আন্তর্জাতিক ডেস্ক
মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাইক পম্পেও দাবি করেছেন, বর্তমানে সশস্ত্র সংগঠন আল-কায়েদার নতুন ঘাঁটি হচ্ছে ইরান। মঙ্গলবার (১২ জানুয়ারি) ওয়াশিংটনের ন্যাশনাল প্রেস ক্লাবে দেওয়া ভাষণে তিনি এমন দাবি করেন। যদিও নিজের এই বক্তব্যের পক্ষে এখন পর্যন্ত তিনি কোনো প্রমাণ দেখাতে পারেননি।
কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল-জাজিরা জানিয়েছে, ইসলামি প্রজাতন্ত্র ইরানের পক্ষ থেকে তাৎক্ষণিকভাবে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রীর এ অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করা হয়েছে। এমনকি মাইক পম্পেওর দাবিকে জেনেশুনে মিথ্যাচার হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী জাভেদ জারিফ।
প্রেস ক্লাবে দেওয়া ভাষণে পম্পেও বলেন, আল-কায়েদার একটি নতুন ঘাঁটি তৈরি হয়েছে। এটি হচ্ছে ইসলামিক রিপাবলিক অব ইরান। আমি বলব, আল-কায়েদার মূল ভৌগোলিক কেন্দ্র হিসেবে ইরান আসলেই নতুন আফগানিস্তান। তবে বাস্তবতা তার চেয়েও খারাপ।
আল-কায়দা তার নেতৃত্বকে তেহরানে কেন্দ্রীভূত করেছে। দলটির নেতা আইমান আল জাওয়াহিরির সহকারীরা বর্তমানে সেখানে রয়েছেন।
আরও পড়ুন : মার্কিন নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের ডাক ইরানের
মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রীর মতে, ইরানে আল-কায়েদা আফগানিস্তানের মতো পাহাড়ে লুকিয়ে নেই। সেখানে তারা তেহরানের কঠোর নিরাপত্তা বলয়ের মধ্যে কাজ করছে। বিষয়টি নিয়ে ইরানকে আরও চাপ দিতে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতি আহ্বান জানান পম্পেও।
হোয়াইট হাউজে ট্রাম্পের মেয়াদ শেষ হওয়ার মাত্র আট দিন আগে পম্পেওর এমন দাবি নিয়ে এরই মধ্যে উদ্বেগ তৈরি হয়েছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বিদায়ী প্রেসিডেন্ট ইরানের বিরুদ্ধে বেপরোয়া পদক্ষেপ নিতে পারেন।
প্রেসক্লাবে দেওয়া ভাষণে অবশ্য সামরিক পদক্ষেপের ঝুঁকির কথা জানান পম্পেও। তিনি বলেন, আমাদের যদি সেই (সামরিক পদক্ষেপ) বিকল্পটি থাকে এবং সেটিই আমরা বেছে নিই তাহলে এটি কার্যকর করার ক্ষেত্রে আরও অনেক বেশি ঝুঁকি রয়েছে।
আল-জাজিরার প্রতিবেদনে বলা হয়, ইরানের কুদস ফোর্সের কমান্ডার জেনারেল কাশেম সোলাইমানির হত্যাকাণ্ডের বর্ষপূর্তিতে তেহরানকে প্রতিশোধ গ্রহণ থেকে বিরত রাখতে প্রতিরোধ ব্যবস্থা হিসেবে গত ডিসেম্বরে তিন দফায় উপসাগরীয় অঞ্চলের আকাশে টহল দেয় মার্কিন বি-৫২ বোমারু বিমান।
আরও পড়ুন : মার্কিন বিরোধিতার মাঝেই আরও এস-৪০০ কিনছে তুরস্ক
বিশ্লেষকদের মতে, গত বছরের ৩ জানুয়ারি ইরাক সরকারের আমন্ত্রণে দেশটি সফরে যান ইরানের প্রভাবশালী কমান্ডার জেনারেল কাশেম সোলাইমানি। এ সফর চলাকালে বাগদাদ বিমানবন্দরের কাছে ড্রোন হামলা চালিয়ে তাকে হত্যা করে যুক্তরাষ্ট্র।
ভয়াবহ সেই ঘটনার পর ইরাকের মার্কিন ঘাঁটিতে দফায় দফায় ক্ষেপণাস্ত্র হামলার ঘটনা ঘটে। ইরাকের ইরান সমর্থিত বিদ্রোহীরা এসব হামলা চালায়। তবে তেহরানের দাবি, সোলাইমানি হত্যার মূল প্রতিশোধ নেওয়া এখনো বাকি রয়েছে এবং এর কঠোর প্রতিশোধ নেওয়া হবে।
সম্প্রতি ইরানের কুদস ফোর্সের বর্তমান কমান্ডার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল ইসমাইল ঘানি বলেছেন, ইরান এখনো জবাব দিতে প্রস্তুত আছে। যুক্তরাষ্ট্রকে হুঁশিয়ার করে তিনি বলেন, তোমরা যে অপরাধ করেছ তার মাধ্যমে বিশ্বের সকল স্বাধীনতাকামী মানুষকে নতুন এক দায়িত্বের দায়ে আবদ্ধ করে ফেলেছ। কাজেই আমেরিকার ভেতর থেকেই যদি কেউ এই অপরাধের প্রতিশোধ নিতে চায় তাহলেও অবাক হওয়ার কিছু থাকবে না।
তার মতে, অপকর্ম করে আমেরিকান বাহিনী কুদস বাহিনীকে প্রতিরোধের পথ থেকে পিছপা করতে পারবে না।
আরও পড়ুন : অভিশংসনের প্রস্তাবকে ‘হাস্যকর’ বলছেন ট্রাম্প
উল্লেখ্য, সোলাইমানি হত্যাকাণ্ড নিয়ে ইরানের এমন আক্রমণাত্মক বক্তব্যের মধ্যেই দেশটিতে আল-কায়েদার উপস্থিতির দাবি তুললেন মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী।
সম্পাদক: মো: তাজবীর হোসাইন
সম্পাদকীয় কার্যালয়
১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।
যোগাযোগ: 02-48118241, +8801907484702
ই-মেইল: [email protected]
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।
Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড