• বুধবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১  |   ৩৭ °সে
  • বেটা ভার্সন
sonargao

গাজার ৯৭ শতাংশ পানি দূষিত, বিষক্রিয়ায় ফিলিস্তিনিরা

  আন্তর্জাতিক ডেস্ক

১৩ অক্টোবর ২০২১, ১৪:৪৫
গাজার ৯৭ শতাংশ পানি দূষিত, বিষক্রিয়ায় ফিলিস্তিনিরা
পানি সংগ্রহ করছে ফিলিস্তিনি শিশুরা (ছবি : আল-জাজিরা)

অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় এক রকম বন্দি জীবনযাপন করছেন নিরীহ ফিলিস্তিনিরা। দীর্ঘ এক যুগেরও বেশি সময় যাবত উপত্যকাটিকে অবরুদ্ধ করে রেখেছে ইহুদিবাদী দখলদার রাষ্ট্র ইসরায়েল। সেখানকার বাসিন্দাদের এখনো নেই অনেক মৌলিক অধিকার। এর মধ্যেই উঠে এসেছে চাঞ্চল্যকর নতুন তথ্য। আর তা হচ্ছে- অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকার ৯৭ শতাংশ পানিই দূষিত, যা পুরোপুরি পানের অযোগ্য।

এর ফলে ধীরে ধীরে বিষক্রিয়ায় আক্রান্ত হচ্ছেন উপত্যকাটির নারী-শিশুসহ ২০ লাখ মানুষ। মঙ্গলবার (১২ অক্টোবর) প্রতিবেদন প্রকাশের মাধ্যমে তথ্যটি জানিয়েছে কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল-জাজিরা।

গেল সোমবার অনুষ্ঠিত জাতিসংঘের মানবাধিকার পরিষদের ৪৮তম অধিবেশনে গ্লোবাল ইনস্টিটিউট ফর ওয়াটার, এনভাইরনমেন্ট অ্যান্ড হেলথ এবং ইউরো-মেডিটেরিনিয়ান হিউম্যান রাইটস মনিটর বিবৃতি পাঠিয়েছে। সেখানে তারা জানায়, ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকার পানি পান করার অযোগ্য এবং যা ধীরে ধীরে গাজার মানুষকে বিষক্রিয়ায় আক্রান্ত করছে।

যৌথ বিবৃতিতে সংস্থা দুটি জানিয়েছে, গাজা ভূখণ্ডে দীর্ঘদিন যাবত ইসরায়েলি অবরোধ জারি থাকায় উপত্যকাটির পানি ব্যবস্থাপনার মারাত্মক ক্ষতি হয়েছে। ফলে ভূখণ্ডটির ৯৭ শতাংশ পানিই এখন দূষিত পানিতে পরিণত হয়েছে।

বিবৃতিতে আরও দাবি করা হয়, এই পানি পান করতে এবং শিশু ও প্রিয়জনদেরকে ধীরে ধীরে বিষক্রিয়ায় আক্রান্ত হওয়া প্রত্যক্ষ করতে কার্যত বাধ্য হচ্ছেন গাজার নিরীহ ফিলিস্তিনিরা। এছাড়া মানবাধিকার সংগঠনগুলোও বছরের পর বছর যাবত গাজার খাবার পানীয় পরিস্থিতির অবনতির বিষয়ে হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে আসছে।

আরও পড়ুন : তাইওয়ানের কাছে সামরিক মহড়া চালাল চীন

আল-জাজিরা জানিয়েছে, লোডশেডিংয়ের কারণে দীর্ঘ সময় ধরে গাজা পৌর কর্তৃপক্ষের কলগুলো দিনের লম্বা সময় ধরে অকার্যকরই থাকে। আবার এসব কল থেকে পানি আসলেও তা এতোটাই লবণাক্ত থাকে যে, সেই পানি কার্যত কেউই পান করতে পারছেন না। আর তাই গাজার বহু বাসিন্দা বেসরকারি সরবরাহকারীদের কাছ থেকে বেশি দামে পানি ক্রয় করতে বাধ্য হচ্ছেন।

বিশ্লেষকদের মতে, গাজার প্রচণ্ড দূষিত এই পানি উপত্যকাটির বাসিন্দাদের স্বাস্থ্যের ওপরও মারাত্মকভাবে বিরূপ প্রভাব ফেলছে। বিশেষ করে ফিলিস্তিনি শিশুরা গুরুতর পানিবাহিত রোগে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকিতে রয়েছেন।

গাজার আল-শাতি শরণার্থী শিবিরের বাসিন্দা ৩৬ বছর বয়সী ফিলিস্তিনি নারী ফালিসতিন আবদেলকারিম আল-জাজিরাকে জানান, এলাকার পানি পুরোপুরি পানের অযোগ্য। পানির স্বাদে মনে হয় এটি সমুদ্র থেকে আনা হয়েছে। আমরা এই পানি পান করা, রান্না করা এমনকি গোসলের কাজেও ব্যবহার করতে পারি না।

পাঁচ সন্তানের জননী এই নারী দাবি করেছেন, শরণার্থী শিবিরে আমাদের জীবন খুবই দুর্দশাপূর্ণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। বাধ্য হয়ে আমাদেরকে বিক্রেতাদের কাছ থেকে পানি কিনে ব্যবহার করতে হয়।

গাজার উত্তরাঞ্চলীয় আল-শেখ রেদওয়ান এলাকার বাসিন্দা মোহাম্মদ সালিম আল-জাজিরার প্রতিবেদকের কাছে বলেছেন, আমি আমার বাড়ির আঙিনায় বাগান তৈরি করতে কয়েকবার চেষ্টা করেছি। কিন্তু পানি খুব বেশি দূষিত হওয়ার কারণে আমি বার বার তাতে ব্যর্থ হয়েছি।

আরও পড়ুন : তাইওয়ানের প্রেসিডেন্টের বক্তব্য প্রত্যাখ্যান চীনের

তিনি আরও বলেন, পানিতে লবণ ও ক্লোরাইডের পরিমাণ এতটাই বেশি যে আমার সব গাছই শুকিয়ে মরে গেছে।

ওডি/কেএইচআর

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া

 

সম্পাদকীয় কার্যালয় 

১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।

যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702 

ই-মেইল: [email protected]

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড