আন্তর্জাতিক ডেস্ক
জাতিসংঘে নিজের প্রথম ভাষণে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন চলমান সংকট নিরসনে চলতি দশককে সিদ্ধান্ত গ্রহণের দশক বলে অভিহিত করে মিত্রদের সহযোগিতার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। যুদ্ধবিধ্বস্ত রাষ্ট্র আফগানিস্তান থেকে মার্কিন সেনা প্রত্যাহার এবং সাবমেরিন চুক্তির পর ফ্রান্সের সঙ্গে কূটনৈতিক টানাপড়েনের মধ্যেই বিশ্বকে এমন আশ্বাস দিলেন তিনি।
ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি নিউজের প্রতিবেদন অনুযায়ী, ২০২৪ সালের মধ্যে জলবায়ু মোকাবিলায় যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে অর্থায়ন দ্বিগুণ করার ঘোষণা দিয়েছেন প্রেসিডেন্ট বাইডেন। গণতন্ত্র এবং কূটনীতি নিয়ে তার অব্যাহত সমর্থন পুনর্ব্যক্ত করে জাতিসংঘে উপস্থিত রাষ্ট্রনেতাদের উদ্দেশে তিনি বলেন, আমাদের সবাইকে এমনভাবে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে যা আগে কখনো ঘটেনি।
জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের ৭৬তম অধিবেশনে যোগ দিতে এরই মধ্যে নিউইয়র্কে অবস্থান করছেন বিশ্বনেতারা। এবারের মূল আলোচ্য বিষয় জলবায়ু সংকট এবং মহামারি করোনা ভাইরাস মোকাবিলা। এই দুটি বিষয় নিয়ে গোটা বিশ্ব এখন বিভাজিত। এছাড়া বিশ্বে আরও অনেক সংকট রয়েছে। এসব মোকাবিলায় ঐক্যবদ্ধ হওয়ার ডাক দিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের এই প্রেসিডেন্ট।
বাইডেন এই বিষয়গুলোতে সহযোগিতার ব্যাপারে জোর দিয়ে বলেন, সংকট নিরসনে আমরা আমাদের ভবিষ্যৎ নিয়ে একজোট হবো কি না-হবো সেটাই আগামী প্রজন্মের কাছে প্রতিধ্বনিত হবে। সহজভাবে বলতে গেলে, আমি আমার দৃষ্টিতে বলতে চাই, ইতিহাসের একটা বিভ্রান্তিকর অবস্থানে আমরা দাঁড়িয়ে আছি। আমাদের জরুরি পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে।
বিশ্লেষকদের মতে, বাইডেন উন্নয়নশীল দেশের জন্য জলবায়ু তহবিলে যুক্তরাষ্ট্রের বরাদ্দ ২০২৪ সালের মধ্যে ১১ দশমিক ৪ বিলিয়ন ডলারে উন্নীত করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। যার অর্থ হলো, ইউরোপের ২৬টি দেশে জোট ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) জলবায়ু তহবিলে যে পরিমাণ বরাদ্দ করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র একাই তার অর্ধেকের বেশি দেবে।
আরও পড়ুন : জাস্টিন ট্রুডোর বর্ণাঢ্য রাজনৈতিক জীবন
উন্নত বিশ্ব জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলায় দরিদ্র দেশগুলোকে সাহায্যের জন্য ২০২০ সালের মধ্যে বছরে ১০০ বিলিয়ন ডলার প্রদানের প্রতিশ্রুতি দিলেও তা এখনো অর্জিত হয়নি। জলবায়ু সংকট নিয়ে সব দেশে ঐক্যবদ্ধ পদক্ষেপ নিয়ে বারবার জোর দিয়ে এসেছেন বাইডেন। জাতিসংঘে প্রথম ভাষণেও সেই প্রতিশ্রুতিই দিলেন যুক্তরাষ্ট্রের এই প্রেসিডেন্ট।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং এশিয়ার পরাশক্তি চীনের মধ্যে চলমান উত্তেজনা নিয়ে বাইডেন রাষ্ট্রনেতাদের উদ্দেশে বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্র নতুন করে কোনো স্নায়ুযুদ্ধ বা একটি বিভাজিত বিশ্ব দেখতে চায় না। অন্যান্য বিষয় নিয়ে মতপার্থক্য থাকলেও পারস্পরিক চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় শান্তিপূর্ণ পদক্ষেপ হিসেবে ওয়াশিংটন যে কোনে পক্ষের সঙ্গে কাজ করতে প্রস্তুত।
উল্লেখ্য, গত মাসে আফগানিস্তান থেকে বিশৃঙ্খল পরিস্থিতির মধ্য মার্কিন সেনাবাহিনীর বিদায়ে ব্যাপক সমালোচনার মুখে পড়েন জো বাইডেন। পরবর্তীকালে ওয়াশিংটনের মিত্রদেশগুলো বিষয়টির তীব্র সমালোচনা করেন। যদিও প্রথম থেকে সেনা প্রত্যাহারে অটল বাইডেন জাতিসংঘে দেওয়া বক্তৃতায় বলেছেন, সামরিক শক্তি প্রয়োগ অবশ্যই আমাদের শেষ উপায় হতে হবে।
আরও পড়ুন : আফগানিস্তানে সহায়তা অব্যাহত রাখবে তুরস্ক-যুক্তরাষ্ট্র
বিদ্যমান সব সংকট মোকাবিলায় যুক্তরাষ্ট্র নেতৃত্ব দেবে বলে প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন বাইডেন। তিনি দাবি করেন, কোভিড-১৯ মোকাবিলা, মানুষের মর্যাদা, মানবাধিকার প্রতিষ্ঠা আমাদের সময়ের সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ। আমরা এগুলো মোকাবিলায় নেতৃত্ব দেব। যদিও আমরা এখন আর একা কিছুই করব না। আমাদের মিত্র যারা আমাদের মতোই মূল্যবোধে বিশ্বাসী তাদের নিয়ে নেতৃত্ব দেব।
ওডি/কেএইচআর
নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া
সম্পাদকীয় কার্যালয়
১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।
যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702
ই-মেইল: [email protected]
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।
Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড