আন্তর্জাতিক ডেস্ক
বাইরে তখনও তাণ্ডব চালাচ্ছিল বিদায়ী প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সমর্থকরা। ভেতরে ক্যাপিটালের সব প্রবেশদ্বার বন্ধ। দরজার দিকে তাক করে বন্দুক উঁচিয়ে নিরাপত্তারক্ষীরা। যে কোনো সময় দরজা ভেঙে ঢুকে পড়তে পারে উগ্র সমর্থকরা। শেষমেশ গোপন দরজা দিয়ে নিরাপদ ঘরে যাওয়ার নির্দেশ দেওয়া হল সিনেটরদের। বুধবার (৬ জানুয়ারি) এমনই নজিরবিহীন রুদ্ধশ্বাস নাটকীয় পরিস্থিতি দেখল যুক্তরাষ্ট্রের আইনসভা।
ভেতরে চলছে সভা। সংসদ ভবনের মধ্যে বিতর্কে মগ্ন আইনসভার নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিরা। রয়েছেন সাংবাদিকরাও। ঘটনাচক্রে এই আলোচনার শেষেই ইলেক্টোরাল কলেজের ভোটের হিসাবে সরকারিভাবে জো বাইডেন নির্বাচিত হবেন। ট্রাম্পের রিপাবলিকান সিনেটররা এখনো কার্যত পরাজয় মেনে নিতে নারাজ।
আলোচনা, বিতর্ক, প্রশ্নোত্তর-এর মধ্যেই চলছে কটাক্ষ, টিকা-টিপ্পনি। তার মধ্যেই বাইরে শুরু হট্টগোল। কয়েক হাজার জনতার চিৎকার। তাদের গতিমুখ ক্যাপিটাল ভবন। ক্যাপিটালের নিরাপত্তারক্ষীরাও তাদের আটকাতে মরিয়া চেষ্টা চালাচ্ছেন। এই গণ্ডগোলের খবর তখন পৌঁছে গিয়েছে ভিতরেও।
সিনেটররাও বাইরের দিকে উঁকিঝুঁকি মারছেন বাইরে ঠিক কী হয়েছে, বোঝার জন্য। আমেরিকার ইতিহাসে এমন ঘটনা কোনো দিন ঘটেনি। ফলে তারাও ঠিক বুঝে উঠতে পারছিলেন না, কী হয়েছে। তখনও ততটা ‘সিরিয়াসলি’ নেননি সিনেটররা। তবে বিষয়টা যে ট্রাম্প সমর্থকদের ‘হামলা’ সেটা স্পষ্ট হয় যখন একের পর এক দরজা সজোরে বন্ধ করে দিচ্ছেন নিরাপত্তারক্ষীরা।
আরও পড়ুন : একে বিক্ষোভ নয়, সন্ত্রাসী কার্যক্রম বলে : বাইডেন
পর পর ভেঙে পড়ছে দরজা-জানালার কাচ। ট্রাম্পের রিপাবলিকান সিনেটরদের দিকে কটাক্ষ ছুড়ে দিচ্ছেন কেউ কেউ— ডাকুন আপনার নেতাকে! ওর জন্যই তো এসব হচ্ছে। কিন্তু বিষয়টা যে ভয়ানক, সেটা সিনেটররা টের পেলেন আরও কিছুটা পরে। ক্যাপিটালের মূল দরজা শুধু বন্ধ করাই নয়, ভিতর থেকে আসবাবপত্র রেখে সাপোর্ট দিয়ে দিয়েছেন নিরাপত্তারক্ষীরা।
হাউস স্পিকার ন্যান্সি পেলোসির ফ্লোর ডিরেক্টর কেইথ স্টার্ন বলেন, প্রত্যেকে নিজের নিজের আসনে বসে পড়ুন। শান্ত থাকুন। এর মধ্যেই বাইরে কাঁদানে গ্যাসের মতো কিছু একটা ছোড়া হয় হামলাকারীদের আটকানোর জন্য।
আরও পড়ুন : বাইডেনের জয় চূড়ান্ত করল কংগ্রেস
এবার ঘোষণা, ‘সবাই নিজ নিজ সিটের নীচে রাখা গ্যাস মাস্ক পরে নিন।’ যে কোনো সময় যে কোনো দরজা ভেঙে ভিতরে ঢুকতে পারে বিক্ষোভকারীরা। গোড়ার দিকে যেটা ছিল কৌতূহলের বিষয়, সেটাই হয়ে দাঁড়াল বিভীষিকা।
শেষ পর্যন্ত আর ঝুঁকি নেননি ক্যাপিটালের নিরাপত্তা অফিসাররা। সিনেটরদের বললেন, গোপন দরজা দিয়ে নিরাপদ কক্ষে পৌঁছে যেতে। সেই ভাবেই ফাঁকা করা হলো ক্যাপিটাল। হাউস সার্জেন্টকে কোনো এক নিরাপত্তা অফিসারকে নির্দেশ দিতে শোনা যায়, ‘ক্যাপিটালকে আমরা যেন নিরাপদ রাখতে পারি, সেটা নিশ্চিত করুন।’
আরও পড়ুন : অবশেষে পরাজয় মেনে নিলেন ট্রাম্প
সব মিলিয়ে, রুদ্ধশ্বাস এক নাটকের সাক্ষী থাকল ক্যাপিটাল এবং সিনেটররা।
সম্পাদক: মো: তাজবীর হোসাইন
সম্পাদকীয় কার্যালয়
১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।
যোগাযোগ: 02-48118241, +8801907484702
ই-মেইল: [email protected]
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।
Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড