ভারতে সুস্থতার হার বাড়ছে, কমেছে শনাক্ত-মৃত্যু

মহামারি করোনা ভাইরাসের ভয়াল থাবায় সংক্রমিত হয়ে দক্ষিণ এশিয়ার ঘনবসতিপূর্ণ দেশ ভারতে দৈনিক মৃত্যুর সংখ্যা কর্মে হ্রাস পাচ্ছে। একই সঙ্গে আগের দিনের তুলনায় কমল প্রাণঘাতী ভাইরাসে নতুন আক্রান্ত রোগীর সংখ্যাও।

এছাড়া গেল ২৪ ঘণ্টায় দেশটিতে নতুন করে কোভিড শনাক্ত হওয়া মানুষের তুলনায় সুস্থ হয়েছেন বেশি লোক। ফলে দেশটিতে সক্রিয় রোগীর সংখ্যা কমার পাশাপাশি বাড়ল সুস্থতার হারও। মহামারি শুরুর পর থেকে যা দেশটিতে সর্বোচ্চ পর্যায়ে রয়েছে।

মঙ্গলবার (২১ সেপ্টেম্বর) ভারতের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় থেকে পাঠানো তথ্য অনুযায়ী, শেষ এক দিনে দেশটিতে নতুন করে কোভিড সংক্রমিত হয়েছেন ২৬ হাজার ১১৫ জন মানুষ। অর্থাৎ আগের দিনের তুলনায় ভারতে নতুন শনাক্ত রোগীর সংখ্যা প্রায় চার হাজার কমল। সর্বশেষ এই সংখ্যাসহ মহামারির শুরু থেকে দেশটিতে এ পর্যন্ত ভাইরাসটিতে আক্রান্তের মোট সংখ্যা তিন কোটি ৩৫ লাখ চার হাজার ৫৩৪ জনে দাঁড়িয়েছে।

অপর দিকে সোমবারের তুলনায় মঙ্গলবার প্রাণহানির সংখ্যা কমেছে ভারতে। নির্ধারিত এই সময়ের মধ্যে দেশটিতে মৃত্যুবরণ করেছেন ২৫২ জন কোভিড রোগী। অর্থাৎ গত এক দিনে মারা যাওয়া ব্যক্তিদের সংখ্যা কমেছে ৪৩ জন। ফলে মহামারির শুরু থেকে দেশটিতে এ পর্যন্ত প্রাণ হারিয়েছেন চার লাখ ৪৫ হাজার ৩৮৫ জন।

এ দিকে দৈনিক সুস্থতা ও সংক্রমণের ক্ষেত্রে মঙ্গলবারও ঘনবসতিপূর্ণ দেশটিতে বজায় রয়েছে স্বাভাবিক চিত্র। অর্থাৎ সর্বশেষ ২৪ ঘণ্টায় সেখানে নতুন করে কোভিড আক্রান্ত হওয়া লোকজনের তুলনায় সুস্থ হয়েছেন বেশি মানুষ। ফলে মঙ্গলবার দেশটিতে আরও কমল সক্রিয় করোনা রোগীর সংখ্যাও। যা ১৮৪ দিনের মধ্যে সর্বনিম্ন।

আরও পড়ুন : প্রথমবারের মতো মুখোমুখি বৈঠকে মোদী-বাইডেন

গত একদিনে ভারতে সুস্থ হয়ে হাসপাতাল ছেড়ে বাড়ি ফিরে গেছেন ৩৪ হাজার ৪৬৯ জন মানুষ। অন্য দিকে দৈনিক সংক্রমিতের সংখ্যা ২৬ হাজারের বেশি। ফলে দেশটিতে মোট সক্রিয় কোভিড রোগীর সংখ্যা কমে তিন লাখ নয় হাজার ৫৭৫ জনে দাঁড়িয়েছে।

ভারতের মোট শনাক্ত রোগীর শূন্য দশমিক ৯২ শতাংশ (০.৯২%) বর্তমানে সক্রিয় রোগী। সোমবারের তুলনায় মঙ্গলবার এই হার কমল এবং ২০২০ সালের মার্চ মাসের পর থেকে এই হার সর্বনিম্নে পৌঁছাল। এ দিকে ভারতে সুস্থতার হার আরও বৃদ্ধি পেল। সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, নির্ধারিত এই সময়ের মধ্যে দেশটিতে সুস্থতার হার ৯৭ দশমিক ৭৫ শতাংশে পৌঁছেছে। ২০২০ সালের মার্চ মাসের পর থেকে এই হার সর্বোচ্চ।

ভিন্ন দিকে ভারতে দৈনিক সংক্রমণের হার কমে ফের ২ শতাংশের নিচে নেমেছে। সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, গেল ২৪ ঘণ্টায় দেশটিতে দৈনিক সংক্রমণের হার ১ দশমিক ৮৫ শতাংশে রয়েছে। শেষ ২২ দিন যাবত দেশটিতে এই হার তিন শতাংশের নিচেই অবস্থান করছে।

ইন্ডিয়ান কাউন্সিল অব মেডিকেল রিসার্চের (আইসিএমআর) তথ্য অনুযায়ী, চলতি সেপ্টেম্বর মাসের ২০ তারিখ পর্যন্ত ভারতে মোট ৫৫ কোটি ৫০ লাখ ৩৫ হাজার ৭১৭ জনের শরীর থেকে করোনা ভাইরাসের নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে। এর মধ্যে গত এক দিনে নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে ১৪ লাখ ১৩ হাজার ৯৫১ জন ব্যক্তির।

আরও পড়ুন : ৮০ আফগান শরণার্থীকে আশ্রয় দিল পর্তুগাল

উল্লেখ্য, ২০১৯ সালের ডিসেম্বরে চীনের উহানে প্রথম করোনা ভাইরাসে সংক্রমিত রোগী শনাক্ত হয়। এরপর গত বছরের ১১ মার্চ প্রাণঘাতী ভাইরাসটিকে ‘বৈশ্বিক মহামারি’ হিসেবে ঘোষণা করে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও)। এর আগে একই বছরের ২০ জানুয়ারি সংস্থাটি বিশ্বজুড়ে জরুরি পরিস্থিতি ঘোষণা করে।

ওডি/কেএইচআর