আন্তর্জাতিক ডেস্ক
মধ্যপ্রাচ্যের যুদ্ধবিধ্বস্ত রাষ্ট্র সিরিয়া থেকে ইউরোপমুখী অভিবাসন রোধ থেকে শুরু করে দেশটিতে মানবিক সাহায্য পাঠানো পর্যন্ত বিভিন্ন বিষয়ে দায়িত্ব নিয়েছেন বিদায়ী জার্মান চ্যান্সেলর আঙ্গেলা ম্যার্কেল। একজন বিশ্বনেতা হিসেবে এমন দায়িত্ব গ্রহণের কারণে তার প্রশংসা করেছেন তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রেসেপ তাইয়্যেপ এরদোগান।
কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল-জাজিরার প্রতিবেদনে জানানো হয়, শনিবার (১৬ অক্টোবর) তুরস্ক সফরে যান ম্যার্কেল। জার্মান চ্যান্সেলর হিসেবেই এটিই তার শেষ তুর্কি সফর। এবারের সফরে তুর্কি প্রেসিডেন্ট এরদোগানের সঙ্গে বৈঠকে মিলিত হন তিনি। এরপর ইস্তাম্বুলের ডলমবাহসে প্রাসাদে এক যৌথ সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হন এই দুই নেতা।
আঙ্গেলা ম্যার্কেল জানিয়েছেন, জার্মানি তুরস্কের সঙ্গে কার্যকর সম্পর্ক অব্যাহত রাখবে। এ সময় বিশেষ করে অভিবাসন এবং অন্যান্য বিষয়ে পারস্পরিক সহযোগিতার ওপর জোর দেন জার্মান চ্যান্সেলর। এ সময় মানবাধিকার সমুন্নত রাখার ক্ষেত্রে বার্লিনের কূটনৈতিক প্রচেষ্টার যৌক্তিকতাও তুলে ধরেন ম্যার্কেল।
জার্মান চ্যান্সেলর বলেছিলেন, প্রত্যেকেই জানেন যে, আমাদের উভয় দেশের নিরাপত্তা ও স্বাধীনতা পরস্পরের ওপর নির্ভরশীল।
এরদোগান দাবি করেন, তুরস্কের সঙ্গে সম্পর্ক বজায় রাখার ক্ষেত্রে ম্যার্কেলের সদিচ্ছা ও অবদান আঙ্কারা সব সময় মনে রাখবে।
আরও পড়ুন : উত্তেজনা বাড়িয়ে লাদাখের আকাশে চীনা ফাইটার জেটের মহড়া
তুর্কি প্রেসিডেন্টের মতে, সিরিয়া থেকে অনিয়মিত অভিবাসন রোধ থেকে শুরু করে উত্তর সিরিয়ায় মানবিক সাহায্য পাঠানো, অনেক বিষয়েই মার্কেল উদ্যোগ নিয়েছেন। দায়িত্ব গ্রহণ থেকে তিনি নিজেকে বিরত রাখেননি।
বিশ্লেষকদের মতে, ১৬ বছর যাবত জার্মানি শাসন করছেন ম্যার্কেল। আর ১৯ বছর ধরে তুরস্কের ক্ষমতায় রয়েছেন এরদোগান। এই দুই নেতাকে অঞ্চলটির সবচেয়ে বেশি সময় যাবত ক্ষমতায় থাকা শাসক হিসেবে বিবেচনা করা হয়। দুই নেতার শাসনামলে উভয় দেশের মধ্যে নানা বিষয়ে মতবিরোধ থাকলেও দুই দেশের সম্পর্কে বড় ধরনের কোনো ফাটল ধরেনি। বরং নানা ইস্যুতে উভয় পক্ষ এক যোগে কাজ করেছে। কিন্তু ম্যার্কেল পরবর্তী জার্মানির নতুন সরকার তুরস্কের ব্যাপারে অপেক্ষাকৃত অধিক সমালোচক হবে বলে প্রতীয়মান হচ্ছে।
ম্যার্কেলের রাজনৈতিক দক্ষতার তুলনা নিয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এরদোগান বলেছেন, ১৬ বছর কম সময় নয়। আর আমি ১৯ বছরেরও বেশি সময় যাবত ক্ষমতায় আছি। আমরা অনেক বিশ্বনেতার সঙ্গে কথা বলেছি, কাজ করেছি। চ্যান্সেলর নিজ দেশ পরিচালনায় যথেষ্ট সফল।
আরও পড়ুন : তালেবানের সঙ্গে বিবাদ : কাবুলে পিআইএর বিমান চলাচল স্থগিত
এরদোগান বলেছিলেন, আমরা আমাদের সম্পর্কের উন্নতি দেখতে পাব। কিন্তু নিজ দেশে কোয়ালিশন সরকার না হলে তারা আরও ভালো জায়গায় থাকতে পারত। জোট সরকারের সঙ্গে কাজ করা সহজ নয়।
উল্লেখ্য, শিগগিরই জার্মানির ক্ষমতার কেন্দ্র থেকে সরে দাঁড়াচ্ছেন চ্যান্সেলর আঙ্গেলা ম্যার্কেল। পরবর্তী সরকার গঠিত হওয়া পর্যন্ত প্রথা অনুযায়ী তিনি দায়িত্ব পালন করে যাবেন। যদিও এখন থেকেই তার দীর্ঘ রাজনৈতিক জীবনের মূল্যায়ন শুরু হয়ে গেছে। তার আমলেই জার্মানিতে সামরিক বাহিনীতে তরুণদের বাধ্যতামূলক কার্যক্রম শেষ হয়েছে। পরমাণু ও জীবাশ্ম ভিত্তিক জ্বালানি পুরোপুরি ত্যাগ করে ভবিষ্যতে পরিবেশ বান্ধব জ্বালানির পথেও যাত্রা শুরু হয়েছে।
আরও পড়ুন : মন্ত্রীর পরামর্শ, এক পেগ মদ খেয়ে ঘুমোতে যেতে দিন পুরুষদের
আন্তর্জাতিক আঙিনায় তার দৃঢ় অবস্থান গোটা বিশ্বে সমীহ আদায় করেছে। ইউরোপের সংকট সামলানো ও স্বার্থ রক্ষায় তার উদ্যোগ বার বার নজর কেড়েছে। বিশেষ করে ২০০৮ সালে বিশ্বব্যাপী আর্থিক সংকটের সময়ে তিনি জার্মানির মানুষের সঞ্চয় নিরাপদ হিসেবে ঘোষণা করে যথেষ্ট আস্থা অর্জন করেছিলেন। ঋণ সংকট থেকে ইউরোপীয় ইউনিয়নের অভিন্ন মুদ্রা ইউরোকে রক্ষার ক্ষেত্রেও তিনি বলিষ্ঠ ভূমিকা পালন করেছিলেন।
ওডি/কেএইচআর
নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া
সম্পাদকীয় কার্যালয়
১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।
যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702
ই-মেইল: [email protected]
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।
Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড