মৃত্যুবরণ করেছেন। অপর দিকে নির্ধারিত এই সময়ের মধ্যে উত্তর আমেরিকার দেশ মেক্সিকোতে প্রাণ হারিয়েছেন ১৫০ জন। মহামারির শুরু থেকে দেশটিতে এ পর্যন্ত মৃত্যু হয়েছে দুই লাখ ৮৬ হাজার ৪৯৬ জনের।

আরও পড়ুন : মিশরে চার বছর পর জরুরি অবস্থা প্রত্যাহার

উল্লেখ্য, ২০১৯ সালের ডিসেম্বর মাসে এশিয়ার পরাশক্তি চীনের উহান শহরে প্রথম করোনা ভাইরাসে সংক্রমিত রোগী শনাক্ত হয়। এরপর গত বছরের ১১ মার্চ প্রাণঘাতী ভাইরাসটিকে ‘বৈশ্বিক মহামারি’ হিসেবে ঘোষণা করে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও)। এর আগে একই বছরের ২০ জানুয়ারি সংস্থাটি বিশ্বজুড়ে জরুরি পরিস্থিতি ঘোষণা করে।

ওডি/কেএইচআর