আন্তর্জাতিক ডেস্ক
নাগোরনো-কারাবাখ ইস্যুতে আজারবাইজানের জয়ে উচ্ছ্বসিত হয়েছেন তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রেসেপ তাইয়্যেপ এরদোগান। এবার তুর্কি প্রেসিডেন্ট আর্মেনিয়ায় সরকার পরিবর্তন দেখতে চান। শুক্রবার (১১ ডিসেম্বর) জার্মান সংবাদমাধ্যম ডয়চে ভেলে খবরটি জানিয়েছে।
আজারবাইজানের বিজয় উৎসবে যোগ দিয়েছিলেন তুরস্কের প্রেসিডেন্ট এরদোগান। বিজয় উৎসবে সেনা প্যারেডসহ ছিল তুরস্কের ড্রোনও, যা আর্মেনিয়াকে যুদ্ধে হারাতে সাহায্য করেছে। সেখানেই এরদোগান আর্মেনিয়ায় সরকার পরিবর্তনের ডাক দিলেন।
তুর্কি প্রেসিডেন্ট জানিয়েছেন, নতুন সরকার কিছু শর্ত মানলে আজারবাইজানের সঙ্গে আঞ্চলিক সহযোগিতা হতে পারে। এরপর আমিও তুরস্কের সঙ্গে আর্মেনিয়ার সীমান্ত খুলে দিব।
বিশ্লেষকদের মতে, আর্মেনিয়ার সঙ্গে যুদ্ধে আজারবাইজানকে সামরিক ও কূটনৈতিক সাহায্য ও সমর্থন দিয়েছে তুরস্ক। আঙ্কারার বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছে, আজেরি সেনাবাহিনীকে শক্তিশালী করতে সিরিয়া থেকে বাহিনী সরিয়ে সেখানে পাঠিয়েছেন এরদোগান। ফলে আজারবাইজানের জয় অনেকটাই সহজ হয়েছে।
আরও পড়ুন : এরদোগানের উপস্থিতিতে ‘কারাবাখ বিজয়’ উদযাপন আজারবাইজানের
ধারণা করা হচ্ছে, বিতর্কিত নাগোরনো-কারাবাখ অঞ্চলে এবারের সংঘাতে উভয় পক্ষের পাঁচ হাজারের বেশি মানুষের মৃত্যু হয়েছে।
সম্প্রতি রাশিয়ার মধ্যস্থতায় আর্মেনিয়া ও আজারবাইজানের মধ্যে চুক্তি হয়েছে। এর ফলে আর্মেনিয়াকে নাগোরনো-কারাবাখের আর্মেনিয় জনবহুল এলাকার নিয়ন্ত্রণ ছাড়তে হয়েছে। এমনকি ১৯৯০ পরবর্তী সময়ে আর্মেনিয়ার জনগণ যে ছয়টি এলাকায় আধিপত্য স্থাপন করেছিল, সেগুলোও আজারবাইজানকে দিয়ে দিতে হয়েছে।
এমন পরিস্থিতিতে এরদোগান বলেছেন, আমরা আশা করি আর্মেনিয়ার মানুষ তাদের সেই সব নেতৃত্বের বোঝা থেকে মুক্তি পাবে, যারা অতীতে তাদের মিথ্যা বলে বুঝিয়েছে এবং দারিদ্র্যের মধ্যে ঠেলে দিয়েছে।
আরও পড়ুন : ট্রাম্পের লোভনীয় টোপ খেয়ে এবার ইসরায়েলি ফাঁদে মরক্কো
তুর্কি প্রেসিডেন্টের ভাষায়, আঞ্চলিক সহযোগিতা গড়ে তোলার জন্য আমি রাশিয়া, আজারবাইজান, ইরান, জর্জিয়ার সঙ্গে কথা বলেছি। সেখানে সম্ভব হলে আর্মেনিয়াকেও রাখা হবে।
এরদোগানের দাবি, আর্মেনিয়ার সেনারা যুদ্ধাপরাধ করেছে। তারা শহর, গ্রাম, মসজিদ ধ্বংস করেছে। তাই তাদের বিচার হওয়া উচিত। আর্মেনিয়ার সেনা অবশ্য দাবি করে, এসব ধ্বংস হয়েছে আজারবাইজানের সেনার আক্রমণে।
আরও পড়ুন : শ্রীলঙ্কায় পোড়ানো হলো করোনায় আক্রান্ত মুসলিমদের মৃতদেহ
আজারবাইজানের বিজয় উৎসবে যোগ দিয়ে তুর্কি প্রেসিডেন্ট বলেন, আমরা এখানে সমবেত হয়েছি, একটা অসাধারণ জয়ের উৎসব করতে। আজারবাইজান নিজের ভূমি ফিরে পেয়েছে। তবে তার মানে এই নয় যে সংঘাত শেষ। যে সংঘাত রাজনৈতিক ও সামরিক ক্ষেত্রে ছিল, সেটি এবার অন্য ফ্রন্টে হবে।